স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে অস্থিরতার মধ্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটেও ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। জোটের দীর্ঘকালের সঙ্গী বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) জোট ছেড়েছে সোমবার সন্ধ্যায়। টানা কুড়ি বছর বিএনপির সঙ্গেই ছিল আন্দালিব রহমান পার্থর দল বিজেপি। দলটির পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির নেতৃত্বে ব্যর্থতার কথাই ফুটে উঠেছে। বলা হচ্ছে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার পর জোট সঙ্গীদের মূল্যায়ন করতে ভুলে গেছে। সঙ্গত কারণে এখন বিজেপি আলাদা চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ জোট ছাড়ার বিষয়টি রাতেই গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। পার্থ বলেন, আমরা জোট ছেড়ে দিয়েছি।
পার্থ গণমাধ্যমে যে বিবৃতি পাঠিয়েছেন তাতে তিনটি কারণে জোট ছাড়ার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অতিমাত্রায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টমুখী হয়ে গেছে (বিএনপি), ২০ দলীয় জোটের কর্মকা- শুধু সহমত, সংহতি ছাড়া তেমন কিছুই নয়। প্রহসন ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন’ এর পর সংসদে যাওয়াটা নৈতিকভাবে ঠিক হয়নি বলে মনে করেন বিজেপি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সংসদে বিএনপি যে যাবে, এটা আমার দল শুধু নয়, জোটের কেউ জানে না। যেহেতু বিএনপি জোট শরিকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাই জোট ছাড়াকে উচিত বলে মনে করছেন আন্দালিব রহমান পার্থ।
তবে রাতে এ নিয়ে বিএনপি কোন প্রতিক্রিয়া দেখয়নি। রাতে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে চাইলে তারা এড়িয়ে গেছেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি কামাল হোসেনের গণফোরামসহ আরও তিনটি দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকে পুরনো জোটে টানাপড়েনের খবর আসছিল; তবে ২০ দলীয় জোট থেকে বিএনপির নতুন জোটকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দেয়া হয়েছিল।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচন তারা একসঙ্গেই করেছিল, ঢাকার একটি আসনে পার্থ প্রার্থীও হয়েছিলেন ধানের শীষ প্রতীকে। তবে নির্বাচনের দিন দুপুরের দিকে আন্দালিব রহমান পার্থ ভোট প্রত্যাখ্যান করেন। যদিও সকাল থেকেই রাজধানীর এই এলাকার ভোটকেন্দ্রে আন্দালিব রহমানের কোন এজেন্ট ছিল না। নির্বাচনের আগেও পার্থর প্রচারণা তেমন চোখে পড়েনি।
ওই নির্বাচনের পরও সকলে এক সঙ্গে চলার শপথ নিয়েছিল। তবে কিছু দিন ধরে জোটে এবং ঐক্যফ্রন্টে অস্থিরতা চলছিল। বিএনপি ও গণফোরাম থেকে নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির জোটে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিএনপির সঙ্গে জোটে রয়েছে বিজেপি। এই দলটি গঠন করেন পার্থের বাবা নাজিউর রহমান মঞ্জুর। তিনি এক সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব ছিলেন।
ভোলার সংসদ সদস্য মঞ্জুর জাতীয় পার্টি থেকে বেরিয়ে বিজেপি গঠনের পর ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটে যোগ দেন। মঞ্জুরের মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে পার্থ দলের হাল ধরেন। পার্থের বাবা মঞ্জুর আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ভগ্নিপতি। যদিও সংসদ এবং সংসদের বাইরে বরাবরই আওয়ামী লীগের সমালোচনায় মুখর থেকেছেন পার্থ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: