ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পাচ্ছেন তাসকিন!

প্রকাশিত: ১০:১৯, ১২ মে ২০১৯

  বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পাচ্ছেন তাসকিন!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে অবশেষে ঢুকতে চলেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিভিন্ন সূত্রে এমনই খবর মিলছে। সেই খবর অনেক জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছে। যদিও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন এখনও তাসকিনকে দলে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ তাসকিন এখনও পুরোপুরি ফিট না। তাসকিন যদি দলে শেষ পর্যন্ত কোনভাবে ঢুকেই যান, তাহলে বাদ পড়বেন কে? স্বাভাবিকভাবেই একজনের নাম সামনে চলে আসে। তিনি পেসার আবু জায়েদ রাহী। যিনি বিশ্বকাপ দলে চমক হিসেবেই ঢুকে যান। নিজেও চমকে যান বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নিতে পেরে। তাহলে কী রাহীকে বাদ দেয়া হবে? যতদূর জানা যাচ্ছে, রাহীকেও বিশ্বকাপ দলে রাখা হবে। বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের দল হয়ে যাবে ১৬ সদস্যের। একজনের খরচ বিসিবিই বহন করবে। বিশ্বকাপ দলে যখন ঢুকেন রাহী তখন তাকে নিয়ে কত উচ্চবাচ্য শোনা গেছে। সবার কণ্ঠেই রাহীর প্রশংসা শোনা গেছে। কারণ রাহী সুইং করাতে পারেন। নিজে বলে সুইং করাতে পারেন। এই বিশেষ দক্ষতা ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে কাজে লাগবে বলেই রাহীকে দলে ঢোকানো হয়। প্রশংসায় ভাসিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু তাসকিন দলে ঢোকা মানেতো রাহীর মূল্য কমে যাওয়া! তাই নয় কী? বিশ্বকাপের মিশনে ইংল্যান্ডে খেলতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ দল আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলছে। সিরিজে খেলতে যাওয়ার আগে দেশের মাটিতে শেষদিনে রাহীকে নিয়ে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে বলেছিলেন, ‘একজনই খেলোয়াড়, বাংলাদেশের বোলার আছেন, যাকে আমি দেখেছি সে সুইংটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যে বলটা করার আগে বলতে পারবে ইন সুইং করাচ্ছি বা বলটা করার আগে সে বলে করতে পারবে এটা আউট সুইং করাচ্ছি। আর কেউ পারে না। অন্যদেরটা হয়ে যায় সম্ভবত।’ রাহীকে নিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু দল ঘোষণার দিন বলেছিলেন, ‘নিউজিল্যান্ড কন্ডিশনে সে টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিল, ওয়ানডে খেলার সুযোগ পায়নি। তবে সেই কন্ডিশনে আমরা যতটা দেখেছি যে ওর বোলিংয়ে যথেষ্ট সুইং আছে। আমাদের পেসারদের মধ্যে সুইং বোলারের সংখ্যা বেশ কম। যেহেতু ইংলিশ কন্ডিশনে খেলা, আয়ারল্যান্ডেও ত্রিদেশীয় সিরিজ আছে। আর মে এবং জুন মাসের দিকে ঠান্ডাও বেশি থাকে। তাপমাত্রাও অনেক কম থাকে। সেই হিসেবে পেসারদের মধ্যে সুইং বোলার কাউকে যদি অন্তর্ভুক্ত করতে পারি তাহলে সেটি আমাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট। সেই চিন্তা করে রাহীকে দলে রাখা হয়েছে।’ মাশরাফি ও নান্নুর কণ্ঠে রাহীর এত প্রশংসা, স্বাভাবিকভাবেই তার দল থেকে বাদ পড়ার কথা নয়। তাহলেতো বলির পাঠা হয়ে যাবেন রাহী। নির্বাচকদের দল চূড়ান্ত করা নিয়েও তখন প্রশ্ন উঠে যাবে। আর তাই বিসিবি হয়তো শেষ পর্যন্ত ১৯৯৯ সালের পদ্ধতিই অবলম্বন করবে। সেই সময় নান্নুকে বাদ দিয়ে দল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে অনেক আলোচনা-সমালোচনার পর বিশ্বকাপ দলে নান্নুকে ঢোকানো হয়। কিন্তু দল ঘোষণা থেকে কাউকে আর বাদ দিতে পারেনি ক্রিকেট বোর্ড। তখন জাহাঙ্গীর আলমকে বাদ দিতে হতো। তাই বোর্ড জাহাঙ্গীরকে বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে নিজ খরচে রাখে। এবার রাহীর অবস্থাও কী তাই হতে চলেছে? এ নিয়ে এখনই আলোচনা শুরু হয়েছে। যদি কোনভাবে রাহীকে আয়ারল্যান্ড সিরিজে কিংবা বিশ্বকাপে খেলানো নাই হয়, উল্টো তাসকিনকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়, রাহীকে গুরুত্বহীন বানিয়ে তোলা হয়, তখন সমালোচনা তুঙ্গে উঠবে। কারণ যাকে বিশেষ চাহিদা থেকে দলে ঢোকানোই হয়েছিল তার এমন করুণ দশা কেন হবে? সেই প্রশ্ন উঠবেই। এত প্রশংসা যাকে নিয়ে তার এমন পরিণতি ভোগ করতে কেন হবে? সেই প্রশ্নের সম্মুখীনও হতে হবে বিসিবি এবং নির্বাচক কমিটিকে। তবে দলের স্বার্থ বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত রাহীকে রেখেই তাসকিন বিশ্বকাপ দলে ঢুকে যেতে পারেন। তখন ১৬ সদস্যের দল হয়ে যাবে বাংলাদেশের।
×