ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাগরিক স্কুলের নাটক ‘একই বৃত্তে দুজনা’

প্রকাশিত: ১০:২৫, ১৪ মে ২০১৯

 নাগরিক স্কুলের নাটক  ‘একই বৃত্তে  দুজনা’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতিভা শুধু থাকলেই হয় না, সেটাকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হয়। সুযোগের অভাবে অনেক সময় প্রস্ফুটিত হয় না প্রকৃত প্রতিভা। এমন মর্মবাণীকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে নাগরিক নাট্যাঙ্গন ইনস্টিটিউট অব ড্রামার ২৪তম ব্যাচের প্রযোজনা ‘একই বৃত্তে দুজনা’। সোমবার সন্ধ্যায় নাট্যশিক্ষার্থীদের অভিনীত নাটকটি মঞ্চস্থ হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে। জেমস ট্রুয়েক রচিত ‘শি ওয়াকস ইন বিউটি’ অবলম্বনে নাটকটির রূপান্তর করেছেন ড. ইনামুল হক। নির্দেশনা দিয়েছেন লাকী ইনাম। নাগরিকের নাট্যশিক্ষা স্কুলের ২৪তম ব্যাচের সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ নাটকের প্রদর্শনী হয়। নাটকটি মঞ্চায়নের আগে নাট্যশিক্ষার্থীদের সনদপত্র প্রদানের পাশাপাশি ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান। আকাশ নামের এক কলেজছাত্রের প্রেমের কবিতা লেখাকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে নাটকের কাহিনী। ক্লাসে গিয়ে সে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার পরিবর্তে লিখে ফেলে একটি প্রেমের কবিতা। সেই কবিতাটি আবার লেখা হয় মিস বেলি নামের ওই কলেজেরই এক সুন্দরী শিক্ষিকাকে উদ্দেশ্য করে। কিন্তু ক্লাস-শিক্ষিকা মিস বেদৌরার কাছে ধরা পড়ে যায় কবিতা লেখার বিষয়টি। মিস বেদৌরা ক্ষিপ্ত হয় আকাশের প্রতি। এ বিষয়ে সে নালিশ দেয় কলেজ অধ্যক্ষ রায়হান শরিফের কাছে। বেদৌরা অভিযোগ জানায় যে, ক্লাসে পড়াশোনার পরিবর্তে মিস বেলির প্রেমে আসক্ত হয়ে কবিতা লিখেছে আকাশ। তাছাড়া মিস বেলির মতো শিক্ষিকার কারণে পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে উঠছে ছাত্ররা। এরপর বেদৌরা কলেজের কমনরুমে গিয়ে বাকি সব শিক্ষককেও তার পক্ষে নিয়ে আসেন। এমন পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ রায়হান তার কক্ষে ডেকে আনায় আকাশকে। আকাশকে তিরস্কারের পরিবর্তে কবিতা লেখার জন্য সাধুবাদ জানায় অধ্যক্ষ রায়হান। এরপর অধ্যক্ষ জানায় যে, সে নিজেও মিস বেলির প্রেমে পড়েছে এবং একইভাবে সেও কবিতা লিখেছে। এমন পরিস্থিতিতে কক্ষে প্রবেশ করে মিস বেলি। ইতোমধ্যে ঘটনার পুরোটাই জানা হয়ে গেছে তার। তখন মিস বেলিকে প্রেম নিবেদন করে আকাশ বলে যে, ম্যাডাম আপনি আমাদের দুজনের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নিলে খুব খুশি হবো। জবাবে বেলি জানায়, ওই কলেজেরই রসায়নের এক শিক্ষকের সঙ্গে আংটি বদল হয়ে গেছে তার। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের বিয়ে হবে। এরপর অধ্যক্ষকে উদ্দেশ্য করে মিস বেলি বলেন, প্রেমে পড়ার অধিকার সবারই আছে। আর এই প্রেমে পড়ার জন্য যখন ছাত্রটি একটি চমৎকার কবিতা লিখেছে তখন তার প্রতিভা বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। তাহলে এই কলেজে সুপ্ত প্রতিভা প্রকাশের সুন্দর পরিবেশটিও সৃষ্টি হবে। এ কথা বলে মিস বেলি তাকে নিবেদিত দুটি কবিতাই নিয়ে চলে যায়। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন নিশিতা, জিনিয়া, সোহাগ, রাসেল, শাহাদাৎ, রাজিব, রিফাত, রবিন, অরুণ, অনিকসহ অনেকে। নাগরিক নাট্যাঙ্গন ইনস্টিটিউট অব ড্রামার সমন্বয়ক জুয়েল জহুর জনকণ্ঠকে জানান, চার মাসের থিওরেটিক্যাল ও প্র্যাকটিক্যাল পড়াশোনা শেষে নাট্যশিক্ষার্থীরা এ নাটকটির মাধ্যমে তাদের শিক্ষার পরিপূর্ণ প্রয়োগ ঘটালো। অভিনয়ের পাশাপাশি আলোক পরিকল্পনা, সঙ্গীত পরিকল্পনা, মঞ্চসজ্জাসহ নাটকের সবকিছুতেই ছিল শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননের ছোঁয়া।
×