ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ড. কামালকে জনতা লীগের আলটিমেটাম চিঠি

প্রকাশিত: ১১:০৯, ১৩ মে ২০১৯

 ড. কামালকে জনতা লীগের আলটিমেটাম চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাংসদদের শপথ নেয়া প্রশ্নে ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সঙ্কট যেন কাটছেই না বরং দিন দিন আরো ঘনীভূত। স্পষ্ট হচ্ছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। এবার ফ্রন্টের অন্যতম শরিক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আরও কঠোর হয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের আনুষ্ঠানিক জবাব চেয়েছে কামাল হোসেনের কাছে। জনগণের মনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে যেসব প্রশ্ন জেগেছে, তার যথাযথ প্রতিকার-প্রতিবিধান না করলে ৯ জুন দলীয় ফোরামে আলোচনার পর ঐক্যফ্রন্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে কাদের সিদ্দিকীর দল। গত ৯ মে সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণার পর একই ‘আল্টিমেটাম’ উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনকে একটি চিঠি দিয়েছে দলটি। গত শনিবার ড. কামাল হোসেনকে দেয়া চিঠিতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীক জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পরিচালনায় অসঙ্গতি দূর করার আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন, ঐতিহাসিক দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে গতবছরের ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও অন্য যে কোন সঙ্কট মুহূর্তে আমরা এবং আমাদের নেতা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম যথাযথ ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছেন। বর্তমান ভয়াবহ রাজনৈতিক অবক্ষয়ের মুহূর্তে আপনার পদক্ষেপ জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ মনে করে গত ৫ নবেম্বর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আপনার ফ্রন্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ফ্রন্টের অনেক কার্যক্রমই স্পষ্ট নয়। নির্বাচন পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোয় ব্যর্থ, প্রহসনের নির্বাচনী নাটক প্রত্যাখ্যান পরবর্তীতে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর এবং তারও পরে গণফোরামের মোকাব্বির খানের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়া। তাকে গেট আউট করে দেয়া। সর্বশেষ গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে তার শরিক হওয়া মানুষের মধ্যে মারাত্মক বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। রাস্তাঘাটে এসব প্রশ্নের জবাব দেয়া যাচ্ছে না। হাবিবুর রহমান তার চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন, দেশে ধর্ষণ ও হত্যা মহামারি আকার ধারণ করেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট হিসেবে এর প্রতিকারে তেমন কোন ভূমিকা রাখা যাচ্ছে না বা হচ্ছে না। গত ৩০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার মুক্তি, নুসরাত হত্যা ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে শাহবাগ চত্বরে গণজমায়েত কেন কীভাবে বাতিল করা হয়েছে, আমরা এসবের বিন্দুবিসর্গও জানি না। সর্বোপরি বিএনপির ছয় সদস্যের মধ্যে একজন শপথ নিলে তাকে বহিষ্কার, পরবর্তীতে শপথ নেয়া চারজনকে স্বাগত জানানো এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেয়া- এসব জাতীয় প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার মতিঝিলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বর্ধিত সভা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে। তাই অনুরোধ জানাচ্ছি, জনগণের মনে আপনার নেতৃত্বের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে যেসব প্রশ্ন জেগেছে, তার যথাযথ প্রতিকার-প্রতিবিধান করা হোক। তা না হলে বেদনার সঙ্গে ৯ জুনের পরবর্তী দু’একদিনের মধ্যে প্রয়োজনে আরও ব্যাপক আকারে বৈঠক করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হবো। সদয় অবগতির জন্য এ চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাসদ সভাপতি আসম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সুব্রত চৌধুরীকে। জানতে চাইলে গণফোরামের দফতর সম্পাদক আজাদ হোসেন বলেন, গণফোরাম অফিসে এখন পর্যন্ত এই চিঠি পৌঁছেনি। তবে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে পৌঁছেছে কি-না, সেটা বলতে পারব না।
×