ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ১০ মে ২০১৯

 উবাচ

২০ দলে নেই পার্থ স্টাফ রিপোর্টার ॥ দল ছোট হলেও গেল সপ্তাহে রাজনীতিতে আলোচিত বিষয় ছিল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা। দলটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থের ঘোষণা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বিএনপি ও তাদের মিত্রদের। পার্থ স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন, ‘আমরা আর ২০ দলীয় জোটে থাকছি না’। আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেছেন, বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ২০ দলীয় জোটের শরিক হলেও বিএনপি আমাদের পাশ কাটিয়ে গিয়েছে। ২০ দলীয় জোটের চেয়ে এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দিকেই তারা বেশি মনোযোগী। বিএনপি সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অথচ তারা সংসদে গেল কিন্তু এ বিষয়ে ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে কোন আলোচনা হয়নি। আমরা জোটবদ্ধভাবে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। এসব অবহেলার কারণে আমরা জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পার্থ আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১৯৯৯ সাল থেকে চারদলীয় জোটে এবং পরবর্তীতে ২০ দলীয় জোটে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর হতে ২০ দলীয় জোটের রাজনৈতিক কর্মকা- ক্রমশই স্থবির হয়ে পড়েছে। বিরোধীদলীয় রাজনীতি অতিমাত্রায় ঐক্যফ্রন্টমুখী হওয়ায় ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের আগে এবং পরে সরকারের সঙ্গে সংলাপসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ২০ দলীয় জোটের বিএনপি ছাড়া অন্য কোন দলের সম্পৃক্ততা ছিল না। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পার্থ বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের প্রহসনের ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ২০ দলীয় জোটের সবার সম্মতিক্রমে এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রথমে ঐক্যফ্রন্টের দুইজন এবং বিএনপির সম্মতিতে দলটির চারজন সংসদ সদস্য শপথ নেয়ায় দেশবাসীর মতো বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপিও অবাক এবং হতবাক। শপথ নেয়ার এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে বিএনপি ছাড়া ২০ দলের অন্য কোন দলের সম্পৃক্ততা নেই। ভুল সবই ভুল স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংসদে যাওয়া না যাওয়ার ইস্যুতে বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোটের রাজনীতি কম হয়নি। বিএনপি সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের অনেকে কমসংখ্যক সদস্য হলেও জাতীয় সংসদে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি এতটাই অনড় ছিল যে কেউ দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে সংসদে গেলে বহিষ্কার করা হবে বলে হুমকিও দিয়েছে। একজন শপথ নেয়ায় বহিষ্কারও করেছে দলটি। কিন্তু যখন একের পর এক শপথ নেয়া শুরু করেছেন তখন দলটির নেতারা পড়লেন গ্যাঁড়াকলে। এবার পরিস্থিতি এমন দাঁড়াল যে, দলে ভাঙ্গন ঠেকাতে শপথ নেয়ার পক্ষেই মত দিলেন সেই নেতারাই। এমনকি বলা হলো লন্ডন থেকে তারেক রহমানই শপথ নেয়ার কথা বলেছেন। বাধ্য হয়ে খোদ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই বলে বসলেন, ‘আমাদের সংসদে না যাওয়ার আগের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল’। ফখরুলের এমন স্বীকারোক্তি আলোচনার ঝড় তুলেছে। বিএনপির অনেকে প্রবীণ নেতাই দলটির মহাসচিবের মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ফলে কিছুটা বেকায়দায়ই আছেন মহাসচিব। সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত ছাত্র ফোরাম আয়োজিত এক স্মরণসভায় ফখরুল বলেন, আমরা আগে সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সেই সময় সংসদে না যাওয়ার সেই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। আমরা ছেড়ে দেব, বসে থাকব এমনটা না। আমরা অবশ্যই পথ খুঁজব। আমাদের পার্লামেন্টেও লড়াই করতে হবে। বাইরেও লড়াই করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে রাজনীতিতে স্থির বলতে কিছু নেই। স্থিরভাবে কোন কিছু থাকে না। এটা সবসময় পরিবর্তন হতে থাকে। ৯০-এর যে চিন্তা-ভাবনা, পরিস্থিতি, পরিবেশ সেগুলো কি ২০১৯ সালে আছে? সুতরাং আমাদের ২০১৯ সালের রাজনীতিকে বিশ্লেষণ করে, পর্যবেক্ষণ করে তার পথ বের করতে হবে। রিজভীর মতে মান অভিমান স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথমে বিজেপির জোট ছাড়ার ঘোষণা এরপর একের পর এক নেতার জোট ত্যাগের হুমকিতে চিন্তায় পড়ে গেছেন বিএনপি নেতারা। হুঁশিয়ারি দিয়ে দলীয় ও জোটের সাংসদদের শপথ ঠেকানো যায়নি। উল্টো নিজেদেরই অবস্থান পাল্টাতে হয়েছে। এখন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলের নেতাদের জোট ত্যাগের হুমকি আল্টিমেটামে টালমাটাল বিএনপি নেতারা নতুন তথ্য হাজির করেছেন। দল ভাঙ্গাচোরার এ ঘটনার পেছানেও সরকারের খেলাধুলা দেখছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সম্প্রতি রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন রিজভী। তার আগেই ২০ দলীয় জোট থেকে আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চলে যাওয়া ঘোষণা আসে। একদিন পর জোটের আরেক শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের জোট ত্যাগের আলটিমেটাম দেন। আগামী ২৩ তারিখ পর্যন্ত বিএনপিকে ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান। এ সময়ের মধ্যে বিএনপি ঐক্যফ্রন্ট না ছাড়লে লেবার পার্টি ২৪ তারিখে ২০ দলীয় জোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাবে। ইরান বলেন, ২৩ তারিখ পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার জন্য বিএনপিকে আল্টিমেটাম দিয়েছি। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সরকারের একটা মিশন নিয়ে এসেছেন ঐক্যফ্রন্টে। ঐক্যফ্রন্ট তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের এজেন্ডা নিয়েই তারা কাজ করছে। এ কারণে বিএনপিকে ঐক্যফ্রন্ট ছাড়তে হবে। যার কারণে বিএনপিকে ড. কামালদের ছাড়তে হবে। সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন বিএনপি নেতাকে। উত্তরে রিজভী বলেন, ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। একটু মান-অভিমান হতেই পারে, এটা ঠিক হয়ে যাবে। তবে জোট ভাঙ্গার পেছনে সরকারের খেলাধুলা থাকতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপিকা শাহিদা রফিক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা মুনির হোসেন, মাহবুবুল হক নান্নু, খান রবিউল ইসলাম রবি ও শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন উপস্থিত ছিলেন।
×