ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটার ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু ॥ বাড়বে সৈকতের পরিধি

প্রকাশিত: ০৮:৪৫, ১৪ মে ২০১৯

 কুয়াকাটার ভাঙ্গন রোধে  কাজ শুরু ॥ বাড়বে সৈকতের পরিধি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৩ মে ॥ সাগরের তীব্র ভাঙ্গনের কবল থেকে কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় জরুরী প্রতিরক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সৈকতের শূন্য পয়েন্ট থেকে দুই দিকের দেড় কিলোমিটার এলাকায় জিও টিউব স্থাপন করা হচ্ছে। যেখানে প্রায় সাত ফুট উঁচ ঢেউ বাধাগ্রস্ত হবে। সোমবার থেকে বিচ প্রটেকশনের এ কাজ শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এ কাজ শুরু করেছে। কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি ও পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড বিচ প্রটেকশনের একাজ করছে। সৈকতের যেন আর এক ইঞ্চিও নতুন করে সাগরে বিলীন হতে না পারে এ লক্ষ্যে এমন জরুরী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোঃ অলিউজ্জামান কাজটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। সোমবার দুপুরে তিনি কুয়াকাটা সৈকত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ কাজসহ কুয়াকাটার সকল উন্নয়ন কর্মকা- পরিকল্পিতভাবে করতে একটি মনিটরিং টিমও গঠন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৮ নম্বর পোল্ডারের ১৭ দশমিক ২৫০ তম কি মি থেকে ৩৭ দশমিক ২৫০ তম কি মি পর্যন্ত বেড়িবাঁধের বাইরের দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার মূলত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকা নির্ধারণ করা রয়েছে। এর গঙ্গামিত লেকের ২৪ দশমিক ২৫০ তম কি মি থেকে আন্ধারমানিক নদী মোহনার ৩৪ দশমিক ৭৫০ তম কি মি পর্যন্ত সাড়ে দশ কিলোমিটার সৈকত সর্বাধিক ব্যবহৃত। যেখানে মূলত পর্যটকরা বিচরণ করেন। এই সাড়ে দশ কিলোমিটারের মধ্যে ২৭ দশমিক ৪০০ কিলোমিটার থেকে ৩২ দশমিক ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাঁচ দশমিক এক কিলোমিটার সাগরের তীব্র ভাঙ্গন এলাকা। তীব্র ভাঙ্গনপ্রবণ এলাকার শূন্যপয়েন্টের পশ্চিমে পাচ শ’ মিটার এবং পূর্বে দুই কি মি মোট আড়াই কিমি গ্রীন সী ওয়াল ও জিও টিউবের ব্যবহার মাধ্যমে ২০১৮ সালে সৈকত এলাকা রক্ষার সিদ্ধান্ত হলেও পরে তা বাতিল হয়ে যায়। তখন ২১২ কেটি ৮২ লাখ টাকার ওই প্রকল্প ব্যয়-বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ২০১৫ সালে এই প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু হলেও কয়েক দফা সমীক্ষা শেষে শেষ পর্যায় বাতিল হয়ে যায়। বর্তমানে সৈকতে ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচ কিলোমিটার অংশের মধ্যে আড়াই কিলোমিটার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যা রক্ষায় জরুরী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সাগরের তীব্র ভাঙ্গনের কবল থেকে কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় এমন জরুরী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক জানান, কুয়াকাটা সৈকত রক্ষার এ কাজটি শুরু হলো। এ প্রকৌশলী আরও জানান, এমনভাবে জিও টেক্সটাইল ব্যাগ দেয়া হবে যে ঢেউয়ের ঝাপটা বাধাগ্রস্ত হবে এবং ডেউয়ের সঙ্গে উঠে আসা বালু আটকে সৈকতের পরিধিও বৃদ্ধি পাবে। কলাপাড়ার ইউএনও ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য মোঃ তানভীর রহমান জানান, সৈকতের ভাঙ্গনরোধে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে এসব কাজের যথাযথ তদারকি করা হচ্ছে।
×