ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চার মাসের রিপোর্ট প্রকাশ করল জাতীয় কমিটি

১০ কারণে সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী সড়ক দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ১০:০৩, ১২ মে ২০১৯

 ১০ কারণে সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী সড়ক দুর্ঘটনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চালকদের প্রতিযোগিতার মনোভাব ও বেপরোয়া গতিসহ দশ কারণে সাম্প্রতিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। গত চার মাসে ১ হাজার ৪৯৫ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে ১ হাজার ৫৫২ ও আহত তিন হাজার ৩৯। নিহতের তালিকায় ১৯৫ নারী ও ২৬৮ শিশু রয়েছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ সারা দেশে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। বেসরকারী সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২২ বাংলা ও ইংরেজী জাতীয় দৈনিক, দশটি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৩৮৩ দুর্ঘটনায় ৫৩ নারী ও ৭১ শিশুসহ ৪১১ জনের প্রাণহানি এবং আহত হয়েছে ৭২৫। ফেব্রুয়ারিতে ৪০১ দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হয়েছে যথাক্রমে ৪১৫ ও ৮৮৪। নিহতের তালিকায় ৫৮ নারী ও ৬২ শিশু রয়েছে। মার্চে ৩৮৪ দুর্ঘটনায় ৪৬ নারী ও ৮২ শিশুসহ ৩৮৬ নিহত ও আহত ৮২০। এপ্রিলে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২৭। এতে নিহত ৩৪০ ও আহত ৬১০। নিহতদের মধ্যে ৩৮ নারী ও ৫৩ শিশু রয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, মার্চের তুলনায় এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা কমেছে। তবে এক মাসের তথ্যে দুর্ঘটনা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা যাবে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য যে দশটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছিল সেগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। কারণগুলো হলো: চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, দৈনিক চুক্তিতে চালক, কন্ডাক্টর বা হেল্পারের কাছে গাড়ি ভাড়া দেয়া, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, সড়কে চলাচলে পথচারীদের অসতর্কতা, বিধি লঙ্ঘন করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং, দীর্ঘক্ষণ বিরামহীন গাড়ি চালানো, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, জনবহুল এলাকাসহ দূরপাল্লার সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথ অনুসরণ না করা, সড়ক-মহাসড়কে মোটরবাইকসহ তিন চাকার যান চলাচল বৃদ্ধি এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি ইঞ্জিনচালিত ক্ষুদ্রযানে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এ বিষয়ে বলেন, শুধু কঠোর আইন প্রণয়ন করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সড়ক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। তিনি বলেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ যেমন দরকার তেমনি আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হতে হবে। সে ক্ষেত্রে গণপরিবহন খাতে বিরাজমান নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে সোচ্চার করে তোলা অপরিহার্য। এছাড়া যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সড়কের ওপর অধিক নির্ভরশীলতা কমাতে নৌ ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত ও আধুনিকায়ন করতে হবে বলে আশীষ কুমার দে মন্তব্য করেন।
×