ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিদেশীয় সিরিজ

বাংলাদেশ উইন্ডিজ লড়াই আজ

প্রকাশিত: ১১:২২, ৭ মে ২০১৯

 বাংলাদেশ উইন্ডিজ লড়াই  আজ

মিথুন আশরাফ ॥ আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশ আজ নিজেদের মিশন শুরু করছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লড়াই করার মধ্য দিয়ে এ মিশনে নামছে বাংলাদেশ। ম্যাচটি ডাবলিনের ক্যাসল এভিনিউয়ের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ সময় বেলা পৌনে চারটায় শুরু হবে। ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য সিরিজে প্রথম ম্যাচ হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য দ্বিতীয় ম্যাচ। তবে এক হিসেবে দুই দলই একটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ত্রিদেশীয় সিরিজের একটি মূল ম্যাচ খেলেছে। যেখানে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েছে। ১৯৬ রানের বড় জয় পেয়েছে। দুই সেঞ্চুরিয়ান জন ক্যাম্পবেল ও সাই হোপ মিলে ওপেনিং জুটিতে ৩৬৫ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। বাংলাদেশকে ভালই হুমকি দিয়ে রেখেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ সিরিজের মূল ম্যাচে খেলতে নামার আগে খেলেছে প্রস্তুতি ম্যাচ। আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষে সেই ম্যাচটিতে বোলার-ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ৮৮ রানে হেরেছেও বাংলাদেশ। সময় থাকতে জেগে ওঠার বার্তাও পেয়েছে। আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষেই (এটি আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দল) এমন দুর্দশা হয়েছে। তাতে সতর্কবার্তাও মিলেছে। যদিও ম্যাচটিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ক্রিকেটার খেলেননি। বিশ্রামে ছিলেন। কিন্তু যারা খেলেছেন তাদের বেশিরভাগই মূল ম্যাচেও খেলবেন। তারাও ব্যর্থ হয়েছেন। এই ব্যর্থতা আজও যদি বজায় থাকে তাহলে সামনের ম্যাচগুলো নিয়ে ভাবনায় থাকতে হবে। সামনে বিশ্বকাপ আসছে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নৈপুণ্য নিয়েও শঙ্কা তৈরি হবে। ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে ৩০ মে বিশ্বকাপ শুরুর আগে ত্রিদেশীয় সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ সিরিজ। এ সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুতিমূলক সিরিজ। এই সিরিজে বিশ্বকাপ দলের ক্রিকেটাররা যেমন করবেন, তার ওপর বিশ্বকাপে দল কেমন করতে পারে সেটির অনুমানও করা হবে। তাই সিরিজটিতে বাংলাদেশের ভাল কিছুর আশাই করা হচ্ছে। ত্রিদেশীয় সিরিজে সবচেয়ে শক্তিশালী দলই বাংলাদেশ। পূর্ণ শক্তির দল বাংলাদেশই আছে। আয়ারল্যান্ড দলটি নিজ দেশে শক্তিশালী হলেও বাংলাদেশের সামনে দুর্বল দলই হওয়ার কথা। যে দলটি বিশ্বের বড় দলগুলোকে এখন প্রতিনিয়ত হারায়, তাদের কাছে আইরিশরা বড় শক্তির দল হওয়ার কথা নয়। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলতো পূর্ণশক্তির এমনিতেই নয়। দলে ক্রিস গেইল, আন্দ্রে রাসেল, শিমরন হেটমেয়ার, কার্লোস ব্রেথওয়েট, ওশানে থমাস ও নিকোলাস পুরান নেই। দলের সেরা সব ক্রিকেটারই অনুপস্থিত। এরপরও আয়ারল্যান্ডকে যেভাবে উড়িয়ে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তাতে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস দ্বিগুণ বেড়ে গেল। যদি নিজেদের সহজাত খেলা খেলতে পারা যায় তাহলে আইরিশদের নিয়ে যে ভয় নেই তা বোঝা গেল। সঙ্গে এও বোঝা গেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশের জন্য আতঙ্ক। সিরিজে বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা নিয়েই খেলতে গেছে। সুযোগও আছে। ১৭ মে ফাইনাল ম্যাচ হবে। এর আগে প্রতিটি দলই পরস্পরের বিপক্ষে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার পর বৃহস্পতিবার স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ১৩ ও ১৫ মে আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও স্বাগতিক দলের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। বোঝাই যাচ্ছে, যদি কোন অঘটন না ঘটে তাহলে ফাইনালের দুই দল হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখন ফাইনালে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে পারলে শিরোপা নিজেদের করে নেয়া যাবে। প্রস্তুতি ম্যাচের প্রভাব মূল ম্যাচে পড়ে না। কিন্তু এখন প্রস্তুতি ম্যাচের হারে সতর্ক থেকে, ভুলগুলো শুধরে নিয়ে মূল ম্যাচে সামর্থ্য অনুযায়ী খেললে আজ জয় বাংলাদেশেরই হওয়ার কথা। যেটি খুব জরুরী। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আইরিশদের সঙ্গে যেভাবে খেলেছে, তাতে ভয় থাকতে পারে। কিন্তু গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজে এবং দেশের মাটিতে একটি করে সিরিজ খেলে যে বাংলাদেশই বাজিমাত করেছে সেটি প্রেরণা হয়েই ধরা দিচ্ছে। সেই প্রেরণা বাংলাদেশকে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচেও এগিয়ে রাখছে। এখন জয়টি মিলে গেলেই হয়। আয়ারল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছিলেন, ‘প্রত্যেকটা ম্যাচ জয় করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ সঙ্গে বিশ্বকাপের জন্য ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতাও গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছিলেন মাশরাফি, ‘আর বিশ্বকাপের জন্য আলাদা এ্যাডভান্টেজ হবে যদি আমরা এখান (আয়ারল্যান্ড) থেকে জিতে ওখানে (ইংল্যান্ড) যেতে পারি।’ লক্ষ্য ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতা। এ জন্য আইরিশদের উড়িয়ে দিয়ে উড়তে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আজই হারিয়ে সেই পথের শুভ সূচনা করে ফেলতে পারলেই হয়।
×