ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে গৃহবধূ হত্যার পরিকল্পনাকারী ধরাছোঁয়ার বাইরে

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ৬ মে ২০১৯

 যশোরে গৃহবধূ হত্যার  পরিকল্পনাকারী  ধরাছোঁয়ার বাইরে

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বাঘারপাড়ার পান্তাপাড়া গ্রামে গৃহবধূ জিনিয়া ইয়াসমিন তুলি হত্যায় তার দেবর শাহাবুদ্দিন আটক হলেও পরিকল্পনাকারী স্বামী জুলফিকার, শাশুড়ি ফরিদা ও ননদ সুরাইয়াকে আটক করা হচ্ছে না। উল্টো জুলফিকার তুলির বাবা-মাকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে বলে রবিবার যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তুলির বাবা শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২০১১ সালে ৮ জুলাই বাঘারপাড়া উপজেলার পান্তাপাড়া গ্রামের জুলফিকারের সঙ্গে তার মেয়ে তুলির বিয়ে হয়। জুলফিকার বর্তমানে ঢাকায় বিমানবাহিনীতে কর্পোরাল হিসেবে কর্মরত। জুলফিকারের পিতা একজন ভ্যানচালক ছিলেন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে তার মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। মেয়েকে সুখে রাখতে তিনি সাড়ে তিন লাখ টাকাসহ আসবাবপত্র দেন। ২০১২ সালে বিয়ের তথ্য গোপন রেখে জুলফিকার বিমানবাহিনীতে চাকরি নেয়। চাকরির সময়ও তিনি বড় অঙ্কের টাকা দেন তাকে। চাকরি পাওয়ার পর জুলফিকার তার মেয়েকে নিয়ে ঢাকার বালুঘাটে ভাড়া থাকত। তাদের সংসারে দুই ছেলে সন্তান হয়। জুলফিকার গোপনে আরও একটি বিয়ে করে। এরপর তার মেয়ের ওপর অত্যাচার শুরু হয়। একপর্যায়ে কৌশলে জুলফিকার তার মেয়েকে গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। জুলফিকারের নির্দেশে তার ভাই শাহাবুদ্দিন, মা ফরিদা ও ছোট বোন সুরাইয়া তার মেয়ের ওপর অত্যাচার শুরু করে। ১২ এপ্রিল মেয়েকে চরম মারধর করলে তিনি মেয়ে ও তার ছোট ছেলেকে নিজের বাড়িতে আনেন। ১৩ এপ্রিল তুলির শ্বশুর বাড়ি থেকে খবর দেয়া হয় তার বড় ছেলে খুবই অসুস্থ। শহিদুল খবর পেয়ে ওই দিনই মেয়েকে নিয়ে পান্তাপাড়া যান। ওই দিন রাতে বিদ্যুত ছিল না। জুলফিকার ফোনে তার মার সঙ্গে কথা বলছিল। এরপর তার মেয়েকে কৌশলে তার শাশুড়ি অন্য ঘরের ডেকে দরজা আটকে দেয়। ঘরের ভেতরে জুলফিকারের ছোট ভাই শাহাবুদ্দিন তার মেয়েকে কোপাতে থাকে। তুলির পিঠে ৯টি, পেটে ২টিসহ অন্যান্য স্থানে ১৪টি কোপ দেয়া হয়। মেয়ের চিৎকারের প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তাদের সহযোগিতায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালে তার মৃত্যু হয়। মেয়ের মৃত্যুতে তিনি জুলফিকার, তার ভাই শাহাবুদ্দিন, মা ফরিদা ও বোন সুরাইয়ার নামে মামলা করেছেন। কিন্তু পুলিশ শুধু শাহাবুদ্দিনকে আটক করেছে। অন্য আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। উল্টো তার পরিবারকে জুলফিকার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তুলির মা ছকিনা বেগম, বড় ভাই নূর মোহাম্মদ, ছোট ভাই নূর আলম, চাচাতো ভাই শরিফুল ইসলাম ও মামী সালমা বেগম।
×