ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জনপ্রিয় হচ্ছে বিদ্যুতের নেট মিটারিং পদ্ধতি

প্রকাশিত: ১০:১৭, ১৪ মে ২০১৯

 জনপ্রিয় হচ্ছে বিদ্যুতের নেট মিটারিং পদ্ধতি

রশিদ মামুন ॥ জনপ্রিয় হচ্ছে নেট মিটারিং পদ্ধতি। গ্রাহক তার আঙ্গিনায় সোলার প্যানেল বসিয়ে নিজের ব্যবহার অতিরিক্ত বিদ্যুত এনার্জি ব্যাংকে জমা রাখছে। আবার যখন নিজস্ব উৎপাদন থাকছে না তখন গ্রিডের বিদ্যুত ব্যবহার করছে। এভাবে প্রতিদিনের ব্যবহৃত বিদ্যুত থেকে এনার্জি ব্যাংকে জমা রাখা বিদ্যুত বাদ দিয়ে হিসেব করা হচ্ছে প্রতিমাসের বিল। সরকারের তৈরি করা নতুন নীতিমালা নেট মিটারিং এর পদ্ধতি ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে। সরকার বলছে জমার অপ্রতুলতার কারণে সৌর বিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এই পন্থায় নবায়নযোগ্য জ¦ালানি থেকে বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে, ইতোমধ্যে নেট মিটারিং পদ্ধতিতে ১০ দশমিক ২৫২ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন বিতরণ সংস্থা যে হিসেব দিয়েছে তাতে ২৪০ গ্রাহকের আঙ্গিনায় বসেছে নেট মিটারিং-এর সোলার প্যানেল। এছাড়া পরিকল্পনায় আরও দেড় মেগাওয়াটের মোট গ্রাহক রয়েছে যারা নেট মিটারিং এ আসতে চায়। এভাবে প্রতি গ্রাহক কিছু না কিছু বিদ্যুত উৎপাদন করলে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব। প্রতিবেশী দেশ ভারত শ্রীলঙ্কার মতোই বিশে^র ৫০ দেশে রয়েছে নেট মিটারিং সিস্টেম। দিনের বেলায় ব্যবহারের অতিরিক্ত বিদ্যুত গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। মাস শেষে গ্রাহকের বিদ্যুতের বিলের সঙ্গে যা সমন্বয় হয়ে যাবে। এটিকে বিদ্যুত ব্যাংকও বলা হচ্ছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় গ্রাহক সরাসরি কোন অর্থ হাতে পাচ্ছে না। সব সময় তার বিদ্যুত ব্যবহারের সঙ্গে যা সমন্বয় হচ্ছে। বলা হয় নেট মিটারিং এ সোলার প্যানেলের ধরন অনুযায়ী সাশ্রয় হয়। এতে করে কোন কোন গ্রাহকের ৪৫ ভাগ পর্যন্ত বিদ্যুত বিল কম আসছে। পাওয়ার সেলের পরিচালক মোঃ আবদুর রউফ মিয়া নেট মিটারিং-এর নীতিমালা তৈরির পর জোরেশোরে কাজ শুরু করেছেন। বিদ্যুত বিভাগের নবায়নযোগ্য জ¦ালানি ইউনিট থেকে নেট মিটারিং সিস্টেম বাস্তবায়নে সমন্বয় করা হচ্ছে। শুরুতে বড় গ্রাহককে নেট মিটারিং ব্যবস্থায় অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। বড় সরকারী স্থাপনার ছাদে এবং শিল্প কারখানার ছাদকে এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়নে বেছে নেয়া হচ্ছে। তবে শুরুতে ছোট গ্রাহককে নেট নিটারিং এর আওতায় আনা কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের নবায়নযোগ্য জ¦ালানির প্রধান উৎস হতে পারে সৌর বিদ্যুত। দেশের প্রত্যন্ত এলাকাতে সোলার হোম সিস্টেম বসিয়ে ২৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করা হচ্ছে। যা বিভিন্ন দেশ উদাহরণ হিসেবে নিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে ভূমির অপর্যাপ্ততা রয়েছে। যার কারণে বড় সৌর বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য সাড়ে তিন একর জমি প্রয়োজন হয়। এভাবে ১০০ মেগাওয়াটের জন্য দরকার হয় ৩৫০ একর। সঙ্গত কারণে নেট মিটারিং জনপ্রিয়তা পেলে দেশে সবুজ জ¦ালানিতে বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিদ্যুত বিভাগের হিসেব বলছে সরকারের টার্গেট অনুযায়ী বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ৩২টি, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ৪৫টি, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ৭০টি, ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি ( ডেসকো) ৬০টি, ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ২১টি, নর্থজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (নেসকো) ১২টি নেট মিটারিং গ্রাহক সৃষ্টি করেছে। চলতি বছর টার্গেট অনুযায়ী প্রতিটি বিতরণ কোম্পানিকে ১০০টি করে নেট মিটারিং গ্রাহক সৃষ্টি করতে হবে। এভাবে ৬টি বিতরণ কোম্পানির ৬০০ নেট মিটারিং গ্রাহক তৈরি করতে পারবে।
×