ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে না যাওয়া ভুল ছিল ॥ অবশেষে ফখরুলের স্বীকৃতি

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ৬ মে ২০১৯

  সংসদে না  যাওয়া ভুল ছিল ॥ অবশেষে  ফখরুলের স্বীকৃতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘এ সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী’ বলে হাঁকডাক করে প্রচার করলেও এখন সেই অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিয়ে ভুল স্বীকার করল বিএনপি। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সম্মিলিত ছাত্রফোরাম’ নামে একটি সংগঠন আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সংসদে যাব না বলে অতীতে যা বলেছিলাম সেই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল, এটা বলতে আমার কোন দ্বিধা নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি এমপিদের সংসদে যাওয়ার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তা সঠিক। কারণ, সংসদেও আমাদের লড়াই করতে হবে, বাইরেও লড়াই করতে হবে। আর আমাদের দলে এতটুকু সমস্যা নেই। দল ঐক্যবদ্ধ আছে। তিনি বলেন, আমাদেরকে ভেতরে-বাইরে সব জায়গায় লড়াই করতে হবে বলেই ৫ এমপি সংসদে গিয়েছেন, আমি বাইরে আছি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তা না হলে রাজপথের আন্দোলনে তাকে মুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, সরকার খালেদা জিয়ার জামিন দিতে ভয় পায়। কারণ, তাকে মুক্তি দিলে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো তার পেছনে দলে দলে মানুষ ছুটে আসবে। বিএনপি নেতাকর্মীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। এই কঠিন ও সঙ্কটময় মুহূর্তে আমাদের কমিটমেন্ট রাখতে হবে। বিপদ সামনে নিয়েও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কখনও নিরাশ হবেন না, হতাশ হবেন না। বুক বেঁধে সোজা হয়ে দাঁড়ান। ভয় পাবেন না। আর দলের বিষয়ে কারো কোন বক্তব্য থাকলে তা দলীয় ফোরামের বাইরে না বলে ফোরামের মিটিংয়ে বলুন। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা দেয়ার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কারারুদ্ধ অবস্থায় তার স্বাস্থ্যের কিছু হলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন পিন্টুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, পিন্টু ছিল একজন ত্যাগী ও জনপ্রিয় বিএনপি নেতা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের বিচার বিভাগসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আইন ও বিচার ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের জন্য কাজ করা খুবই কঠিন। কিন্তু আমরা সে জন্য বসে থাকব, এমনটা নয়। আমরা অবশ্যই পথ খুঁজব। আমাদের মনে রাখতে হবে রাজনীতিতে স্থির বলতে কিছু নেই। কোন কিছুই স্থির থাকে না। এটা সবসময় পরিবর্তন হতে থাকে। নব্বইয়ের যে চিন্তা-ভাবনা, পরিস্থিতি ও পরিবেশ সেগুলো কি ’১৯ সালে আছে? সুতরাং, আমাদের ’১৯ সালের রাজনীতিকে বিশ্লেষণ করে, পর্যবেক্ষণ করে পথ বের করতে হবে। শুধু সস্তা স্লোগান দিয়ে কথা বললে চলবে না। আমাদের কোন্ পথ সঠিক হয় চিন্তা করে বের করতে হবে। শুধু নেতিবাচক চিন্তা করলে হবে না, পজিটিভ চিন্তা করতে হবে। তাই যখন আমরা বলেছিলাম যে সংসদে যাব না সে সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, উন্নয়ন হচ্ছে আওয়ামী লীগের, সাধারণ মানুষের কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এই সরকার গণতন্ত্রের ক্ষতি করতে গিয়ে দেশেরও ক্ষতি করেছে। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ দিতে বিএনপির কমিটি ॥ ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায়কে আহ্বায়ক এবং দলের ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রশীদ ইয়াসিনকে সদস্য সচিব করে এই ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ তথ্য জানান। বিএনপির ত্রাণ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বরিশাল, বরগুনা, সাতক্ষীরা, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও চাঁদপুরসহ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলার দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। খালেদার মুক্তির দাবিতে রিজভীর মিছিল ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগ ও তার মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে মিছিল করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রবিবার সকালে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি মিছিল করেন। এ সময় দলের আরও কিছু নেতাকর্মী তার সঙ্গে ছিলেন। মিছিলশেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেন, কেন খালেদা জিয়া কারাবন্দী? কারণ, তার জনপ্রিয়তা ও গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারকে সরকার ভয় পায়। এ জন্যই তিনি কারাগারে। তিনি প্রতিহিংসার শিকার। তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মেরে ফেলার চেষ্টা চলছে।
×