ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রমিক সঙ্কটে দিশেহারা কৃষক ॥ মাঠেই ঝরছে বোরো ধান

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ১৩ মে ২০১৯

 শ্রমিক সঙ্কটে দিশেহারা  কৃষক ॥ মাঠেই  ঝরছে বোরো ধান

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে মাঠে এখন পাকা বোরো ধান। বিস্তীর্ণ মাঠের এসব ধান ঘরে তোলার উপযোগী হলেও তোলা যাচ্ছে না শ্রমিক সঙ্কটের কারণে। চড়া দামেও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। ফলে অনেক কৃষকের পাকা ধান ঝরে যাচ্ছে মাঠেই। এ নিয়ে চরম হতাশায় পড়েছেন রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা। এদিকে বাজারেও ধানের দাম কম হওয়ায় খরচের টাকা ওঠা নিয়ে হতাশায় ভুগছে কৃষকরা। সব মিলিয়ে ক্ষেতের পাকা ধানই এখন কৃষকের কাছে বোঝা হয়ে উঠেছে। একদিকে ধান কাটা শ্রমিকের সঙ্কট ও অন্যদিকে মজুরি বেশি হওয়ায় বিপাকে রয়েছে রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের চাষীরা। ফলে সঠিক সময়ে ধান গোলায় তুলতে পারছে না তারা। ধান কাটা শ্রমিকদের প্রতিদিন সাড়ে ৪০০ টাকা পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে। এক বিঘা জমির ধান কাটতে অন্তত চারজন শ্রমিক লাগছে। জেলার তানোর উপজেলার কৃষক মোকলেসুর রহমান জানায়, প্রাপ্য মজুরির চেয়ে বেশি দামেও মিলছে না ধানকাটা শ্রমিক। স্থানীয়দের পাশাপাশি বাইরের এলাকা থেকে ধান কাটার জন্য লোক আসত আগে। তবে এবার বাইরের শ্রমিকরা না আসায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, চাষাবাদে প্রতি বিঘায় খরচ পড়েছে সাত থেকে আট হাজার টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। এতে উৎপাদনের চেয়ে খরচ বেশি হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। কৃষকরা বলছেন মাঠের পর মাঠ ধান কাটার শ্রমিকের চরম সঙ্কটের কারণে জমিতেই তীব্র খরায় পুড়ছে কৃষক-কৃষাণীর স্বপ্ন। ঝরে যাচ্ছে পাকা বোরো ধান। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার কৃষক মিনহাজুল ও পত্নীতলা উপজেলার জাহিদুল রহমান জানান, ধান কাটার শ্রমিক নেয়ার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেও পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ ধান কাটার কাজ করতে চাইছে না। তারা ধান কাটার চেয়ে অন্যকাজে যেমন শহরে গিয়ে রিক্সা-ভ্যান চালাতে শুরু করেছেন। কৃষকরা বলছেন, ধান রোপণের খরচ থেকে শুরু করে সার, কীটনাশক ও সর্বশেষ ধান কাটার সময় ফের শ্রমিককেই দিতে হচ্ছে প্রায় অর্ধেক ধান। এতে প্রতিমণ ধান উৎপাদনে যে খরচ হয়েছে বাজারে গিয়ে সেই খরচের টাকাও উঠছে না। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ শামসুল হক জানান, এবছর ধানের ফলন ভাল হয়েছে। প্রতি হেক্টরে সোয়া চার টন ধান হচ্ছে। তিনি বলেন, শ্রমিক সঙ্কট রয়েছে তবে কৃষকরা যেভাবেই হোক পাকা ধান ঘরে তুলছেন।
×