ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তাফা জব্বার

ডিজিটাল বিপ্লবীদের দেশে

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ৬ মে ২০১৯

ডিজিটাল বিপ্লবীদের দেশে

॥ এক ॥ ২০১৯ সালের বিশ্ব মোবাইল কংগ্রেসে ৮ নাম্বার হলে আমাদের এক টুকরো বাংলাদেশ দেখতে রিভ সিস্টেম এর স্টল দেখতে যাবার পথে হঠাৎ একটি বাক্য দেখে চোখ আটকে গিয়েছিল। বাক্যটির বাংলা অর্থ হচ্ছে কাতালুনিয়া: ডিজিটাল বিপ্লবীদের দেশ। এর আগে আর কোথাও বা কখনও ডিজিটাল বিপ্লবী শব্দ দুটি দেখিনি বা শুনিনি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ, ডিজিটাল ব্রিটেন বা ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য ডিজিটাল বিপ্লবী হওয়া যায় এই ধারণাটি কাতালুনিয়াতেই প্রথম পেলাম। ১৯ সালে স্পেনের কাতালুনিয়ার বার্সিলোনায় যাবারে মতোই ১৮ সালে বার্সিলোনায় যাই যখন প্রথমবারের মতো আমার সঙ্গে দেখা হয় মোবাইলের পঞ্চম প্রযুক্তির সঙ্গে। সেই প্রযুক্তির নাম ৫জি যাকে আমার কাছে এক অসাধারণ, অভাবনীয় ডিজিটাল প্রযুক্তি বলে মনে হয়েছে। ৮৭ সালের ২৮ এপ্রিল কম্পিউটারের বোতাম ছুঁয়ে যে নতুন জগতে পা রেখেছিলাম তার সর্বশেষ পরশ এই ৫জিতে। সেই বছরই গিয়েছিলাম জাপানে-জাপান আইটি উইকে। সেদিন মনে হয়েছিল, সেটি যেন বার্সিলোনার পরের সিঁড়ি। এটি খুব স্পষ্ট করে বলা দরকার যে, এই দুটি সফর তো বটেই ১৯ সালে আবারও মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে যোগদান বা সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় উইসিস ফোরামে চেয়ারম্যান হবার কোন ঘটনাই ঘটত না যদি ১৮ সালের ২ জানুয়ারি থেকে আমি সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন না করতাম। মাঝখানে এক মাসের বিরতি দিয়ে আমার পছন্দের বিষয় ডিজিটাল রূপান্তর নিয়ে এপ্রিল ২০১৯ পর্যন্ত আমার চারটি ভ্রমণের বিষয়গুলো নিজের চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে যুক্ত বলে এর কাহিনীগুলো লিখে রাখা দরকার বলেই মনে করছি। আমার নিজের কাছে মনে হয়, এই চারটি ভ্রমণের সঙ্গে যদি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের অভিজ্ঞতাটা যুক্ত করতে পারতাম তবে লেখাটি একদমই পরিপূর্ণ হতে পারত। ১৯ সালের জুলাইতে চীনে যাবোস সামার হবার কথা। আমন্ত্রণও পেলাম। দেখা যাক, যোগ দিতে পারলে সেই অভিজ্ঞতাটাও এর সঙ্গে যুক্ত করে দিতে পারি। যৌবনকাল থেকে বিপ্লবী শব্দটির সঙ্গে আমি বেশ পরিচিত। বলতে পারেন পছন্দেরও শব্দ। এক সময়ে যারা মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ-মাও সেতুংয়ের চিন্তাধারায় ভাবতেন, যারা হো চি মিন বা চে গুয়েভারাকে নায়ক বলে মনে করতেন কিংবা গেরিলা হবেন বলে রেজিস দেবরের বই পড়তেন, তারা কখনও কখনও বিপ্লবী নামে অভিহিত হতেন। সেই বিপ্লব মানে ছিল সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, পুঁজিবাদের পতন ঘটানো বা সাম্যবাদের জন্য লড়াই করা। কার্লমার্ক্সের তত্ত্ব নিয়ে এর বিস্তৃতি ঘটেছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবে মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ বা মাও সেতুংয়ের চিন্তাভাবনাকে বিশ্বজুড়ে বিপ্লব বলে আখ্যা দেয়া হতো। রাশিয়ায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে লেনিন বিপ্লবের প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এর পরের দৃষ্টান্ত চীনের এবং মাও সেতুং সেই