ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৪ কোটি টাকার সেতু কাজে আসছে না

প্রকাশিত: ১০:১৩, ৯ মে ২০১৯

 ১৪ কোটি টাকার সেতু কাজে আসছে না

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ ১৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। নির্মাণ হয়েছে সেতু। এ সেতু সাধারণ মানুষের কোন কাজেই আসছে না। তাই সরকারের কোটি কোটি টাকা যেন পানিতেই তলিয়ে গেল। অন্তত আড়াই বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের কৃষ্ণনগরে পাগলা নদীর ওপর এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। সেতুটি চালু হলে নবীনগরের তিনটি ইউনিয়নসহ সদর উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে। উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন এখনও অধরাই রয়ে গেল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাগলা নদীর ওপর ১৮০ মিটার দীর্ঘ ওই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে। এতে ব্যয় হয় প্রায় ১৪ কোটি টাকা। সেতুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৭ সালের মে মাসে। পরে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত নির্মাণ কাজের সময় বাড়ানোর পর এর কাজ শেষ হয়। সেতুর কাজ শেষ হলে ও সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক এখনো নির্মিত হয়নি। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি জনগণের কোন কাজেই আসছে না। সরকারের আরটিআইপি-২ প্রকল্পের অধীনে এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। তাদের অধীনে সেতুটি নির্মাণ করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘হাসান এন্টারপ্রাইজ’। ওই সেতু নির্মাণ করা ছিল এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। কারণ নবীনগরের উত্তরাঞ্চলের কৃষ্ণনগর, বড়াইল ও বীরগাঁও ইউনিয়ন এবং পাশের সদর উপজেলার অর্ধশত গ্রামের প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ একটি সড়ক ও একটি সেতুর অভাবে স্বাধীনতার পর থেকে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল। এর মধ্যে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে বর্তমান সরকারের আমলে কৃষ্ণনগর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গোকর্ণঘাট পর্যন্ত পাকা সড়ক (পিচঢালা) নির্মাণের কাজ শেষ হলেও শুধু সংযোগ সড়কের অভাবে ওই সেতুটি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে এলাকাবাসী এখনও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর কৃষ্ণনগর পার থেকে জনপ্রতি ১০ টাকা দিয়ে নৌকায় করে ওপারে যাচ্ছে লোকজন। পরে সিএনজিচালিত অটোরিক্সায় করে জেলা সদরে যাচ্ছে তারা। স্থানীয়রা জানান, এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণে দাবির প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্বাধীনতার পর এই এলাকায় আমরা ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সড়ক ও পাগলা নদীতে একটি বিশাল সেতু পেয়েছি। কিন্তু সড়কটি এক বছর আগে চালু হয়ে গেলেও শুধু সেতুটির দুই পারে সংযোগ সড়ক এখনও নির্মিত না হওয়ায় এলাকার জনগণের কষ্ট ও দুর্ভোগ এখনও লাঘব হয়নি। উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, সেতুটির দুই পাড়ে জায়গা নিয়ে জটিলতা ছিল। সেটা দূর হয়েছে। দ্রুত এর কাজ শেষ করা হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, দ্রুতই প্রকল্প বাস্তবায়নে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সুন্দর সমাধান বের করা হবে।
×