ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্মিথের আলো ছড়ানো প্রত্যাবর্তন

প্রকাশিত: ১০:২৪, ১১ মে ২০১৯

 স্মিথের আলো ছড়ানো প্রত্যাবর্তন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ সামনে রেখে ঘরের মাটিতে প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে তিনটি পঞ্চাশ ওভারের প্রস্তুতি ম্যাচ শেষ করল ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। কেমন খেলল? সিরিজটা তারা জিতে নিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। প্রথম ম্যাচে হারতে হারতে জয় ১ উইকেটে, দ্বিতীয়টাতো ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হার মানে স্বাগতিকরা। বৃষ্টিবিঘ্নিত তৃতীয় ম্যাচে ডার্কওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে জয় ১৬ রানে। তবে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে আলোচনায় স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় বহুল আলোচিত সেই বল টেম্পারিংয়ের অপরাধে পাওয়া নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দীর্ঘ ১৩ মাস পর অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ফিরেছেন তুখোড় দুই তারকা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) ঝড় তোলা ওয়ার্নার (৩৯, ০, ২) খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তবে প্রত্যাবর্তনে স্মিথ ছিলেন দুর্দান্ত। মাস্টার ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী ছড়িয়ে সাবেক অধিনায়ক খেলেছেন ২২, অপরাজিত ৮৯ ও অপরাজিত ৯১ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস। ব্রিসবেনে শুক্রবার নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোরই গড়েছিল টম লাথামের নিউজিল্যান্ড। আগের দুই ম্যাচে ৬০ ও ১৩০ রান করা উইল ইয়াং এদিনও খেলেছেন ১১১ রানের দারুণ ইনিংস। অথচ ২৬ বছর বয়সী কিউই ব্যাটসম্যানের এখনও জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তারকা পেসার প্যাট কামিন্স ৪, মার্কাস স্টয়নিস ২ ও স্পিনার এ্যাডাম জাম্পা নেন ২ উইকেট। জবাবে বৃষ্টির কারণে খেলা যখন বন্ধ হয় ৪৪ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ৫ উইকেটে ২৪৮। ডার্কওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে তাদের করতে হতো ২৩৩। ১৬ রানের দারুণ জয়ে বড় অবদান স্টিভেন স্মিথের। ১০৮ বলে ৯১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। সাবেক অধিনায়ক তার ইনিংসে দৃষ্টিনন্দন ১০টি চারের মার ছিল। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ছিলেন ভীষণ আগ্রাসী। ৪৮ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭০ রান করে আউট হন তুখোড় এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ওপেনিংয়ে নামা ডেভিড ওয়ার্নার এদিন মাত্র ২ রান করে আউট হন। আগের দুই ম্যাচে তিনি করেছিলেন ৩৯ ও ০। স্মিথ-ওয়ার্নার ফেরার পরই প্রধান কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার বলেছিলেন, তাদের কাছ থেকে কেবল ভাল ব্যাটিংই নয়, ভাল আচরণও আশা করেন তিনি। ‘ইগো’ ত্যাগ করে দলের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। কাজটা যে দুই তারকা বেশ ভালভাবেই করে যাচ্ছেন ল্যাঙ্গারের বক্তব্যেই সেটি পরিষ্কার, ‘এই ক’দিনে ওরা দারুণ মানিয়ে নিয়েছে। সবাই ওদের সঙ্গে নিঃসঙ্কোচে মিসছে। আমি এটাই চাইছিলাম। আমাদের বিশ্বকাপ ধরে রাখতে সবার আগে এটাই প্রয়োজন।’ আর স্মিথের এই ব্যাটিং নিয়ে কোচের মূল্যায়ন, ‘ও অসাধারণ প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান। সেটি প্রমাণ করতে এতটুকু সময় নেয়নি। অনুশীলনে নেট প্র্যাকটিস থেকে শুরু করে প্রস্তুতি ম্যাচে স্মিথের ব্যাটিংয়ের দিকে আমাদের বিশেষ নজর ছিল। আমরা গোটা টিম ম্যানেজমেন্টই এ বিষয়ে একমত যে, সে মাস্টার ব্যাটসম্যান।’ আগের ম্যাচে পাঁচ নম্বর পজিশনে খেলা স্মিথ এদিন নামেন ওয়ান ডাউনে অর্থাৎ তিন নম্বরে। একধাপ পিছিয়ে শন মার্শকে চারে খেলানো হয়। বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত দুটি সিরিজ জয়ের পর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল এই দলে স্মিথ-ওয়ার্নারের জায়গা কোথায়? প্রথম ম্যাচে ওয়ার্নারকে খেলানো হলেও পরের দুটিতেই নিজের প্রিয় জায়গা ওপেনিংয়ে ফিরেছেন তিনি। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, দীর্ঘদিন পর দলে ফিরলেও দুই তারকাকে অগ্রাধিকার দিয়েই বিশ্বকাপে লাইনআপ সাজাতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
×