বিপ্লবের নায়ক। সেই সূত্রে বিপ্লব মানে বিদ্রোহ, গেরিলা যুদ্ধ, আমূল পরিবর্তন, বিচ্ছিন্নতাবাদী বা স্বাধীনতার আন্দোলন। কাতালুনিয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী বা স্বাধীনতার আন্দোলন করছে বিধায় তাদেরকে সাধারণ অর্থে বিপ্লবী বলাই যেত। কিন্তু তাদের স্বাধীনতার লড়াই এর ইতিহাস আমাদের মতো স্বাধীনতার লড়াইকারীদের জন্য তেমন জুৎসই মনে হয়। মিটিং নেই, মিছিল নেই, গুলি নেই বারুদ নেই রক্ত, যুদ্ধ আর অস্ত্র নেই এসবকে কি আর স্বাধীনতার লড়াই বলা যায়। স্বাধীনতাকামী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী কাতালুনিয়া সম্পর্কে খুব সহজেই ইন্টারনেটে যেসব তথ্য পাওয়া যায় তাতে বোঝা যায় যে প্রচলিত ধারার বিপ্লবে তাদের তেমন খুব একটা আগ্রহ নেই। উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, একটি বিতর্কিত নির্বাচন পদ্ধতি স্বাধীনতার গণভোট অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর। স্পেনের সাংবিধানিক আদালত ১৯৭৮ সালের সংবিধান লঙ্ঘন করার দায়ে গণভোট বাতিল করে দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ২৭ অক্টোবর ১৭ প্রতীকী স্বাধীনতা ঘোষণা করে কাতালুনিয়ার সংসদ। এর পরপরই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে স্পেনের কেন্দ্রীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়। কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বিদেশ পালিয়ে যান ও অনেক নেতা জেলে ঢুকেন। ১৫ মে ২০১৮ কুইম টোরা কাতালুনিয়ার ১৩১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অভিনন্দন কাতালুনিয়াকে যে তারা ডিজিটাল বিপ্লবের পথ ধরেছে। সচরাচর ক্ষমতাসীন সরকার/আধিপত্যবাদী/দখলদার বা ঔপনিবেশবাদীরা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন বা স্বাধীনতাকামী যুদ্ধকে দমন করে থাকে। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে এইসব দৃষ্টান্তের কমতি নেই। তবে কাতালুনিয়ায় ওরা যে বিপ্লবের স্লোগান দিয়েছে সেটিকে প্রচলিত ধারার বিপ্লবের মতো ব্যাখ্যা করা যাবে না। কারণ, ওরা সমাজতান্ত্রিক বা স্বাধীনতার বিপ্লবের কথা নয়, ডিজিটাল বিপ্লবের কথা বলছে। তাদের কোন কার্ল মার্ক্স, লেনিন, মাও সে তুং বা হোচি মিন নেই। তাদের নেই স্বাধীনতার প্রতিজ্ঞা বা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার। তাদের একটা বঙ্গবন্ধু থাকলেও কথা ছিল। কিন্তু মোবাইল বিশ্ব কংগ্রেস তাদেরকে এটি বোঝাতে পেরেছে যে, দুনিয়ায় অন্যরকম একটা বিপ্লব সংঘটিত হয়ে যাচ্ছে। সেই বিপ্লব মার্ক্সবাদী সমাজতান্ত্রিক নয়, তবে দুনিয়া বদলে দেবার মতো একটি বিপ্লবতো বটেই। কাতালুনিয়ানদের জন্য এই বিপ্লবী হবার ঘোষণা দানে অন্তত এটি বোঝা গেল যে- তাদের মাথায় এখন একটি আলাদা দেশ হবার চাইতে ডিজিটাল বিপ্লব করাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বহমান জীবনে ডিজিটাল প্রযুক্তির আসন্ন প্রভাবকে স্বাগত জানাতে পারার এই সক্ষমতাকে আমি অবশ্যই ইতিবাচক হিসেবে দেখি। মানবসভ্যতার বিকাশে মার্ক্সবাদের মূল লক্ষ্যকে সামনে রাখলে এটি ভাবা একদমই বেঠিক হবে না যে, সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা, জনগণের জীবনমান উন্নত করা, দারিদ্র্য দূর করা বা সমতা আনার কাজটি করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ডিজিটাল বিপ্লবীরা দুনিয়াটাকে বদলাতেই পারে। আমি নিজে সমতায় বিশ্বাস