ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে বিমানের সিবিএ সভাপতি

প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের ধরুন, অযথা হয়রানি করবেন না

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ৬ মে ২০১৯

 প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের ধরুন, অযথা হয়রানি করবেন না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুদকের বিরুদ্ধে হয়রানির প্রতিকার চেয়ে প্রকৃত দুর্নীতিবাজ ও রাঘব বোয়ালদের ধরার দাবি জানিয়েছে বিমানের নির্বাচিত সিবিএ নেতৃবৃন্দ। মূলত প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতেই সাধারণ কর্মচারীদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সভাপতি মশিকুর রহমানসহ অন্যান্য নেতা। তিনি বলেন, জাতির দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই সিবিএ নেতাদের নাম দুদকে প্রেরণ করে রাঘববোয়ালদের আড়াল করার অপচেষ্টা হচ্ছে। রবিবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয় বলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গত সপ্তাহে দুদক থেকে বিমানের এমডিসহ কয়েক সিবিএ নেতা ও কর্মচারীর বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। এতে মশিকুর রহমান বলেন, বিমান শ্রমিক লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ছয় বছর তদন্ত করেছে দুদক। দুদকের তিনটি টিম সিবিএ নেতাদের স্থাবর ধন-সম্পদের অধিকতর তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে গত ৬ মার্চ ফাইলটি পরিসমাপ্তি করেছে। এর ১৫ দিনের মাথায় পুনরায় একই অভিযোগে সিবিএ নেতাদের নাম দুদকে প্রেরণ করে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা উদ্দেশ্যমূলক। বিমানের প্রায় ছয় হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে শুধু সিবিএ নেতাদের কেন বারবার হয়রানি করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ছাড়াই ট্রাভেলস শপ লিমিটেডের পরামর্শে এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ৭৭৭ উড়োজাহাজ, ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ লিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওভারহলিং, জিএসএ নিয়োগে একক ব্যবসা সুপ্রতিষ্ঠিত করার খবর সংবাদপত্রে এসেছে। সেসব বিষয় থেকে জাতির দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই অপচেষ্টা চলছে। এ ধরনের হীন অপচেষ্টার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বিমানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মশিকুর বলেন, বিমান এখন না কর্পোরেশন না প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। এমন অবস্থা চলতে পারে না। হয় পরিপূর্ণ পিএলসি করতে হবে, নয় কর্পোরেশনে ফিরতে হবে। মাঝামাঝি কোন অবস্থান থাকতে পারে না। দুদকের হয়রানির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না এ প্রশ্নের জবাবে মশিকুর রহমান বলেন, আমরা চাই দুদক নিরপেক্ষভাবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করুক। কিন্তু তার আগে যেন হয়রানি করা না হয়। কারণ সামনে হজ। অনেকেই হজ পোস্টিং পেলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশ ছাড়তে পারবে না। আবার সিবিএ সেক্রেটারি মন্তাছার রহমানকে কিডনি রোগের চিকিৎসা করতে প্রতিমাসে কলকাতা যেতে হয়। দুদকের কারণে এখন তিনি সেটাও পারবেন না। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে। সিবিএ সভাপতি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুদককে আমরা সহায়তা করেছি। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সহায়তা করব। তবে আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ করব রাঘববোয়ালদের যেন খুঁজে বের করা হয়। কোন নিরীহ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যেন স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় অযথা হয়রানি করা না হয়। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন কোন দেশী-বিদেশী কোম্পানিকে বাংলার মাটিতে বিমানবন্দরের কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং ব্যবসা করতে দেয়া হবে না। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট যদি নিজেদের অর্থায়নে সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারি তাহলে অবশ্যই আমরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে সফল গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং করতে পারব। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিমান শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান ও রফিকুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুল হক, দফতর সম্পাদক হারুনুর রশিদ, আব্দুর বারী লাবলু, এমকেএম মাসুম বিল্লাহ, রুবেল চৌধুরী ও মিজানুর রহমান প্রমুখ।
×