ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোজার আগের ছুটির দিন বাজারে উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ১০:৩২, ৪ মে ২০১৯

 রোজার আগের ছুটির দিন বাজারে উপচেপড়া ভিড়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দরজায় কড়া নাড়ছে রোজা। এ কারণে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। ভোক্তাদের ছোলা, পেঁয়াজ, মশুর ডাল, ব্যাসন, ভোজ্যতেল, চিনি, শাক-সবজি ও মাছ-মাংস বেশি কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। অনেকে আবার ফলের বাজার থেকে খেজুর সংগ্রহের পাশাপাশি মুড়ি, চিড়া এবং গুড় কিনেছেন। সোম অথবা মঙ্গলবার (চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করছে) থেকে শুরু হওয়া রোজার আগের ছুটির দিন তাই জমজমাট ছিল বাজার। ব্যবসায়ীরা ও বেশি পরিমাণে পণ্যসামগ্রী বিক্রির জন্য মজুদ রেখেছেন। তবে আলোচিত ঘূর্ণিঝর ফণীর প্রভাব পড়েছে বাজারে। শাক-সবজির দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া অনেক ক্রেতা ঘূর্ণিঝড় ফণী ও রোজার বিষয়টি মাথায় রেখে বেশি পরিমাণে খাদ্যপণ্য কেনাকাটা করেছেন। ফলে চিনি, রসুনসহ সবজির দাম বেড়ে গেছে। যদিও চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা ও মশুর ডালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, কাপ্তান বাজার এবং যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর বেশ প্রভাব পড়েছে বাজারে। ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় দক্ষিণ বঙ্গ থেকে সবজিবাহী ট্রাকগুলো সময়মতো রাজধানীতে আসতে পারছে না। এছাড়া ফণীর প্রভাবে সবজি খেত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, বহু এলাকা ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে। বোরোর বাম্পার ফলন হলেও সেই ধান ঠিকমতো কৃষক ঘরে তুলতে পারবেন কি না তা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই বাস্তবতায় আর দু’একদিন পর থেকে শুরু হচ্ছে রোজা। এ প্রসঙ্গে কাপ্তান বাজারের ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ী কিশোরগঞ্জ স্টোরের ম্যানেজার সাইফুল সুমন জনকণ্ঠকে বলেন, রোজায় এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এবার বাড়তি যোগ হয়েছে ফণী। দ্রব্যমূল্য নিয়ে ভোক্তাদের অস্থিরতা রয়েছে। বিশেষ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জিনিসপত্রের দাম কিছুটা চড়া। অন্যদিকে ফণীর প্রভাবে অনেকে দাম বাড়ার ভয়ে বেশি পরিমাণে পণ্যসামগ্রী কিনে রাখছেন। ফলে বাজারে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, রোজা সামনে রেখে সব ধরনের মুদিপণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। মশুর ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের মতো পণ্যের বিক্রি বেড়ে গেছে। এদিকে, রোজা সামনে রেখে বেড়ে গেছে চিনির দাম। মানভেদে প্রতিকেজি চিনি ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রসুনের দাম বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১২০ টাকায়। এছাড়া পেঁয়াজ ২৫-৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। প্রতিকেজি ছোলা ৭০-৯০, মশুর ডাল ৫৫-১২০, আটা ২৭-৩৬, ভোজ্যতেল সয়াবিন প্রতিলিটার ৭৮-৮৪, পামওয়েল ৬০-৬৫ এবং সুপার পামওয়েল ৬৬-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে প্রতিলিটার। চিনি ও মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের কিছুটা অসন্তুষ্টি রয়েছে। কাপ্তান বাজারের ক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর রোজা সামনে রেখে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে রোজা শুরু হলেই চিনির দাম বেড়ে যায়। এটা হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, দেশে বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রী মজুদের খবর পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে চিনির দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারী সংস্থাগুলোর বাজার মনিটরিং জোরদার করা প্রয়োজন। এদিকে, বাজারে মাছ-মাংসের দাম কিছুটা চড়া। ব্যবসায়ীরা বলছেন রোজা সামনে রেখে মাছ মাংসের দাম কিছুটা বেড়েছে। বিশেষ করে দেশী জাতের মাছের দাম সবচেয়ে বেশি। প্রতিকেজি চিংড়ি মানভেদে ৬০০-১৫০০, রুই ৩৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ৫৫০-৬০০ টাকা এবং খাসি ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
×