ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাগরিক সুবিধা ইউনিয়নের মতো

প্রকাশিত: ০৯:০০, ৪ মে ২০১৯

  নাগরিক সুবিধা ইউনিয়নের মতো

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়া পৌর এলাকার শুধু আয়তনই বেড়েছে। বাড়েনি নাগরিক সুবিধা। বর্ধিত পৌর এলাকার পথঘাট, বাড়িঘর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার মতো। ইটভাঁটিও চোখে পড়বে। পুরনো পৌর এলাকা যে খুব ভাল তাও বলা যাবে না। মন্দের ভাল বলা যায়। অনেক রাস্তায় সামান্য বৃষ্টিতে পানি উপচে ওঠে। নোংরা পানি বদ্ধ হয়ে থাকে কয়েক দিন। কিছু রাস্তা এমনই এবড়োথেবড়ো যে রিক্সায় চলা খুবই কষ্টকর। কোমর ব্যথা হয়ে যায়। অনেক সময় বয়স্ক যাত্রী নিজের গরজেই ওই অংশটুকু রিক্সা থেকে নেমে হেঁটে যান। কলের গানের ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো এই কথাগুলো পৌর পিতার কানে পৌঁছানো হয়। পৌর পিতাও ওই ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো বলেন, বরাদ্দ নেই কাজ হবে কোত্থেকে। কাজের মধ্যে কাজ- মাঝে মধ্যে আধাআধিভাবে মেরামত। তারপর যে লাউ সেই কদু। মেরামতও টেকে না। কয়েকটি দৃশ্যপট ॥ শহর থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে অটোরিক্সায় কোন রোগী নেয়ার সময় কয়েকটি অসুখ আরও বেড়ে যায়। জটিল রোগী হলে হাসপাতালে জীবিত পৌঁছার কোন নিশ্চয়তা থাকে না। শহরের পাড়া-মহল্লার ফিডার রোডের দুরবস্থায় রিক্সায় কেউ যেতে চায় না। সরু সড়কের উভয় দিকের যানবাহন জড়ো হলে তো হয়েছে। সরু রাস্তার ধারে কোন বাড়িতে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস ঢুকতে পারে না। ভাবতে হয় কতদূর থেকে পানির ঝাপটা দেয়া যাবে। ভারি বৃষ্টিপাতে নিচু এলাকা ডুবে পানি ঢুকে পড়ে বাড়িতে। প্রথম শ্রেণীর বগুড়া পৌর এলাকা ২০০৪ সালে সম্প্রসারিত হয়ে প্রায় ৭০ বর্গকিলোমিটারে ঠেকেছে। পৌর সড়কের হিসাব- পাকা সড়ক ৪শ’৩৬ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার, ইটবিছানো ৮৮ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার এবং কাঁচাসড়ক ২শ’ ৮৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। সেদিনের ১২ ওয়ার্ড বর্তমানে ২১ টি। বর্ধিত পৌরসভার অবস্থা একেবারেই নাজুক। এখনও অর্ধেক এলাকায় মাটির রাস্তা। কোন স্থানে ইটবিছানো। মাটির রাস্তায় যানবাহনে ততটা ঝক্কি পোহাতে হয় না। ইটবিছানা আধো ভাঙ্গা রাস্তায় রিক্সা, অটোরিক্সা ও ব্যাটারি চালিত যান চলতে যাত্রীর অবস্থা কি হয় তা বুঝে নিন। কোন রাস্তার অংশবিশেষ জমির ভেতর দিয়ে। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সম্প্রসারণের আগে কিছু পথ ছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অধীনে। তখন যেটুকু কাজ হয়েছে। তারপর আর এগোয়নি। বর্তমানে পৌরসভার বাজেট খুবই কম। এমনিতেই পৌর এলাকার ড্রেনেজ সমস্যা প্রকট হয়ে আছে। তা সামলানো যাচ্ছে না। প্রতিবছর শীত মৌসুমে কিছু কাজের উদ্যোগ নেয়া হয়। বরাদ্দ মেলে না। বগুড়া পৌরসভার আয়তন বাড়ানোর সময় আয়তন উপযোগী নাগরিক সুবিধার কোন বরাদ্দ মেলেনি। যে কারণে বর্ধিত এলাকা এখনও গ্রামাঞ্চল। পৌরসভার দক্ষিণের সুজাবাদ এলাকায় এখনও ইটভাঁটি রয়েছে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী শহরের মধ্যে ইটভাঁটি নিষিদ্ধ। নগরায়নের শর্তের মধ্যে রয়েছে আয়তনের এক-চতুর্থাংশ সড়ক থাকবে। সেখানে এক-দশমাংশও নেই। এই অবস্থার মধ্যে দাবি উঠেছে সিটি কর্পোরেশনের। নগরবাসীর আশা- সিটি কর্পোরেশন হলে হয়ত দ্রুত বরাদ্দ মিলে নাগরিক সুবিধা পাওয়া যাবে।
×