ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাইয়ে পানিশূন্য পুকুর ॥ অনাবাদি ৫০ হাজার হেক্টর জমি

প্রকাশিত: ০৮:৩৮, ১৫ মে ২০১৯

চাঁপাইয়ে পানিশূন্য পুকুর ॥ অনাবাদি ৫০ হাজার হেক্টর জমি

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ প্রচণ্ড খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে এবার বরেন্দ্র অঞ্চলের শতকরা ৭০% ভাগ পুকুর পানি শূন্য হয়ে পড়ার কারণে এবার বৃহত্তর রাজশাহী তিন জেলা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলায় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জামি অনাবাদি রয়েছে বোরো আবাদ থেকে। কৃষি সম্প্রসারণের অভিমত এবার বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর সর্বনিম্ন এক শ’ ফিট আবার সর্বোচ্চ প্রায় দুই শ’ ফিট নিচে নেমে যাওয়ার কারণে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অধিকাংশ ডিপে পানি আসছে না। অনুরূপ অবস্থায় অন্যান্য জেলায় সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যারা মাছ চাষের জন্য এবার পুকুর লিজ নিয়েছিল তারা মহা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। কারণ অধিকাংশ পুকুরে পানি নেই। গোদাগাড়ীর আবিলন্দা মৌজায় প্রায় দেড় শ’ পুকুর একেবারে পানি শূন্য হয়ে তলদেশ ফেটে গেছে। অথচও সিন্ডিকেট করে সমিতি খুলে তার নামে এসব পুকুর লিজ নিয়েছিল। অবিলন্দা মৌজার অধিকাংশ কৃষকের অভিযোগ তারা চেষ্টা করেছিল লিজ নিয়ে মাছ চাষ ও জমিতে সেচ কাজে পানি ব্যবহার করতে। কিন্তু কোনভাবেই টিকতে পারেনি গড়ে উঠা তথাকথিত সমিতির কাছে। ফলে যারা পুকুর ডাক করেছিল অনেক আশা করে মাছ চাষের জন্য তারা পালিয়ে গেছে পুকুর ছেড়ে। কারণ পুকুর পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি তাদের কাছে লিজ দেয়া হলে তারা এসব পুকুরে খালের পানি দিয়ে পানির ব্যবস্থা করত। এইসব বরেন্দ্র অঞ্চলের খালকে সচল করে বিভিন্ন নদীর সঙ্গে সংযোগ দিয়ে কৃষকেরা বিদ্যুত ছাড়ায় কৃত্রিম উপায়ে সেচ অব্যাহত রেখে পুকুর ভরে ফলত। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মাছ চাষ ও পুকুর পাড়ের জমি সেচের আওতায় আনা। কিন্তু বহিরাগতরা সমিতির নামে পুকুর ডাক করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কারণ পুকুর শুকিয়ে গেছে। তারা এই মুহূর্তে কোন বাড়তি খচর করে কৃত্রিম উপায়ে পুকুর ভরতে চাচ্ছে না। ফলে এবার বরেন্দ্র অঞ্চলের হাজার হাজার পুকুর পানি শূন্য হয়ে পড়ায় বিশাল অঞ্চল জুড়ে জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। তাদের কাছে পুকুর লিজ দিলে তারা জমি অনাবাদি ফেলে না রেখে এবারই ইরি বোরো আবাদ করত। চাষ হতো বিভিন্ন ডাল জাতের ফসলের। এবার এসব পুকুরে বর্ষার সময়েও পানি শূন্য রাখার কৌশল, স্থানীয় কৃষকেরা নিয়েছে। কারণ পুকুরে বর্ষার সময়ে যেসব নালা দিয়ে পানি আসত তা ইতোমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে। কৃষকদের অভিমত যেহেতু তারা পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারবে না সেহেতু আমনের মৌসুমেও তারা ফেলে রাখবে অনাবাদি অবস্থায় এসব জমি। তাই সবার দাবি উপজেলা প্রশাসন নতুন করে পূর্বের লিজ বাতিল করে পুকুরপাড় সংলগ্ন চাষীদের এইসব পুকুর লিজ দিয়ে যেমন আমন, ইরি, বোরোর উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি মাছের চাষেও নতুন দিগন্তের সৃষ্টি হবে।
×