ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের অগ্রিম টিকেট ॥ ২২ মে শুরু ট্রেনের ১৭ মে বাসের

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১৪ মে ২০১৯

 ঈদের অগ্রিম টিকেট ॥ ২২ মে শুরু ট্রেনের  ১৭ মে বাসের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ঢাকা ও গাজীপুর থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে ২২ মে থেকে। আর দেশের উত্তরাঞ্চলসহ চার বিভাগের বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে ১৭ মে থেকে। রেল মন্ত্রণালয় ও পরিবহন মালিক সমিতি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলগামী নৌপথের যাত্রীদের জন্য এখনও কোন সুখবর নেই। নৌযান মালিক সমিতির বৈঠক না হওয়ায় নৌপথে এখনও অগ্রিম টিকেট বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ৫ জুন ঈদের দিন ধরে টিকেট বিক্রি কার্যক্রম চালাবেন তারা। চলবে ২৬ তারিখ পর্যন্ত। কমলাপুর ছাড়া ঢাকার আরও চারটি পয়েন্ট এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশন থেকে আগাম টিকেট বিক্রি হবে বলে জানান তিনি। কমলাপুরে নিয়মিত টিকেট বিক্রি হতো। এবার বনানী, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর রেলস্টেশন, ফুলবাড়িয়া নগর কাউন্টার এবং মিরপুরে পুলিশ কনভেনশন সেন্টার থেকেও অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন ঘরমুখো মানুষ। রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ১৫ মে সংবাদ সম্মেলন করে আগাম টিকেট বিক্রির বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। অগ্রিম টিকেটের জন্য কমলাপুর রেলস্টেশনে দীর্ঘ লাইন, রাতভর অপেক্ষা ও মানুষের ভোগান্তি এড়াতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে একেক অঞ্চলের ট্রেনের টিকেট রাজধানীর একেক স্থানে পাওয়া যাবে। ২২ থেকে ২৬ মে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি করবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ফিরতি ঈদযাত্রার টিকেট বিক্রি হবে ২৯ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত। নতুন চালু হওয়া এ্যাপ ও আগের মতো মোবাইল এসএমএস ও অনলাইনে ৬০ ভাগ টিকেট পাওয়া যাবে। রেলওয়ের মহাপরিচালক রফিকুল আলম জানান, সিলেট এবং কিশোরগঞ্জগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট দেয়া হবে রাজধানীর ফুলবাড়িয়া পুরাতন রেল ভবনের কাউন্টার থেকে। যমুনা সেতু হয়ে পশ্চিমাঞ্চলগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট দেয়া হবে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন কাউন্টার থেকে। এছাড়া ময়মনসিংহ-জামালপুরগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকেট দেয়া হবে তেজগাঁও রেলস্টেশন থেকে। নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকেট দেয়া হবে রাজধানীর বনানী রেলস্টেশন থেকে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট দেয়া হবে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সচিব মোফাজ্জল হোসেন জানান, ২২ মে দেয়া হবে ৩১ মে যাত্রার টিকেট এরপর ২৩ মে ১ জুনের টিকেট, ২৪ মে ২ জুন, ২৫ মে ৩ জুন, ২৬ মে দেয়া হবে ৪ জুনের অগ্রিম টিকেট। ঈদে সেবায় ১২টি স্পেশাল ট্রেন ॥ ঈদ-উল ফিতরে রেলওয়ের সেবায় যুক্ত হবে ১২টি স্পেশাল ট্রেন। ১৩৮টি বগি দিয়ে সাজানো হবে স্পেশাল ট্রেনগুলো। নিয়মিত ৩৩টি আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে ১২টি স্পেশাল ট্রেন যুক্ত করে মোট ৪৫টি ট্রেনে ঈদে যাত্রীদের সেবা দেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। চলমান ৩৩ আন্তঃনগর ট্রেনে মোট আসন ২৫ হাজার ১৭৯টি। এর সঙ্গে স্পেশাল ট্রেনে যোগ হবে অন্তত ৬ হাজার আসন। এছাড়া রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ১১৬টি এবং পশ্চিমাঞ্চলে ১১১টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সচল রয়েছে। ঈদে আরও দুটি যুক্ত হবে। ঈদে দীর্ঘতম রেল রুটে নতুন ট্রেন ॥ বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলপথ ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে নতুন ট্রেন আগামী ২৬ মে উদ্বোধন হবে। ট্রেনটি সেমি ননস্টপ হিসেবে চলবে। এই ট্রেন ঢাকা থেকে বিরতিহীনভাবে চলে পার্বতীপুর থেকে তিনটি স্টেশনে থেমে পঞ্চগড় পৌঁছাবে। তিনটি স্টেশন হলো দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড়। রেল ভবনের একটি সূত্র জানিয়েছে, এখনও ট্রেনটির নাম ঠিক করা হয়নি। তবে সম্ভাব্য নাম হতে পারে হিমালয় এক্সপ্রেস বা বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস। ট্রেনটিতে সংযুক্ত রয়েছে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট। এ কারণে মলমূত্র আর রেললাইনের ওপরে পড়বে না। ট্রেনটিতে থাকছে রিক্লেনার চেয়ার। আছে ওয়াইফাই সুবিধা। প্রতিটি বগিতে রয়েছে এলইডি ডিসপ্লে। যার মাধ্যমে স্টেশন ও ভ্রমণের তথ্য প্রদর্শন করা হবে। ১৭ মে থেকে বাসের আগাম টিকেট বিক্রি ॥ আগামী ১৭ মে থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের ঘরে ফেরার সুবিধার্থে অগ্রিম টিকেট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাস মালিকরা। অগ্রিম টিকেট বিক্রি চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। আর ঈদের আগে ৩০ মে থেকে অগ্রিম বাস যাত্রা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ ঘোষ। তিনি বলেন, ১৭ মে শুক্রবার সকাল থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হবে। ৬ জুন ঈদ হিসাব করে আমরা টিকেট বিক্রি শুরু করব। ওইদিন ৩০ মের টিকেট বিক্রি হবে। সেটা ৩০ তারিখ পর্যন্ত ওপেন থাকবে। যতক্ষণ টিকেট থাকবে ততক্ষণ বিক্রি চলবে। রমেশ ঘোষ জানান, ঢাকার গাবতলী, মাজার রোড, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজগেট ও কলাবাগান এলাকায় বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার থেকে এসব টিকেট বিক্রি হবে। রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশালÑ এ চারটি বিভাগের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসের টিকেট বিক্রি হয় রাজধানীর গাবতলী ও আশপাশের এলাকা থেকে। এস আলম, শ্যামলী, হানিফ, সোহাগ, গ্রিনলাইন, এস আর, নাবিল, ঈগল, এনা, দেশ ট্রাভেলস, আগমনী এক্সপ্রেসসহ প্রায় পঁচিশ বড় পরিবহন কোম্পানির বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি করা হবে বলে জানান রমেশ ঘোষ। তবে মহাখালী, সায়েদাবাদ, ফুলবাড়িয়া টার্মিনাল থেকে চলাচল করা বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হচ্ছে না। মহাখালী আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রির এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। অন্যদিকে সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসের আগাম টিকেট দেয়া হয় না। ঈদযাত্রায় গাড়ি ছাড়ার আগে বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার থেকে টিকেট দেয়ার কথা জানিয়েছেন সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম। তিনি বলেন, আমাদের এখানে যাত্রীর চাপ তেমন থাকে না। এজন্য আমরা ঈদের আগাম টিকেট দিই না। তবে ঈদের সময় যাত্রা শুরুর আগে আমরা টিকেট বিক্রি করব। এটা ২৫ তারিখের পর শুরু হবে। এ বছর রোজা শুরু হয়েছে গত ৭ মে থেকে। আর আগামী ১ জুন শনিবার রাতে পালিত হবে শব-ই কদর। ২০১৯ সালের বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, রোজা ২৯টি ধরে ৪-৬ জুন ঈদ-উল ফিতরের ছুটি নির্ধারিত আছে। রোজা ৩০টি হলে ঈদ হবে ৬ জুন, সেক্ষেত্রে ৭ জুনও ঈদের ছুটি থাকবে। ৫ জুন ঈদ হলে তিন দিনের ঈদের ছুটির সঙ্গে দুদিনের সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ৪ থেকে ৮ জুন টানা পাঁচদিন ছুটি পাওয়া যাবে। ৪ জুন ঈদের ছুটি শুরুর আগে ২ জুন থাকবে শব-ই কদরের ছুটি। এরপর ৩ জুন শুধু অফিস খোলা। প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী আদেশে ৩ জুন ছুটি ঘোষণা করলে টানা নয় দিনের ছুটি মিলবে সরকারী চাকুরেদের। তবে ছুটি শুরুর আগেই ঘরে ফেরা নিয়ে বাড়তি টেনশন আছে সবার মধ্যেই। অনেকে জানিয়েছেন, শেষ মুহূর্তের ঝামেলা এড়াতে ১৫ রোজার পরই পরিবার পরিজন বাড়িতে পাঠানো শুরু হবে।
×