ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সহজ জয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:১৫, ১৪ মে ২০১৯

 সহজ জয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

জিএম মোস্তফা ॥ ত্রিদেশীয় সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার তারা ৫ উইকেটে হারিয়েছে ক্যারিবীয়দের। ডাবলিনের ম্যালাহাইডে প্রথম ব্যাট করে ২৪৭ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ৪৭.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়েই ২৪৮ রান সংগ্রহ করে ফেলে মাশরাফি মর্তুজার দল। আর এই জয়েই টুর্নামেন্টের ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। তাও এক ম্যাচ (আয়ারল্যান্ড) হাতে রেখেই। আগামী ১৭ মে এই ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে শিরোপা লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবে টাইগাররা। ডাবলিনের ম্যালাহাইডে ২৪৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বেশ ভালই সূচনা করে বাংলাদেশ। তবে দলীয় ৫৪ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে টাইগারদের। ব্যক্তিগত ২১ রানে এ্যাশলে নার্সের কাছে বোল্ডআউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তামিম ইকবাল। তামিম আউট হয়ে গেলেও ক্যারিয়ারের অষ্টম অর্ধশতক পূর্ণ করেন সৌম্য সরকার। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিদূর এগুতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ৫৪ রানের মাথায় এ্যাশলে নার্সের বলেই সুনিল এ্যামব্রিসের হাতে ক্যাচ আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন সৌম্য। তার আগে সাকিব আল হাসানের (২৯) উইকেটটিও দখল করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফল বোলার এ্যাশলে নার্স। প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরে গেলে বাংলাদেশের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন মোহাম্মদ মিথুন এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে দলীয় ১৯০রানে মিথুন এবং ২৪০ রানের মাথায় আউট হয়ে যান মুশফিকুর রহিমও। ততক্ষণে বাংলাদেশের জয়ের পথটাও প্রশস্ত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ৩০ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফল বোলার এ্যাশলে নার্স। এছাড়া একটি করে উইকেট লাভ করেন রোচ এবং হোল্ডার। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ ভালভাবেই শুরু করেছিল ক্যারিবীয়রা। শাই হোপ ধীরস্থির থাকলেও সুনিল এ্যামব্রিস বেশ চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন। ফলে ৬ ওভার শেষ হওয়ার আগেই ৩৭ রান তুলে ফেলে ক্যারিবীয়রা। অভিষিক্ত পেসার রাহী একেবারেই ছিলেন নিয়ন্ত্রণহীন। কিন্তু ১৯ বলে ৪ চারে ২৩ রান করা এ্যামব্রিসকে ফেরান মাশরাফি, স্লিপে অসাধারণ ক্যাচ ধরেন সৌম্য সরকার। মেহেদী মিরাজই এসে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ব্রাভোকে (৬)। সাকিব আল হাসান বোলিংয়ে এসে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের কোনঠাসা করে ফেলেন। তিনি টানা ৬ ওভার বোলিং করে একটি মেডেনসহ মাত্র ১০ রান দেন। ওই সুযোগে মুস্তাফিজ আঘাত হানেন। এ ম্যাচে প্রথম থেকেই তিনি ছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের জন্য দুর্বোধ্য। প্রথম স্পেল মুস্তাফিজ শেষ করেন ৫ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে। তিনি শিকার করেন রোস্টন চেজ (১৯) ও জোনাথন কার্টারকে (৩)। দলীয় ৯৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পাশাপাশি ইনিংসের প্রায় অর্ধেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়াতে বেশ চাপে পড়ে ক্যারিবীয়রা। তবে হোপ দুর্দান্ত ব্যাট চালিয়ে অর্ধশতক আদায় করেন। তার সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার ১০০ রানের জুটি গড়ে তোলেন। ফিরতি স্পেলে এসে জোড়া আঘাত হানেন মাশরাফি। ১০৮ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ৮৭ রান করা হোপকে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। পরের ওভারে আবার ভয়ানক হয়ে ওঠা হোল্ডারকেও একইভাবে শিকার করেন। ৭৬ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৬২ রান করেছিলেন হোল্ডার। এরপর আর কোন ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজের তোপের সামনে দাঁড়াতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান তুলতে সক্ষম হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাকিব সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং করে ১০ ওভারে মাত্র ২৭ রান দিয়ে ১টি উইকেট নেন। আর মুস্তাফিজ ৯ ওভারে ৪৩ রানে ৪টি, মাশরাফি ১০ ওভারে ৬০ রানে ৩ উইকেট নেন। মিরাজও দারুণ বোলিং করেছেন, তিনি ১০ ওভারে ৪১ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। এই ম্যাচ জয়ের ফলে তিন ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের অবস্থান সবার উপরে। পয়েন্ট ১০। এক ম্যাচ বেশি খেলেও ৯ পয়েন্ট নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে রয়েছে ক্যারিবীয়রা। অন্যদিকে তিন ম্যাচ থেকে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ মাত্র ২ পয়েন্ট।
×