ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযানের খবরে শাটার ফেলে লুকালেন রেস্তরাঁ মালিক

প্রকাশিত: ১১:১০, ১৩ মে ২০১৯

 অভিযানের খবরে শাটার ফেলে লুকালেন  রেস্তরাঁ মালিক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় অভিযান চালানোর খবর পেয়ে শাটার বন্ধ করে ভেতরে আত্মগোপন করেন এক রেস্তরাঁর মালিক। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন সেখানেই হানা দেন। তারপর জেল জরিমানা। রবিবার দুপুরে ইন্দিরা রোডে অভিযান পরিচালনাকালে ‘প্রিন্স রেস্তরাঁ নামের একটি রেস্তরাঁয় ঘটে এমন কান্ড। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে- সাঁটার বাইরে থেকে বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় আদালতের। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট সাঁটারের ফাঁক দিয়ে ভেতরে দেখার চেষ্টা করেন। ভেতরে তো অনেক কাস্টমার। রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষকে সাঁটার খোলার কে শোনে কার কথা। ভেতর থেকে কোন সাড়া না পেয়ে তালা ভাঙার নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। ভাঙা হলো তালা। ভেতরে মিলল অন্তত ৫০ কাস্টমার। তাদের ভেতরে রেখেই বাইরে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। ভেতর থেকে বেরিয়ে এক ক্রেতা বলেন, হঠাৎ করেই হোটেলের কর্মীরা সাঁটার নামিয়ে দিলো। কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, বাইরে মারামারি হচ্ছে। এ কারণে আমরা ভয়ে চুপ ছিলাম। রবিবার দুপুরে ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন গোয়েন্দা বিভাগ ও ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের সদস্যরা। সাঁটার ভেঙে ম্যাজিস্ট্রেট রেস্তরাঁয় ঢোকার আগেই সটকে পড়েন ম্যানেজার। পাওয়া যায় ক্যাশিয়ার সুমনকে। ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জিজ্ঞাসা করেন, সাঁটার বন্ধ ছিল কেন? উত্তরে সুমন জানায়, রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে ৫টার আগে হোটেল খুলি না। ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, তাহলে ভেতরে এত কাস্টমার এলো কী করে? এ সময় মুখে কোন কথা নেই ক্যাশিয়ার সুমনের। এরপর কাস্টমারদের বাইরে বের করে দিয়ে নিয়মিত তল্লাশি শুরু হয়। তাদের ফ্রিজে বাসি-পচা খাবারসহ কাঁচা মাছ-মাংস ও রান্না করা খাবার একই সঙ্গে সংরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া রান্নাঘরে অস্বাস্থ্যকর ও নোঙরা পরিবেশ দেখা যায়। পরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় অসহযোগিতাসহ নানা অপরাধে ক্যাশিয়ার সুমনকে আটক করা হয়। রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভেজালবিরোধী নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে ফার্মগেট এলাকায় আমাদের অভিযান চলছিল। অভিযানের খবর পেয়ে প্রিন্স রেস্তরাঁ সাঁটারে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, তারা অনেক কাস্টমারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তিনি বলেন, ফার্মগেট এলাকার কস্তরী ও নিউস্টার রেস্তরাঁয় অভিযান চালানো হয়। এ সময় পচা-বাসি খাবার সংরক্ষণ ও স্বাস্থ্যসম্মত তেল-লবণ ব্যবহার না করায় কস্তরী হোটেল কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার টাকা এবং নিউস্টারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ডিএমপির এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে অফিসার্স ক্লাবেও নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করা হয়। এ ছাড়া রান্নায় ব্যবহার করা হয় পোড়া তেল আর ক্ষতিকর রং। এ অভিযোগে রবিবার রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে অভিযান চালিয়ে এর প্রমাণ পায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
×