ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটসম্যানদের ওপর আস্থা রাখছেন ম্যাকেঞ্জি

প্রকাশিত: ১২:১০, ৬ মে ২০১৯

ব্যাটসম্যানদের ওপর আস্থা রাখছেন ম্যাকেঞ্জি

মিথুন আশরাফ ॥ ধারণা করা হচ্ছে এবার বিশ্বকাপ ব্যাটসম্যানময় হতে চলেছে। প্রচুর রান হবে। ব্যাটসম্যানরা প্রচুর রান করবেন। বেশি রান স্কোরবোর্ডে জমা করেই দলগুলো প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে ম্যাচ জিতবে। বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের তাই আছে মহাদায়িত্ব। বিশ্বকাপ দলে থাকা তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাব্বির রহমান রুম্মনদের ওপরই তাই দায়িত্ব বর্তায়। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাটিং পরামর্শক দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ব্যাটসম্যান নেইল ম্যাকেঞ্জি বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের ওপর আস্থাও রাখছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার বিশ্বাস আছে তাদের (ব্যাটসম্যানদের) ওপর।’ সঙ্গে যোগ করেন, ব্যাটসম্যানরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে, সব বিভাগেই আমাদের সামর্থ্যবান খেলোয়াড় আছে। প্রয়োজন শুধু তাদের নিজেদের কাজটা সঠিকভাবে করে দেখানো। ক্রিকেটের প্রতি আবেগ, প্রতিভা, দক্ষতা ও বুদ্ধি কোনটারই অভাব নেই। শুধু বিশ্বকাপে খেলাটাকে উপভোগ করতে হবে। বিশ্বকাপ শুরু হবে ৩০ মে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে ২ জুন। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেই বিশ্বকাপের আসল লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ। এরপর লীগপর্বে খেলবে আরও ৮টি ম্যাচ। এক এক করে দ্বাদশতম বিশ্বকাপে ৫ জুন নিউজিল্যান্ড, ৮ জুন ইংল্যান্ড, ১১ জুন শ্রীলঙ্কা, ১৭ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০ জুন অস্ট্রেলিয়া, ২৪ জুন আফগানিস্তান, ২ জুলাই ভারত আর ৫ জুলাই পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা। বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে। তাই ধরে নেয়া হয়েছিল পেসবান্ধব উইকেটই মিলবে। কিন্তু বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ব্যাটসম্যানদের জন্য উইকেটে বেশি সুবিধা থাকে। এমনও ধারণা করা হচ্ছে বিশ্বকাপে এবার তিন শ’, সাড়ে তিন শ’ ছাড়ানো স্কোর প্রায়ই দেখা যাবে। বাংলাদেশের সামনে এত বড় স্কোর দাঁড় হলে কী ব্যাটসম্যানরা কুলিয়ে উঠতে পারবেন? ম্যাকেঞ্জি জানান, আমি মনে করি ব্যাটসম্যানরা কি করতে পারে ইতোমধ্যে সেটির আভাস দিয়ে রেখেছে। আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে স্কোরিং নিয়ে, স্ট্রাইক রোটেশন নিয়ে এবং প্রত্যেকের ব্যাটিং নিয়ে। কিন্তু তারা দেখিয়েছে তারা কি করার ক্ষমতা রাখে। তাদের ব্যাটিং করতে দেখা খুবই আনন্দের। আমার মনে হয় যখন তারা ব্যাটিং করে ভয়ডরহীন ব্যাটিং করে। এভাবেই তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারে। আমি আশা করব, তারা নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলবে, বাংলাদেশ দলকে এভাবেই ওপরে নিয়ে আসবে। ব্যাটিং পরামর্শক ম্যাকেঞ্জি আলাদা করে মুশফিকুর রহীমের কথাই বলেন। তিনি জানান, মুশফিক দারুণভাবে পেস বল সামাল দিতে পারে। আমাদের এ রকম আরও খেলোয়াড় আছে যারা বিভিন্ন জায়গায় দক্ষ। একেবারে দ্রুতগতিতে নয়, আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে কি করে ধারাবাহিক রান তোলা যায়। চেষ্টা করতে হবে ফাঁকা জায়গা দিয়ে রান তোলার। কোন প্রয়োজন নেই বড় হিট করে প্রতি ওভারে আট রান তোলার। আমরা গ্যাপে হিট করে রান নিতে পারি। আমাদের সে সামর্থ্য আছে। বিশ্বকাপ নিয়ে এর আগে ম্যাকেঞ্জি সৌম্য সরকারের কথা জানিয়েছিলেন। সৌম্যের কাছ থেকে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের আশার কথা জানিয়েছিলেন। ঢাকা লীগের শেষ দুই ম্যাচে সৌম্যের আগ্রাসী ব্যাটিং মনেও ধরেছিল ম্যাকেঞ্জির। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন সৌম্য। ম্যাকেঞ্জি তাই বলেছিলেন, ‘সৌম্যর মতো ক্রিকেটার যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে সে স্পিনারদের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক মনোভাবে ব্যাটিং করবে তাহলে আমরা চাইব সে যেন ইতিবাচক থাকে। সে নিজের সহজাত ব্যাটিংটাই করুক আমরা চাই। বিশ্বের সব বিগ হিটাররাই ভুল করে কিন্তু তাদের ওপর সবাই ভরসাও রাখে। এভাবেই তারা জবাব দেয়। সে নিজের খেলার ওপর বিশ্বাস রাখে। আমরা জানি সে সামনে এগিয়ে এসে মারতে পছন্দ করে তাতে যদি সে আউটও হয় তাতে কোন বড় সমস্যা নেই কারণ এটা তার খেলার পরিকল্পনার অংশ। এখন দেখা যাক, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা ম্যাকেঞ্জির আস্থার প্রতিদান দিতে পারেন কিনা।
×