করি। যদিও এটি মনে করি যে, মার্ক্সকে এই যুগের বিপ্লবী তত্ত্বের গুরু মনে করা যাবে না। মার্ক্সের সমাজতন্ত্র সরাসরি চতুর্থ বিপ্লবের উপযোগী নয় বরং মার্ক্স প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের শিল্প বিপ্লবের জন্য লাগসই ছিলো। বরং বলা যায়, সমতার ধারণাটিকে বাস্তবে প্রয়োগ করতে হলে মার্ক্সের সমাজতন্ত্র, তার আগের বিশ্ব, শিল্প বিপ্লব ও তার চতুর্থ স্তরকে অনুধাবন করতে হবে। অবশ্য, আমি কোনভাবেই এটি মনে করি না যে- প্রচলিত ধারার সমাজতন্ত্র বা তার প্রতিষ্ঠা কাতালুনিয়ার বিপ্লবীদের মূল ধারণা। বরং তারা ডিজিটাল বিপ্লব বলতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সংঘটনের কথাই বলছে। নিজেদের ডিজিটাল বিপ্লবের সৈনিক ভাবতে পারাটা গৌরবেরই মনে হতে পারে। মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস বাছাই করে কাতালুনিয়া অবশ্যই একটি সঠিক কাজ করেছে। ১৯ সালেই প্রথম কাতালুনিয়া নিজেকে ডিজিটাল বিপ্লবীদের দেশ হিসেবে অভিধা প্রদান করল। শব্দটি আমার পছন্দ হয়েছে। ইউরোপের অতি সুন্দর দেশ স্পেনের একটি প্রদেশের নাম কাতালুনিয়া। বাংলাদেশের প্রায় হাজার পনেরো মানুষ থাকে কাতালুনিয়াতে। স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদেও আছে হাজার দশেক বাঙালী। তবে মাদ্রিদ নয়, কাতালুনিয়া প্রদেশের রাজধানী বার্সিলোনা এখন বিশ্বের মোবাইল প্রযুক্তি প্রদর্শনের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। সারা বিশ্ব অবশ্য বার্সিলোনা ফুটবল ক্লাব বা লিওনেল মেসির জন্য শহরটিকে বেশি চেনে। আমার নিজের হিসেবে সব কিছু ছাপিয়ে দেশটি এখন ফুটবল ক্লাব, মেসি আর ডিজিটাল বিপ্লবের জন্যই বেশি পরিচিত। গত প্রায় এক যুগ ধরে মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস নামক একটি প্রদর্শনীর আয়োজন হয়ে থাকে এই শহরটাতে। চারদিনের এই আয়োজনে সারা দুনিয়া থেকে প্রায় তিন লাখ মানুষ এতে অংশ নেয়। বিশ্বের এমন কোন প্রখ্যাত ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নেই যারা এখানে তাদের সর্বশেষ পণ্য প্রদর্শন করে না। বাংলাদেশের উপস্থিতি এখানে খুবই কম। একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেয়। সরকারের টেলিকম বিভাগ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় এবং কিছু বেসরকারী আইটি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। ৮০-৯০টি দেশের প্রযুক্তি মন্ত্রীরা, শত শত মোবাইল অপারেটর, নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষ এতে যোগ দিয়ে থাকেন। আমি এই আয়োজনের সাক্ষী হচ্ছি ২০১৮ সাল থেকে। দুবার অংশগ্রহণেই আমার কাছে এটি মনে হয়েছে যে- স্পেনের বিদ্রোহী প্রদেশ বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের বিপ্লবী না হয়ে ডিজিটাল বিপ্লবী হতে পারাটা একটি অসাধারণ ভাবনা। বিদ্যমান অবস্থাতে এই কথাটি সহজেই বলা যায় যে, দুনিয়ার কেউ চাইল বা না চাইল ডিজিটাল বিপ্লবী তাকে হতে হবেই। বাংলাদেশকে তো হতেই হবে- কারণ সারা বিশ্বকে ডিজিটাল বিপ্লবের প্রথম বাণী শুনিয়েছে বাংলাদেশ। দুনিয়ার আর কার জন্য কি তা না বললেও একটি কৃষিভিত্তিক দেশকে ডিজিটাল বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে গেলে সকল বাঙালীকেই ডিজিটাল বিপ্লবী হতেই হবে। কেবল কাতালুনিয়া নয়, সারা বিশ্বের ডিজিটাল বিপ্লবীদের কিছু কথা তুলে ধরার জন্য এই নিবন্ধটি লেখার আয়োজন করা হচ্ছে। এক