ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফণী দুর্বল হয়ে আসায় ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি ॥ ত্রাণ সচিব

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ৫ মে ২০১৯

ফণী দুর্বল হয়ে আসায় ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি ॥ ত্রাণ সচিব

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে বাংলাদেশে চারজন নিহত হয়েছেন এবং ৭৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ শাহ কামাল। তিনি বলেন, দুর্বল হয়ে বাংলাদেশে আসায় এতে খুব একটা ক্ষতি হয়নি। ফসল ও গবাদিপশুর তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সচিব এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, তথ্য সচিব মোঃ আব্দুল মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম, কৃষি সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান, আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল বলেন, মৃত লোকের সংখ্যা হলো চার। এর মধ্যে বরগুনায় দুজন, ভোলায় একজন এবং নোয়াখালীতে একজন। আহতের সংখ্যা ৬৩। তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম সাড়ে ১২ লাখ লোক আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছি। এটা বর্তমানে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৪১৭। শাহ কামাল বলেন, আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমাদের খুব একটা ক্ষতি হয়নি। ফসল ও গবাদিপশুর তেমন ক্ষতি হয়নি। এটা আমাদের প্রাথমিক এ্যাসেসমেন্ট, যেটা আমরা জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছ থেকে সংগ্রহ করেছি। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, উপকূলীয় জেলাগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুত আছে। আমাদের খাদ্যের কোন সঙ্কট নেই। আমাদের এখন প্রয়োজন দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আল্লাহ আমাদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছেন। আমরা আনন্দিত যে, আমরা যে শঙ্কায় ছিলাম সেই শঙ্কা কাটিয়ে ভাল অবস্থানে আছি। তেমন উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি কোথাও হয়নি বলে জেনেছি। তিনি বলেন, যারা মারা গেছেন, তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে, উপকূলের একটি লোকও যাতে নিরাপদ আশ্রয়ের বাইরে না থাকে। যারা মারা গেছেন তাদের দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। আহতদের চিকিৎসায় মেডিক্যাল টিম আছে। সিভিল সার্জনরা এটা মনিটরিং করছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্ষতি যেটা হয়ছে, আমরা দেখেছি, টিনগুলো উড়ে গেছে। আমরা দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে যেখানে যে পরিমাণ টিনের দরকার তা সরবরাহ করব। এনামুর রহমান বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পুরো বিবরণ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের কাছে আসবে। সে অনুযায়ী প্রত্যেক মন্ত্রণালয় তাদের পুনর্বাসনের জন্য দায়িত্ব নেবে। ক্ষয়ক্ষতি যেভাবে এ্যাসেস (নির্ধারণ) করা হবে সেই এ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য সাহায্য করবে। শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত সামর্থবান সরকার, ধনী সরকার। অর্থের কোন কমতি নেই। যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য আমাদের সামর্থ্য যথেষ্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে, আমরা আমাদের সামর্থ্য দিয়ে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে পারব। ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবেলায় সামর্থ্য বাড়ানোর চেষ্টাও করব। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন, ঘূর্ণিঝড় সামনে রেখে আমাদের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ। রবিবার থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সকল স্তরের লোকজন সম্পৃক্ত হয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতির বিশাল কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করে। সবার মধ্যে যে সমন্বয় ছিল সেটা প্রশংসনীয়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কিছু ক্ষয়ক্ষতি তো হবেই। এগুলোর এ্যাসেসমেন্ট আমাদের ডিপার্টমেন্টগুলো যাতে সঠিকভাবে করে, পরিসংখ্যানের মধ্যে যাতে কোন ঘাটতি না থাকে, এটা শীঘ্রই সবাই যাতে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়, সেটা আমরা সবাইকে অনুরোধ করব। মুখ্য সচিব বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি যে, আমাদের ওপর আল্লাহর রহমত ছিল। আমাদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ছিল, সেটা সফল হয়েছে।
×