ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পসহ ১১ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

আগামী বাজেট থেকে দেশের সব মানুষ উপকৃত হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ৯ মে ২০১৯

 আগামী বাজেট থেকে দেশের সব মানুষ উপকৃত হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট থেকে দেশের সকল মানুষ উপকৃত হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এছাড়া মিরপুরে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৩২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পসহ মোট ১১ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। কোটি টাকার গাড়ি পাবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে রাশিয়া থেকে ১ লাখ টন গম আমদানি করা হবে। বুধবার সচিবালয়ে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এরপরই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, আগামী বাজেটের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলার সময়ে এখনও আসেনি। অপেক্ষা করেন। বাজেটের মজা পেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে। আগামী বাজেট অর্থমন্ত্রী হিসেবে আপনার জীবনের প্রথম বাজেট। এ বাজেটে কোন কোন খাতে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটের অগ্রাধিকার হচ্ছেন আপনি। আপনাকে অগ্রাধিকার দিয়েই বাজেট প্রণয়ন হবে। দেশের সকল মানুষের জন্য বাজেট। এবং দেশের মানুষকে প্রাধান্য দিয়েই বাজেট তৈরি করব। দেশের উন্নয়ন হয়, প্রত্যেকটি মানুষের যেন উপকারে আসে এবং প্রত্যেকটি সেক্টরকে আরও বিকশিত করার মতো করে বাজেট দিব। বাজেটে শেয়ার মার্কেট নিয়েও কথা থাকবে। সকল সেক্টর নিয়ে কথা থাকবে বলেও জানান তিনি। তবে নির্দিষ্ট করে এ মুহূর্তে কোন কথা বলা যাবে না। কারণ বাজেট বিষয়ে কথা বলার নির্দিষ্ট সময় আছে সে সময় এখনও আসেনি। এখনই বাজেট নিয়ে খোলাখুলি কথা বলার কিছু নেই। কারণ বাজেটে সবারই চাহিদা আছে। সবার চাহিদা পূরণ করতে আমরা চেষ্টা করব। তারপরও শতভাগ পূরণ করা সম্ভাব নয় এটা ভাল করেই জানেন। রাজস্ব আহরণ করতে হবে। তারপর প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অভিমতে দুর্নীতি কমানো গেলে ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, এদেশে ৪ কোটি মধ্য আয়ের মানুষ আছে। সেখানে ট্যাক্স দেয় ৫ লাখ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যা বলেছে সত্য কথা বলেছে। চার কোটি মানুষ ট্যাক্স দিলে আমাদের ট্যাক্স জিডিপির অনুপাত অনেক বেড়ে যেত। এখন যেটা মাত্র ১০ শতাংশ। তবে আগামী ট্যাক্স না দিয়ে কেউ থাকতে পারবে না। যারা দিয়েছে তারা ট্যাক্স দিবেন, যারা দেয়নি তারাও দিবে। এমন ব্যবস্থাই করা হবে। খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের বিষয়টি বাজেটে নয় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমেই দেয়া হবে বলেও জনান অর্থমন্ত্রী। কাছাকাছি সময়ের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন হবে। স্বল্প ও মধ্যবিত্তের ফ্ল্যাটসহ ১১টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন ॥ রাজধানীর মিরপুরে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৩২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পসহ মোট ১১ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সভায় মোট ১১টি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরস্থ ১৬নং সেকশনে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ৮৩২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৫৪৫ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট সংবলিত ভবন নম্বর ৭ ও ৮ নির্মাণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৩ কোটি ৪ লাখ ৯৩ হাজার। প্রকল্পটি কাজ পেয়েছে বিশ্বাস ট্রেডিং এ্যান্ড কনস্ট্রাকশন। প্রকল্পটি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করবে। কাস্টম হাউস, চট্টগ্রামের জন্য স্ক্যানার ক্রয়, স্থাপন ও এর কার্যক্রম ২ বছরের জন্য সার্বক্ষণিক সচল রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৯০ কোটি ৩১ লাখ। এছাড়া প্রায় কোটি টাকার পাজেরো স্পোর্টস কিউ এক্স মডেলের জিপ পাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও)। কোন দরপত্র আহ্বান না করে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আপাতত ১০০টি গাড়ি কেনা হবে। দীর্ঘ সময় লাগার অজুহাতে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে কেনার পথে না হাঁটার পক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রতিটি গাড়ির দাম পড়বে ৯১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এত দামী গাড়ি কেনা নিয়ে অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এছাড়া রাশিয়া ফেডারেশন হতে সরকার টু সরকার পর্যায়ে এক লাখ টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সৌদি আরব ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের মধ্য স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৩১৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে কৃষি মন্ত্রণালয়। ২০২০ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক বাংলা ও ইংরেজী ভার্সন এবং এসএসসি ভোকেশনাল স্তরের বিনামূল্যের বিতরণযোগ্য পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য ১৮ হাজার ৫০০ টন কাগজ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন। এতে সরকারের ব্যয় হবে ১৭২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
×