ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শুরু হচ্ছে প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা নির্ধারণী লড়াই

প্রকাশিত: ১২:১৪, ৬ মে ২০১৯

  শুরু হচ্ছে প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা নির্ধারণী লড়াই

জাহিদুল আলম জয় ॥ দুই সপ্তাহের বিরতি শেষে আবারও মাঠে গড়ানোর অপেক্ষায় ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)। আসরের প্রথমপর্ব শেষ হয়েছিল গত ২০ এপ্রিল। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএলের দ্বিতীয়পর্ব অর্থাৎ শিরোপা নির্ধারণী লড়াই। মজার বিষয়, বৃহস্পতিবার দেশের চার ভেন্যুতে মাঠে গড়াবে চারটি ম্যাচ। অর্থাৎ আটটি দল মাঠে নামছে দ্বিতীয়পর্বের শুরুর দিনেই। নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা বসুন্ধরা কিংসের মুখোমুখি হবে শেখ জামাল ধানমন্ডির। নোয়াখালীর শহীদ বুলু স্টেডিয়ামে বতর্মান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীর প্রতিপক্ষ নবাগত নোফেল স্পোর্টিং। গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও চট্টগ্রাম আবাহনী। আর সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে শেখ রাসেলের বিরুদ্ধে খেলবে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। প্রথম তিনটি ম্যাচ শুরু হবে বিকেল ৪টায়। আর সিলেটের ম্যাচটি মাঠে গড়াবে সন্ধ্যা ৭টায়। লীগের বিরতির সময়কালে মধ্যবর্তী দলবদল সম্পন্ন হয়েছে। এই সময়ে দলগুলো নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে খেলোয়াড় কেনাবেচা করেছে। প্রথমপর্ব শেষে লীগের শীর্ষে আছে নবাগত বসুন্ধরা কিংস। ১২ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট সর্বোচ্চ ৩৪। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী লিমিটেড আছে দ্বিতীয় স্থানে। সমান ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৩০। ২৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ২৩ পয়েন্ট নিয়ে সাইফের অবস্থান চারে। ১৯ পয়েন্ট ভা-ারে নিয়ে পাঁচে আছে আরামবাগ। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে মুক্তিযোদ্ধা। শেখ জামাল ও চট্টগ্রাম আবাহনী দু’দলের ঝুলিতেই ১৪ পয়েন্ট করে। তবে গোলগড়ে জামাল সাত ও বন্দর নগরীর চট্টগ্রাম আট নম্বরে। একেবারে তলানির দুই দল বিজেএমসি ও ঢাকা মোহামেডান। মাত্র ৪ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ দলের মধ্যে সবার নীচে বিজেএমসি। ৬ পয়েন্ট নিয়ে ১২তম স্থানে মোহামেডান। এখন পর্যন্ত এই দুই দলই রেলিগেশন হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছে। দ্বিতীয়পর্ব শুরুর আগে গত ২ মে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে অনুষ্ঠিত হয় পেশাদার ফুটবল লীগ কমিটির সভা। সেখানে কমিটির চেয়ারম্যান ও এমপি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর উপস্থিতিতে দ্বিতীয়পর্ব শুরুর দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়। সেই হিসেবে আজ থেকে দ্বিতীয়পর্ব মাঠে গড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যায় আরেকবার ডিগবাজী খেয়েছে বাফুফে। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ‘ফণী’র কারণে আরও তিনদিন লীগ পেছানো হয়েছে। তাদের বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, লীগ পেছানোর সিদ্ধান্ত হয় ৩ মে। কিন্তু সিদ্ধান্তটা সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয় দুই দিন পর! এর ফলে অনেককেই নিউজ নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। লীগের প্রথম লেগ শেষে দুই চমকের নাম বসুন্ধরা কিংস ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। প্রথমবার শীর্ষ লীগে নাম লেখান বসুন্ধরা এবার চমক সৃষ্টি করেছিল দল গড়েই। প্রথম লেগ শেষে চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে এককভাবে টেবিলের শীর্ষে নবাগতরা। শতভাগ জয় না পেলেও হার নেই বসুন্ধরার। ১২ ম্যাচে ১১ জয় কিংসের। সমান ম্যাচে ১০ জয় আবাহনীর। আট, সাত ও ছয়টি করে ম্যাচ জিতে সেরা পাঁচে আছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, সাইফ স্পোর্টিং ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। তবে গোল করার দিক দিয়ে এগিয়ে আবাহনী। আকাশী-নীলরা সর্বোচ্চ ২৮ আর বসুন্ধরা কিংস করেছে ২৬ গোল। প্রথম লেগের শেষ দিন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র নোয়াখালীতে গিয়ে হারিয়েছে বিজেএমসিকে। রাসেলের অস্টম জয়ের নায়ক এ্যালেক্স রাফায়েল। দেশের অন্যতম শীর্ষ ক্লাব মোহামেডান মাত্র এক জয় নিয়ে রেলিগেশন জোনে। বাকি ১১ ম্যাচের তিনটি ড্র আর ৮টিতে হার। অথচ ১৯৮০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ১২ বছরে লীগে মোহামেডানের হার মাত্র ৮ টিতে। এর মাঝে ১৯৮৫’র সুপার লীগের শেষের দিক হতে শুরু করে ৯০/৯১ সালের লীগ পর্যন্ত টানা ৭৬টি ম্যাচে অপরাজিত ছিল মোহামেডান। ওই সময়টিতে লীগে কোন পরাজয় ছিল না। ৭৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড এখনও অটুট আছে। অথচ সেই দলটিই কিনা এবারের লীগের প্রথমপর্বের ১২ খেলার ৮টিতেই হেরেছে। কোন জয় না পাওয়া বিজেএমসি সবার নীচে। আর রেলিগেশন জোনে মোহামেডানের সঙ্গে লড়াই হচ্ছে ১১তম অবস্থানে থাকা ব্রাদার্স ইউনিয়নের। আরামবাগের হোম ভেন্যুর দুর্গ ময়মনসিংহ গিয়ে জিতেছে গোপীবাগের ক্লাবটি। চমকে দিয়েছেন এভারটন সান্টোস। জয়ের হিসেবেও মোহামেডানের চেয়ে এক বেশি ব্রাদার্সের। প্রথম লেগের ৭৮ ম্যাচে গোল হয়েছে ১৭৩টি। সর্বোচ্চ গোলদাতাদের মধ্যে সেরা পাঁচে বাংলাদেশী কেবল আবাহনী ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন। ৯ গোল করে সবার ওপরে আবাহনীর নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা। ৮ গোল করে দুইয়ে জীবন। সমান গোল মুক্তিযোদ্ধার আইভরিকোস্ট ফরোয়ার্ড বাল্লো ফামোসার। গোলদাতার তালিকায় বিদেশীদের আধিপত্য থাকলেও সংখ্যার বিচারে এগিয়ে দেশী ফুটবলাররা। ৩৫ জন বাংলাদেশী করেছেন ৫৬ গোল। আর ৩৪ বিদেশী লক্ষ্যভেদ করেছেন ১১৭ বার।
×