সময়ে আকাশভ্রমণ আমার নেশা ছিল। ট্রাভেল এজেন্সি হওয়ার সুবাদে সারা দুনিয়া ঘোরার ফ্রি টিকেট পেতাম- ঘুরতামও সেই তালেই। কিন্তু ট্রাভেল ব্যবসা ছেড়ে কম্পিউটারের ব্যবসায় এসে দেশ বিদেশ ঘোরার নেশাটা উধাও হয়ে গেছে। আশপাশে ছোটখাটো ভ্রমণ করলেও লম্বা ফ্লাইটের নাম শুনলেই আমি পিছুটান দিই। আগেও এমনটাই করতাম। ’৯৭ সালে আমেরিকা গেলাম। কেবল সানফ্রান্সিসকো শহর আর লাসভেগাস থেকে বিরক্ত হয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশে ফিরলাম। ২০০৯ সালে বিসিএস-এর সভাপতি হিসেবে কোরিয়া গেলাম একবার। সেবারও সিডিউলের আগেই চলে আসলাম। ব্যবসার কাজে কোরিয়ায় অবশ্য এর আগে ৯০ দশকে আরও একবার গিয়েছিলাম। কখন ভ্রমণের সময় কমাইনি। ব্রিটেনে গেছি যখন, তখন ইউরোপের অন্য দেশেও গেছি। মাঝখানে একবার তাইওয়ান গেছি এ্যাপিক্টার সম্মেলনে। শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও হংকংতো গেছি বহুবার। আফ্রিকা মহাদেশে যাইনি। বিদেশ সফরের দীর্ঘতমটি সৌদি আরবেই। মাসের বেশি সময় ছিলাম। প্রতি রাতে ওমরা করতাম। এবার দক্ষিণ আফ্রিকা যাবার কথা ছিল। কিন্তু স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য যেতে পারিনি। ফিলিপিন্স গেছি একবার। সেটাও সরকারী সফরে। অস্ট্রেলিয়া যাবার আমন্ত্রণ গ্রহণই করিনি। ভারত, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এসব দেশেই বেশি ঘোরাফেরা করেছি। ’৭৫ সালে জীবনের দ্বিতীয় পেশা হিসেবে ট্রাভেল এজেন্সিকে বেছে নিয়েছিলাম তখনই আকাশযাত্রার একটি বাড়তি আকর্ষণ ছিল। কিন্তু দিনে দিনে সেটি হারিয়ে গেছে। এখন আকাশে উড়তে ইচ্ছাই হয় না। দেশের ভেতরেও একটু বেশি সময় লাগলেও সম্ভাব্য ক্ষেত্রে আমি আকাশপথ এড়িয়ে সড়ক বা রেলপথে চলি। স্মরণ করতে পারি, রেলপথের দীর্ঘ যাত্রাটি সম্ভবত জার্মানিতে। ’৭৯ সালে একবার ফ্রাঙ্কফুর্ট সড়কপথে এবং মিউনিক থেকে ফ্রাঙ্কফুর্ট ট্রেনে এসেছিলাম। ২০০৫ সালে সিবিট মেলায় অংশ নিতে ফ্রাঙ্কফুর্ট হয়ে ট্রেনে চড়ে হ্যানোভার গিয়েছিলাম। হ্যানোভার থেকে প্লেনে না এসে বাসে এসেছিলাম লন্ডন। ২০১৮ সালেই রাষ্ট্রীয় কাজে একবার জাপানও গিয়েছিলাম। এক বছরে এমন দুটি লম্বা সফর এর আগে খুব সাম্প্রতিককালে আমি করিনি। ১৮ সালের অভিজ্ঞতায় এবারতো নিজেই উদ্যোগী হয়ে মোবাইল বিশ্ব কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ফিরলাম। এরপর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় তথ্যসমাজ সামিটে যোগ দিয়েছি। কথা ছিল মে মাসের প্রথম দিকে জাপান আইটি উইকে যাব। কিন্তু সেটি হবে না। চীনেও যাবার কথা ছিল মে মাসে। কিন্তু মে মাসে চীনে যাব না। আশা করি, জুলাই মাসে চীনের বিশ্ব অর্থনৈতিক কংগ্রেসে যোগ দেব। সকল ভ্রমণের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ১৮ সালের পর যে কটি ভ্রমণ করেছি তা একদিকে আমাকে নিজেকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ করেছে অন্যদিকে বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরে অসাধারণ সহযোগিতা করছে। বিশেষ করে সারা পৃথিবীর অভিজ্ঞতা, ভুলভ্রান্তি, নীতি ও কর্মপন্থার সঙ্গে আমরা আমাদের পথচলাকে মিলিয়ে নিতে পারায় ভুলত্রুটি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়ে চলছে। (চলবে) ঢাকা, ২৯ জুলাই ১৮ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান-সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যার-এর জনক
×