ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে যোগ দেয়ার বিষয়ে বিএনপির এক সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শরিকরা

২০ দলীয় জোটের বৈঠকে ব্যাপক ক্ষোভের মুখে বিএনপি

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ১৪ মে ২০১৯

  ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে ব্যাপক ক্ষোভের মুখে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে শরিকদের ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে বিএনপিকে। বিশেষ করে সংসদে যোগ দেয়ার বিষয়ে বিএনপির একক সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। তারা বলেন, নির্বাচনের পর সম্মিলিত সিদ্ধান্ত ছিল সংসদে যোগ না দেয়ার। কিন্তু ২০ দলীয় শরিকদের না জানিয়ে বিএনপির একক সিদ্ধান্তে সংসদের যোগ দিয়ে জোটকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তারা প্রশ্ন তোলেন, বিএনপি ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার পর জোটকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। আগে জোটের বৈঠক নিয়মিত হলেও এখন জোটের কোন বৈঠক হয় না। খালেদা জিয়া গ্রেফতারের পর থেকে জোটকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। দীর্ঘদিন পর সোমবার বেলা চারটার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের এই বৈঠক হয়। এতে জোট ছেড়ে যাওয়া আন্দালিব রহমান পার্থর দল বিজেপির কোন প্রতিনিধি অংশ নেয়নি। এছাড়াও জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়াম্যান অলি আহমদ এতে যোগ না দিলেও দলের প্রতিনিধি হিসেবে মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ এতে উপস্থিত ছিলেন। এর বাইরে জোট শরিকদের সবাই বৈঠকে অংশ নেন। সর্বশেষ গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০ দলীয় জোটের বৈঠক হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো জোটের বৈঠক হলো। বৈঠকে এক পর্যায়ে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্কাইপির মাধ্যমে এই বৈঠকে অংশ নেন। এ সময় তার উপস্থিতিতে ২০ দলীয় জোটের শরিকরা বিএনপির একক সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। তবে এ সময় বিএনপির হাইকমান্ড থেকে জোটের শরিকদের বলা হয় রাজনৈতিক পরিবেশ পরিস্থিতির সাপেক্ষে অনেক সময় অনেক কিছু করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতেই সংসদের না যাওয়া পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সংসদে যোগ দিয়েছে বিএনপি। ঐক্যফ্রন্টে জাতীয়তাবাদী শক্তির চরম সঙ্কটকাল চলছে। এই পরিস্থিতিতে ছোটখাটো ভুল অতিক্রম করে সবাইওকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। নিজেদের মধ্যেও কোন ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হলে তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। বৈঠক শেষে জোটের সমন্বয়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোটের ঐক্য অটুট আছে এবং থাকবে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জোটের শরিক আন্দালিব রহমান পার্থের জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে আন্দালিব রহমানের দল বিজেপি জোট থেকে বেরিয়ে গেছে। আশা করি এই ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। তিনি জোটে ফিরে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, এনডিপির সভাপতি ক্বারী আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপ সভাপতি শাওন সাদেকী, পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন, জাতীয় দলের সভাপতি এহসানুল হুদা, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্য জোটের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শওকত আমিন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ। বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে জোট নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠক শেষে জোট নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ইফতার করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
×