ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-লাওস দু’দলই চ্যাম্পিয়ন

প্রকাশিত: ১০:০৮, ৪ মে ২০১৯

 বাংলাদেশ-লাওস দু’দলই  চ্যাম্পিয়ন

রুমেল খান ॥ প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের ধ্বনি। শনিতে এলো ফণী। আর সে কারণেই শেষ হলো না প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘বঙ্গমাতা অনুর্ধ-১৯ নারী আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ’ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা। শেষ হবে কি, শুক্রবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ফাইনাল তো শুরুই হয়নি। যদিও সকাল থেকেই থেমে থেমে কয়েকদফা হাল্কা বৃষ্টি হয়েছিল। অথচ মাঠ কিন্তু খেলার উপযোগীই করে রেখেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তারপরও ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে হাজার চারেক দর্শককে হতাশ হয়েই ঘরে ফিরে যেতে হয়। তবে তার আগেই তারা জেনে যান বাংলাদেশ-লাওস দু’দলকেই যুগ্মচ্যাম্পিয়ন ঘোষণার বিষয়টি। আসলে সারাদেশের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কথা চিন্তা করেই ফাইনাল ম্যাচটি বাতিল করে টুর্নামেন্ট কমিটি এবং স্থানীয় আয়োজক কমিটি ও পরে এই দুই দলকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে আনুষ্ঠানিকভাবে। আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি এই ঘোষণা দেন। তিনি জানান, ফিফা-এএফসির নিয়ম মেনে সর্বসম্মতিক্রমেই নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। পরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাফুফে ফাইনাল খেলাটি বাতিল করায় ফুটবলপ্রেমীদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে। অনেক আশা নিয়েই দর্শকরা এসেছিলেন ফাইনাল ম্যাচটি উপভোগ করতে। অপেক্ষাও করেছিলেন অনেকক্ষণ। মাঠে লাওসের ফুটবলারদের ওয়ার্মআপ করতেও দেখা যায়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে মাঠে দু’দলের ফুটবলারদের না দেখে গ্যালারিতে ক্ষোভ-অসহিষ্ণুতা দেখা যায়। কারণ মাঠ তো খেলার উপযোগীই আছে। ততক্ষণে প্রেসবক্সে সাংবাদিকরা জেনে যান ম্যাচ হচ্ছে না, যুগ্মচ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে দুই দল। অথচ এর থেকেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতেও এই মাঠে অতীতে প্রচুর ম্যাচ হয়েছে। যাহোক, ম্যাচ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন সালাম মুর্শেদী প্রেসবক্সেই জরুরীভিত্তিতে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সস্মেলন ডেকে। তবে প্রতিপক্ষ দলের ম্যানেজার গ্যাল্ডানশাখের বিমর্ষ চেহারা দেখে বোঝাই গেছে এমন সিদ্ধান্তে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেননি। অবশ্য ভদ্রতার খাতিরে তিনি গণমাধ্যমকে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন বলে জানান। তবে জানিয়েছেন, মাঠ এবং আবহাওয়া উভয়ই খেলার জন্য সম্পূর্ণ উপযোগীই ছিল। টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য প্রাইজমানি নির্ধারিত ছিল ২৫ হাজার ডলার এবং রানার্সআপ দলের জন্য ১৫ হাজার ডলার। কিন্তু এখন যুগ্মচ্যাম্পিয়ন হওয়াতে দুই দলকে ২০ হাজার ডলার করে ভাগাভাগি করে নিতে হবে। যদিও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মাঠে থেকে বিজয়ী দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণের কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। অপর চ্যাম্পিয়ন লাওসকে আরেকটি সোনার ট্রফি তৈরি করে পরে পাঠিয়ে দেয়া হবে। ট্রফিটি তৈরি হবে লন্ডনে। এমনটাই জানিয়েছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। এছাড়া খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে আসা সব দর্শককে টিকেটের অর্থ ফেরত দেয়া হবে বলে জানিয়েছে বাফুফে। যেহেতু প্রায় সাতদিন আগে থেকেই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বিষয়টি জানাই ছিল ৩ মে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। তাহলে ম্যাচটা তো শুক্রবার দুই-তিন ঘণ্টা এগিয়েও আনতে পারতো বাফুফে। এর আগে একবার একই টুর্নামেন্ট একদিন পিছিয়ে ৪ তারিখে ফাইনাল করার সিদ্ধান্তও নিয়েছিল বাফুফে। তাহলে ৩ তারিখের ম্যাচটির কেন সময় পরিবর্তন করা হলো না। এ বিষয়টির কোন সদুত্তর দিতে পারেনি দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
×