ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে স্বৈরাচারের স্থান নেই ॥ ড. কামাল

প্রকাশিত: ১০:২২, ১৪ মে ২০১৯

 দেশে স্বৈরাচারের স্থান নেই ॥  ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে স্বৈরাচারের কোন স্থান ছিল না এবং ভবিষ্যতেও হবে না। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক নাগরিক শোকসভায় তিনি এ কথা বলেন। বরেণ্য সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ স্মরণে এ সভায় তার শিক্ষা, রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা জীবনের সতীর্থ-সহকর্মীরা অংশ নেন। এ সময় সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন বলেন, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহকে শ্রদ্ধা জানাতে হলে, তার মতো ঝুঁকি নিয়ে, সাহস নিয়ে উচিত কথা বলতে হবে। আজকে এখানে সব দলের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, ঐক্যের পক্ষে আমাদের সবার একটা আকর্ষণ আছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের প্রশ্নে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মাহফুজ উল্লাহর সঙ্গে আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তিনি যে আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন আমি ভাবিনি। কিছুদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বিএনপির কঠিন সমালোচনা করেন। এই ছিলেন মাহফুজ উল্লাহ। সত্যকে সত্য বলার কঠিন সৎ সাহস এবং গুণ ছিল তার। নূহ উল আলম লেনিন বলেন, মাহফুজ উল্লাহ আর আমি সবসময় রাজনীতিতে দুই মেরুতে ছিলাম। তিনি ছিলেন পিকিংপন্থী আমি মস্কোপন্থী (বাম রাজনীতিক)। এরপর তিনি বিএনপির দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং আমি আওয়ামী লীগের দিকে। তারপরও আমাদের পরস্পরের সঙ্গে খুব ভাল এবং আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, পিএসসির সাবেক সভাপতি ড. সাদত হোসেন, তত্ত্বাবধায়কের সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। শোকসভায় বক্তারা সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর শিক্ষাজীবন, রাজনৈতিক জীবন এবং সাংবাদিকতা জীবনের নানা বিষয় তুলে ধরে স্মৃতিচারণ করেন। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, দেশে শিশু ধর্ষিত হচ্ছে প্রতিদিন কিন্তু কোন বিচার হচ্ছে না। সাংবাদিক মরে যাচ্ছে, তারও কোন বিচার হচ্ছে না। তিনি বলেন, পুলিশকে কিছু করা যায় না। কারণ পুলিশকে দিয়ে ভোট চুরি করা হয়েছে। পুলিশরা চাঁদাবাজি করছে। রব বলেন, দেশে দুঃসময় চলছে। এই সময় মাহফুজ উল্লাহকে সবচেয়ে দরকার ছিল। জাতির অস্তিত্বই নেই, জাতীয়তাবাদী শক্তি থাকে কী করে! দেশে কোন রাজনীতি নেই। তিনি বলেন, সত্য কথা বলে বেঁচে থাকা যায় না। যারা সত্য কথা বলে, যাদের সততা আছে, তাদের আর বাঁচা যাবে না। রব বলেন, কোন হুমকি, ভয়-ভীতি মাহফুজ উল্লাহর কাছে পৌঁছাতে পারেনি। মনের দুঃখে বোধ হয় আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেছেন তিনি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাইলে আসুন। ঐক্য করি। স্বৈরাচারের বিদায় ঐক্য ছাড়া হবে না।
×