ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এক ইনজেকশনেই হার্টের অসুখ নির্মূল

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ১২ মে ২০১৯

 এক ইনজেকশনেই হার্টের অসুখ নির্মূল

বিশ্বব্যাপী হার্টের অসুখে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। মার্কিন বিজ্ঞানীর এক আবিষ্কার মৃত্যুর এই হার বহুলাংশে হ্রাস করতে পারে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের এক বিজ্ঞানী একটি ইনজেকশন আবিষ্কার করেছেন, যা দিয়ে সহজেই হার্টের অসুখ নির্মূল হবে। যেসব শিশু হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, যেসব শিশুকে জন্মের সময়ই এই ইনজেকশনের সাহায্যে জিন থেরাপি দেয়া হলে তাদের ৩০ অথবা ৪০ বছর বয়সে হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যুর সম্ভাবনা হ্রাস পাবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে বিজ্ঞানীরা মানুষের শরীরে এই ইনজেকশন প্রয়োগের কথা ভাবছেন। প্রথমে যেসব শিশু বিরল জিনগত ত্রুটি নিয়ে জন্মাবে তাদের শরীরে এই ইনজেকশন প্রয়োগ করা হবে। তারপর এই পদ্ধতিটিকে নিরাপদ মনে হলে বিশ্বব্যাপী আরও বড় পরিসরে মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হবে। এই গবেষণা দলের প্রধান হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও জিন বিজ্ঞানী শেখর কাথিরেসান বলেন, যেসব মানুষ হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি নিয়ে জন্মায় তাদের জন্য এই চিকিৎসা খুবই উপযোগী হবে। তিনি বলেন, যেসব শিশু বিরল জেনেটিক ত্রুটি নিয়ে জন্মায় ৩০ অথবা ৪০ বছর বয়সের মধ্যে তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে। তাদের জন্য এই পদ্ধতি বিশেষভাবে কার্যকর হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হার্টের অসুখই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ। এই অসুখে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ মারা যায়। আর এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ মানুষ মারা যায় হার্ট এ্যাটাক ও স্ট্রোকে। যেসব মানুষ হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের সাধারণত ব্লাড থিনার, কোলেস্টেরল ও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা ধরনের ওষুধ দেয়া হয়। এসব ওষুধ রোগীকে আজীবন ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এই জিন থেরাপি মানুষকে চিরতরে হার্টের অসুখ থেকে মুক্তি দিতে পারে। মার্কিন বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মানুষকে চিরতরে হার্টের রোগ থেকে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় নাটকীয় হারে কমিয়ে আনতে পারে। অপর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি বছর ইংল্যান্ডে যেসব লোক মারা যায়, তার এক চতুর্থাংশ মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ। বছরে দেশটির স্বাস্থ্যখাতের সাতশ পাউন্ড ব্যয় হয় হৃদরোগের চিকিৎসায়। এ বিষয়ে কাথিরেসান আরও বলেন, তবে আশা করছি আমরা জীবনে মাত্র একবার চিকিৎসা দিয়ে হৃদরোগ পুরোপুরি সারিয়ে তুলতে সক্ষম হবো। এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে আরও যুগোপযোগী করতে কাথিরেসান সম্প্রতি হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল ছেড়ে গুগলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এ্যালফাবেট থেকে ৪ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড অর্থ সংগ্রহ করেন। এই অর্থ দিয়ে তিনি গবেষণা অব্যাহত রাখতে চান। শেখর কাথিরেসান তার এই চিকিৎসা পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘ভার্ব থেরাপিটিক্স’। দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে।
×