জাহিদুল আলম জয় ॥ এরচেয়ে স্বর্ণসময় বোধহয় আর আসেনি ইংলিশ ফুটবলে। অতীতের বদনাম ঘুচিয়ে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো এখন নিজেদের ইতিহাসে সাফল্যময় সময় অতিবাহিত করছে। ইংল্যান্ড জাতীয় দলও তাক লাগানো সাফল্য পাচ্ছে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ফুটবলের জনকরা চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও চৌকস পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে সেমিফাইনালে খেলেছিল।
এরপর ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়েও চোখ ধাঁধানো সাফল্য পাচ্ছে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো। ইউরোপিয়ান ফুটবলে সবচেয়ে মর্যাদার আসর চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। এবার ২০১৮-১৯ মৌসুমে আসরের ফাইনালে উঠেছে লিভারপুল ও টটেনহ্যাম হটস্পার। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে অল-ইংলিশ ফাইনাল নিশ্চিতের একদিন পরই ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা আসর ইউরোপা লীগেও দুই ইংলিশ ক্লাব ফাইনালের টিকেট পেয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ জিতে ফাইনালে উঠেছে চেলসি ও আর্সেনাল। এর মধ্য দিয়ে ইংলিশ ক্লাবগুলোর জয় জয়কারই শুধু হয়নি, গৌরবময় অনেক রেকর্ডের সঙ্গী হয়েছে তারা।
মেস্টালায় ম্যাচের শুরুতে গোল করে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা জাগিয়েছিল ভালেন্সিয়া। তবে পিয়েরে-এমেরিক আউবামেয়াংয়ের হ্যাটট্রিকে ফিরতি লেগেও জিতে ইউরোপা লীগের ফাইনালে উঠেছে আর্সেনাল। স্প্যানিশ ক্লাবটির মাঠে শেষ চারের ফিরতিপর্বে ৪-২ গোলে জিতে দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৩ ব্যবধানে এগিয়ে ফাইনালে উঠেছে উনাই এমেরির দল। প্রথম লেগে লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে ৩-১ গোলে জিতেছিল আর্সেনাল। একই সময়ে শুরু হওয়া চেলসি ও ফ্রাঙ্কফুর্টের মধ্যে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের আরেক ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়। দুই লেগ মিলে স্কোরলাইন ২-২ হলে ম্যাচ অতিরিক্ত সময় হয়ে গড়ায় টাইব্রেকারে। তাতে ৪-৩ ব্যবধানে জয় পায় মাওরিসিও সাররির দল চেলসি। চেলসির জয়ের নায়ক গোলরক্ষক কেপা। জার্মান ক্লাব ফ্রাঙ্কফুর্টের শেষ দু’টি পেনাল্টি শট তিনি দক্ষতার সঙ্গে রুখে দেন। আগামী ২৯ মে আজারবাইজানের বাকুতে শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে চেলসি ও আর্সেনাল। এরপর আগামী ১ জুন স্পেনের মাদ্রিদের ওয়ান্ডা মেট্রেপলিটানো স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে মুখোমুখি হবে লিভারপুল ও টটেনহ্যাম হটস্পার।
পরশু রাতের পর প্রথমবারের মতো ক্লাব পর্যায়ে ইউরোপের শীর্ষ দুই ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে পা রেখেছে একই দেশের চারটি ক্লাব। এর আগে ক্লাব পর্যায়ে ইউরোপের শীর্ষ কোন প্রতিযোগিতার ফাইনালে দুটি দলই ইংল্যান্ডের এমন ঘটনা ঘটেছে মাত্র দুইবার।
১৯৭১-৭২ মৌসুমে উয়েফা কাপের ফাইনালে ওলভারহ্যাম্পটনকে হারিয়েছিল টটেনহ্যাম। আর ২০০৭-০৮ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে চেলসিকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ইউরোপা লীগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনাল মিলে চারটি দলের মধ্যে তিনটি স্প্যানিশ দল ছিল একবার। ২০১৫-১৬ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে মুখোমুখি হয় মাদ্রিদের দুই ক্লাব এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও রিয়াল মাদ্রিদ। আর ইউরোপা লীগের শিরোপা জয় করে সেভিয়া।
অর্থাৎ সাব্র্কি বিচারে অল-ইউরোপিয়ান আসরে ইংল্যান্ড ও স্পেনের ক্লাবগুলোর ধারে কাছে নেই অন্য কোন দেশ। এবার স্প্যানিশ ক্লাবগুলোর সাফল্য ছাপিয়ে গেছে চার ইংলিশ জায়ান্ট। ইংল্যান্ডের ফুটবলের জন্য এরচেয়ে সুখের আর কি হতে পারে।
তাদেরই চার ক্লাব লিভারপুল, টটেনহ্যাম হটস্পার, চেলসি ও আর্সেনাল চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ও ইউরোপা লীগের ফাইনালে উঠেছে। স্বাভাবিকভাবেই ইংলিশ ক্লাবগুলোর প্রশংসায় ব্যস্ত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। ইংল্যান্ডের সাবেকরা তো বটেই, অন্য দেশের কিংবদন্তিরাও ইংলিশ ক্লাবগুলোর প্রশংসায় ব্যতিব্যস্ত আছে।
শীর্ষ সংবাদ: