ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বকেয়া মজুরির দাবিতে খুলনায় ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে উৎপাদন বন্ধ

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ৭ মে ২০১৯

বকেয়া মজুরির দাবিতে খুলনায় ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে উৎপাদন বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ পবিত্র রমজান মাস শুরুর প্রাক্কালে বকেয়া মজুরি পরিশোধ, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল কেন্দ্রিক শিল্পাঞ্চল। ৮ থেকে ১১ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা একে একে খুলনা অঞ্চলের ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। সোমবার স্ব স্ব মিল এলাকায় শ্রমিকেরা গেট মিটিং ও মিছিল করেছেন। পরে খুলনা অঞ্চলের শ্রমিক নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- আগামী ৮ মে ঢাকায় বৈঠক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ অঞ্চলের ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। পাশপাশি বিকেল ৪টা থেকে রাজপথ অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হবে। শ্রমিকরা জানান, গত ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া মজুরি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেয়া হয়নি। আরও কয়েকদিন অপেক্ষায় থেকে বকেয়া মজুরি না পাওয়ায় রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে প্রথম স্টার জুট মিল, সন্ধ্যা ৬টায় প্লাটিনাম জুট মিল, রাত ৮টায় ক্রিসেন্ট জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়। একইভাবে এ রাতে আরও পাঁচটি এবং সকাল থেকে অপর জুট মিলটির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। বিজেএমসি আওতাধীন খুলনা অঞ্চলে নগরীর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিল, দিঘলিয়া উপজেলায় স্টার, আটরা শিল্প এলাকায় আলীম ও ইস্টার্ন এবং যশোরের নওয়াপাড়ায় কার্পেটিং জুট মিল ও যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রি (জেজেআই) অবস্থিত। এ বিষয়ে বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, খুলনা অঞ্চলের ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের সব কয়টির উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকেরা। তার দেয়া তথ্য মতে, মিল ভেদে এই পাটকলগুলোতে শ্রমিকদের ৮ থেকে ১১ সপ্তাহের এবং কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের তিন থেকে চার মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। কর্মবিরতির বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকলে ১৩ হাজরের কিছু বেশি স্থায়ী শ্রমিক এবং সাড়ে ১৭ হাজার বদলি ও এডহক ভিত্তিক শ্রমিক রয়েছেন। মিলগুলোতে উৎপাদিত প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার পাট পণ্য বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। যথা সময়ে পাটপণ্য বিক্রি না হওয়ায় আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে মিলগুলো। সে কারণে সময় মতো মজুরি দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, নিয়মিত মজুরি না পেয়ে শ্রমিকরা দায় দেনায় জড়িয়ে পড়েছে। অর্থাভাবে শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। তাদের সন্তানদের লেখা পড়াও চলছে না। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকরা একে একে এ অঞ্চলের সকল রাষ্ট্রায়ত্ত জুটমিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, আগামী ৮ মে ঢাকায় বৈঠক হবে। ওই বৈঠকের পূর্ব পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে এবং আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টা থেকে রাজপথে অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হবে। রাস্তার পাশে বসে ইফতার করে কর্মসূচী শেষ করা হবে। ঢাকায় বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
×