ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টুর্নামেন্টের সেরা বল জাহানারার

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ১৩ মে ২০১৯

 টুর্নামেন্টের সেরা বল জাহানারার

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ভারতে মহিলা টি২০ চ্যালেঞ্জ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সুপারনোভাস। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফাইনালে শনিবার রাতে জয়পুরে ভেলোসিটিকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দেয়। শিরোপার স্বাদ নিতে না পারলেও ভেলোসিটির হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের পেসার জাহানারা আলম। ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে ফাইনালের সেরা বোলিং নৈপুণ্য দেখিয়েছেন তিনি। আর ইংলিশ ব্যাটার নাতালি শিভারকে যে ডেলিভারিতে সরাসরি বোল্ড করে দিয়েছেন সেই বলটিকে আসরের সেরা বল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম বাংলাদেশী নারী ক্রিকেটার হিসেবে বিদেশী কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরে খেলার সুযোগ পান এবার জাহানারা। তবে ভেলোসিটির হয়ে প্রথম ম্যাচে তাকে একাদশের বাইরেই থাকতে হয়। দ্বিতীয় ম্যাচে নেমে ইনিংসে দ্বিতীয় স্ট্রাইক বোলার হিসেবে বোলিং করেছিলেন। তবে দীর্ঘদিন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে না থাকায় সেই ম্যাচে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্যই থাকেন। সেই ম্যাচটি হেরে গেলেও শেষ পর্যন্ত ফাইনালে ওঠে ভেলোসিটি। উইকেট নিতে না পারলেও বোলিং কৌশল ও ধারায় জাহানারার ওপর আস্থা রেখেছিল ভেলোসিটি। আর তাই ফাইনালেও তিনি একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন। টি২০ প্রতিযোগিতা হলেও প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে শিভার ছাড়াও সোফি ডিভাইনের উইকেটটি দখল করেন। শিভারকে একটি দুর্দান্ত ইনসুইঙ্গারে পরাস্ত করে অফস্টাম্প উপড়ে ফেলেন। জাহানারার এমন বোলিংয়েই প্রথম ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১২১ রান করলেও জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছিল ভেলোসিটি। বিশ্বের অন্যতম ক্ল্যাসিক ব্যাটার হিসেবে সুপরিচিত শিভার ও ডিভাইনকে যেভাবে বোল্ড করেছেন তাতে মুগ্ধ হয়েছেন সবাই। আর সে জন্যই ডিভাইনকে শিকার করা ডেলিভারিকে টুর্নামেন্টের সেরা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ভাষ্যকাররা। নিজের শেষ ওভারে অবশ্য নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন জাহানারা। ওই ওভারে ১৩ রান দিয়ে শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েই থেমেছেন তিনি। জাহানারা এদিন ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বোলিং করতে আসেন চতুর্থ বোলার হিসেবে। ওই ওভারে মাত্র ১ রান দেয়ার পর অধিনায়ক তাকে ধরে রাখেন পরবর্তীতে উপযুক্ত সময়ে কাজে লাগানোর জন্য। সেই পরিকল্পনাটা কাজে লেগেছে। ১২তম ওভারে এসেই শিভারকে বোল্ড করে দেন, ৪ রান খরচা করেন সেই ওভারে। পরের ওভারে ৩ রান দিয়ে বোল্ড করেন ডিভাইনকে। পরে ১৬তম ওভারে এসে এই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি, এবার ১৩ রান দিয়েছেন। তবে এর মধ্যে খেলায় ভেলোসিটিকে নিয়ন্ত্রণ এনে দিয়েছিলেন যখন সুপারনোভাসের শেষ ৪২ বলে ম্যাচ জিততে চাই ৬১ রান, হাতে ছিল ৬ উইকেট। ঐ সময় সুপারনোভাসের মারকুটে ব্যাটার ডিভাইনকে যে কায়দায় বোল্ড করেন জাহানারা, সেই বলকে বলা হচ্ছে ‘বল অব দ্য টুর্নামেন্ট।’ শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ঐ সময়ে জাহানারার অসাধারণ ডেলিভারি সবাইকে বেশ চমকে দেয়। যে কারণে স্লো মোশনে বেশ কয়েকবার সেই আউট দেখার পর ধারাভাষ্যকাররাও সিদ্ধান্তে পৌঁছান পুরো টুর্নামেন্টের সেরা বল এটা! আর এতে দারুণ খুশি জাহানারা বলেন, ‘এ স্বীকৃতি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এ টুর্নামেন্ট এবার আমরা জিততে পারিনি। আমার হয়তো আরও ভাল পারফর্ম করা উচিত ছিল। ওদের তখন বলের চেয়ে রানের টার্গেট বেশি ছিল। আমার লক্ষ্য ছিল ওই ওভারে বেশি করে ডট বল আদায় করা। সেই ওভারটা আমার ভালই হয়েছে। কিন্তু নিজের শেষ ওভারে রান খরচা একটু বেশি হয়ে গেছে।’
×