ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লন্ডনে মৌমাছির জন্য করিডর

প্রকাশিত: ০৯:০০, ১১ মে ২০১৯

 লন্ডনে মৌমাছির  জন্য করিডর

মৌমাছি রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে ব্রিটেন। মৌমাছির জন্য সাত মাইল দীর্ঘ করিডর বানাচ্ছে লন্ডন কাউন্সিল। এই করিডরে বুনোফুলোর বীজ বপন করা হচ্ছে। আর এসব করা হচ্ছে মৌমাছির সংখ্যা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে। পরাগায়নে সহায়ক পতঙ্গ মৌমাছির সংখ্যা বৃদ্ধির জন্যই এই উদ্যোগ। উত্তর লন্ডনের ব্রেন্ট কাউন্সিল শহরের ২২ পার্ক ও খোলা জায়গায় বুনোফুলের বীজ বপন করছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার বর্গমিটার জুড়ে ফুলের নতুন এলাকা হচ্ছে যা দৈর্ঘ্যে প্রায় সাত মাইল। কাউন্সিল জানায়, রাজধানীতে এ ধরনের উদ্যোগ প্রথম বলে তাদের ধারণা। কর্তৃপক্ষ জানায়, চারণভূমি হিসেবে নেয়া জায়গাগুলোতে শ্রমিকরা চাষ দিচ্ছে। জমি তৈরির কাজ শেষ হলে পরাগায়নে সহায়ক পতঙ্গ মৌমাছিকে আকৃষ্ট করতে সেখানে ছোট হলুদ ফুলের বীজ, বুনো গোলাপি ফুলের বীজসহ বিভিন্ন বুনোফুলের বীজ বপন করা হবে। কাউন্সিলের পরিবেশ বিষয়ক প্রধান ক্রুপা শেঠ বলেন, ‘আমরা যেসব খাবার খাই, সেসব শস্যের পরাগায়নে মৌমাছিসহ অন্যান্য কীটপতঙ্গ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের বংশবৃদ্ধির জন্য আমাদের সম্ভাব্য সবকিছু করা উচিত। শহরের পার্কে জীববৈচিত্র্য বিকাশে ব্রেন্টের প্রতিশ্রুতিতে আমি গর্বিত। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চারণভূমিগুলো ফুলে ফুলে ভরে উঠবে, এটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। প্রকৃতিতে মানুষ যে অব্যাহত ভয়াবহ ক্ষতি করছে সে বিষয়ে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিবেদনের পরপরই ব্রেন্ট কাউন্সিল মৌমাছির জন্য করিডর করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। ইন্টারগর্বমেন্টাল সায়েন্স-পলিসি প্ল্যাটফর্ম অন বায়োডাইভারসিটি এ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস (আইপিবিইএস) জানায়, ১৯৮০ সালের পর থেকে বন্যপ্রাণী প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে, প্রাকৃতিক মিথষ্ক্রিয়ার জায়গা অর্ধেকে নেমে এসেছে এবং মানুষের কারণে প্রায় ১০ লাখ প্রজাতি হুমকির মুখে। এছাড়া গত মাসে নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত পৃথক একটি সমীক্ষার কথা উল্লেখ করেছে ব্রেন্ট কাউন্সিল। এতে বলা হয়েছে ১৯৮০’র দশকের পর থেকে ব্রিটেন জুড়ে পরাগায়নে সহায়ক কীটপতঙ্গের সংখ্যা ব্যাপক কমে গেছে। এই সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ব্রিটেনের বুনোফুলের এলাকা ৯৭ শতাংশেরও বেশি বিলীন হয়ে গেছে। অনেক প্রজাপতি, মৌমাছি, ফড়িং ও মথ এসব ফুলের কারণেই বেঁচে থাকে। বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ও প্রাকৃতিক মিথষ্ক্রিয়ার জন্য এসব পরাগায়নে সহায়ক পতঙ্গ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। খাদ্যশস্যের ৭৫ শতাংশ, বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদনের ৩৫ শতাংশ এবং ফুলজাতীয় গাছপালার প্রায় ৮৮ শতাংশের রক্ষায় এসব কীটপতঙ্গ অপরিহার্য। -ইনডিপেনডেন্ট
×