ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর জীবনীচিত্রের শূটিং শুরু হচ্ছে নবেম্বরে

প্রকাশিত: ১০:২৮, ১৩ মে ২০১৯

বঙ্গবন্ধুর জীবনীচিত্রের শূটিং শুরু হচ্ছে নবেম্বরে

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ ভারতের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের সকল প্রস্তুতি শেষ। চলতি বছরের নবেম্বরে শুরু হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীচিত্রের (বায়োপিক) শূটিং। এমনটাই জানিয়েছেন এ নির্মাতা। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় এ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবে ২০২০ সালে, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত হতে যাচ্ছে তার এই জীবনীচিত্র। এটি হবে তার জীবন নিয়ে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের পরিচালক শ্যাম বেনেগাল এরই মধ্যে এ চলচ্চিত্র নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ১৮০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর জীবন সংগ্রাম তুলে ধরা হবে বড় পর্দায়। তিনি আরও জানান, চলচ্চিত্রের নেপথ্যে গবেষণার কাজে আমাদের চিত্রনাট্যকার অতুল তিওয়ারি আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের নির্মাতা পিপলু খান এ কাজে তাকে সহায়তা করবেন। চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে কে অভিনয় করবেন এ প্রশ্নের জবাবে এই পরিচালক বলেন, এটা পাকাপাকি করা হয়নি। তবে বাংলাদেশের কোন অভিনেতাকেই এ চরিত্রের জন্য নেয়া হবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করবে যে, তাকে খুঁজে বের করা ভীষণ কঠিন। পরিচালকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চিত্রনাট্য লেখা, চরিত্র নির্বাচন এবং অন্যান্য রসদ জোগাড় হয়ে গেলে ৮০ দিনেই চলচ্চিত্রটির শূটিং শেষ হয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর এই জীবনীচিত্র নির্মিত হবে বাংলায়, থাকবে ইংরেজী সাব-টাইটেল। পরে অবশ্য অন্য ভাষাতেও চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হতে পারে। ভারত ও বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও কূটনৈতিক সুসম্পর্কের কারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীচিত্র নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে। এই উদ্যোগ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে বলেও জানান এই বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা। এরই মধ্যে এই চলচ্চিত্রটির বাজেট চূড়ান্ত করা হয়েছে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য বাজেট করা হয়েছে ৩৫ কোটি রুপী। যা বাংলাদেশের হিসেবে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। গত ৭ মে বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের উপস্থিতিতে ভারতের রাজধানী দিল্লীতে এক আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত হয়। দুই দেশই এই অর্থ প্রদান করবে বলে ঐকমত্যে পৌঁছান তারা। সিদ্ধান্ত হয় যৌথ প্রযোজনার এ চলচ্চিত্রে ভারত ৪০ ও বাংলাদেশ ৬০ শতাংশ নির্মাণ ব্যয় বহন করবে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। বাকি চার সদস্য হলেন তথ্য সচিব আবদুল মালেক, বিএফডিসির পরিচালক (প্রোডাকশন) নুজহাত ইয়াসমিন, মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (চলচ্চিত্র বিভাগ) প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ডক্যুফিল্ম ‘হাসিনা : এ্যা ডটারস টেল’-এর নির্মাতা রেজাউর রহমান খান পিপলু। ভারতের পক্ষে এতে অংশ নেন প্রখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল, দেশটির দূরদর্শন টিভি ও অল ইন্ডিয়া রেডিওর কর্মকর্তারা। ভারতের তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক ব্লগের মাধ্যমে এ বৈঠকের ছবি ও তথ্যগুলো প্রকাশ করা হয়। এছাড়া ভারতের একাধিক গণমাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, আলোচনা অনুযায়ী আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এই বৈঠক প্রসঙ্গে নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল বলেন, ৭ মে সারাদিন আমাদের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণে প্রচুর গবেষণা দরকার। এরপর বিভিন্ন ভাষা অনুযায়ী চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য তৈরি হবে। এর আগে ভারত-বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের এই সিদ্ধান্ত পর্যবেক্ষণ করতে গত ১ এপ্রিল ঢাকায় আসেন পরিচালক ভারতীয় নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল। তিনি বাংলাদেশে চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) একটি বৈঠকেও অংশ নেন। সাক্ষাত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও। ঘুরে দেখেন গাজীপুরের শফিপুরে বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটি।
×