ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আর্চারকে বিশ্বকাপে চান ফ্লিনটফ

প্রকাশিত: ১০:০৩, ৯ মে ২০১৯

আর্চারকে বিশ্বকাপে চান ফ্লিনটফ

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ বিশ্বকাপে সুযোগ না পেয়ে আলোচিত ক্রিকেটারদের অগ্রভাগে ঋষভ পন্থ ও জোফরা আর্চার। ভারতীয় পন্থকে নিয়ে সেটি কিছুটা ম্লান হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান থেকে বৃটিশ বনে যাওয়া আর্চারকে নিয়ে আলোচনা থেমে নেই। বরং আরও যেন বেড়েছে। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে অংশগ্রহণকারী সবগুলো দেশ বিশ্বকাপের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করে। আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে আলো ছড়ানো আর্চার আলোচনায় থাকলেও সেই দলে জায়গা পাননি। তবে তিনি ছিলেন আয়ারল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে। গত সপ্তাহে ২৪ বছর বয়সী পেস বোলিং অলরাউন্ডারের ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয় আইরিশদের বিপক্ষে, আর টি২০তে পাকিস্তানের বিপক্ষে। দুই ফরমেটেই আগমনে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ওয়ানডেতে ৫ ইকোনমি রেটে ১টি এবং টি২০তে ২৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। সাবেক ইংলিশ অলরাউন্ডার এ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ মনে করেন, কাউকে বাদ দিয়ে হলেও আর্চারকে নেয়া উচিত। উল্লেখ্য, ২৩ মে পর্যন্ত দলগুলো তাদের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে পরিবর্তন আনতে পারবে। ফ্লিনটফ বলেন, ‘আমি তাকে (আর্চার) বোলিং করতে দেখেছি। বিস্মিত হয়েছি, সে সামান্য প্রচেষ্টায় দারুণ গতিতে বোলিং করতে পারে। ও সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী এক পেসার, অনেকটা বুমরাহর মতো, যাকে অবশ্যই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে খেলানো উচিত। আর আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন কাকে বাদ দেয়া যায়? আমি বলব যে কাউকেই!’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজে জন্ম নেয়া আর্চারকে ইংল্যান্ড দলে ভেড়াতে অনেক আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি)। কিন্তু এটা নতুন নয় ইংল্যান্ডের জন্য। এর আগেও বেশ কয়েকজন ভিন্ন দেশের বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার ইংল্যান্ড দলে খেলেছিলেন। সাবেক তারকা অলরাউন্ডার ফ্লিনটফ আরও যোগ করেন, ‘আমি মনে করি সে অসাধারণ। জানি কিছু জিনিস তাকে দলে নিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, কিন্তু আমরা বিগত অনেক বছরই এমন কাজ করেছি। আমি যখন ছোট ছিলাম দক্ষিণ আফ্রিকার বংশোদ্ভূত রবিন স্মিথ, জিম্বাবুইয়ের গ্রায়েম হিককে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে দেখেছি। এমনকি আমরা দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কেভিন পিটারসনকে নিয়েও খেলেছি। এটা নতুন কিছু নয়।’ তবে আর্চার নিজে এ বিষয়ে বেশ সচেতন। তিনি বলেন, ‘আসলে সবকিছু ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে হবে। আমি এখনই এত দূর পর্যন্ত ভাবছি না। এখানে ভাল করলে সম্ভবত তখন দলে আমাকে নিয়ে ভাবা হবে। তবে আমি এখনই বিশ্বকাপ খেলার জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করছি না।’ ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে পারার যোগ্যতাটা দ্রুতই হয়ে গেছে আর্চারের। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে বাইরের কেউ খেলতে চাইলে প্রচলিত নিয়ম পাল্টানোর কারণে হতে পারে। সেই দলে খেলতে পেরে প্রথমদিনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন আর্চার। প্রথম ম্যাচ (আয়ারল্যান্ডে একমাত্র ওয়ানডে) খেলার পর ড্রেসিং রুমের আন্তরিক পরিবেশ মুগ্ধ করেছে তাকে, ‘এটা ছিল খুবই আন্তরিকতাপূর্ণ। আমি দলের অনেককেই আগে থেকে চিনি। আর এমন দলে ডাক পাওয়া মানে দারুণ ব্যাপার। অনেক সময় মিডিয়া বিষয়টিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে। তবে আমি আসার পর থেকে এখানে তেমন বাজে কিছু অনুভব করিনি। সবাই খুব আন্তরিক।’ বলেন আলোচিত আর্চার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জাতীয় দলে না খেললেও ক্যারিবিয়ান অনুর্ধ-১৯ দলে খেলেছেন জোফরা আর্চার। আইপিএল, বিগব্যাশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে নিজের গতির ঝলক দেখিয়েছেন। দারুণ স্লোয়ারের পাশাপাশি নিয়মিত ইয়র্কারও করতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই আলোচনার টেবিলে কৃষ্ণাঙ্গ এই তরুণ। গত বছর থেকেই আর্চারের ওপর নজর রাখে ইংলিশ বোর্ড। কৃষ্ণাঙ্গ এই ক্রিকেটারের পিতার জন্মস্থান ইংল্যান্ড। তরুণ এই ক্রিকেটারকে নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগানও বলেন, ‘আমি আর্চারের বিরুদ্ধে খেলেছি। সে এক কথায় দুর্দান্ত, বিভিন্ন লীগে খেলে জাতীয় দলে আসার আগেই ও নিজেকে প্রমাণ করেছে।’
×