ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সড়কে অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ মরা গাছ ॥ ঘটছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ০৮:৫২, ৪ মে ২০১৯

 সড়কে অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ  মরা গাছ ॥ ঘটছে দুর্ঘটনা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন সড়কের দুই ধারে অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ মরাগাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। কালবৈশাখী মৌসুমে পথচারীদের জন্য সড়কগুলো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। যে কোন মুহূর্তে গাছগুলো রাস্তার উপরে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে গাছগুলো মরে শুকনা থাকলেও গাছগুলো অপসারণ বা টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করার ব্যবস্থা করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মরে শুকনো থাকায় সামান্য ঝড়-বৃষ্টি হলেই ভেঙ্গে পড়ে রাস্তার ওপরে। ফলে ওই রাস্তায় চলাচলকারী পথচারীরা রয়েছে আতঙ্কে। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ওই সব নামী দামী গাছ। আর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। সূত্রে জানা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলকে মরুভূমির কবল থেকে বাঁচাতে ও সবুজ বনায়ন করতে আশির দশক থেকে পর্যায় ক্রমে বরেন্দ্র অঞ্চল বিভিন্ন সড়ক, খালের পাড় সরকারী খাস জায়গায় গাছ লাগানো শুধু করে সরকার। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর (এলজিএডিএ) ও পরিবেশ ও বন বিভাগ এসব গাছ রোপণ থেকে শুরু করে তদারকি করে আসছে। সম্প্রতি রাজশাহী তানোর-আমনুরা সড়ক। এবং মু-ুমালা-গোদাগাড়ীর রাস্তায় অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন যানবহনের ওপরে মরা গাছ পড়ার অহরহ খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল, রহনপুর, গোমস্তাপুর উপজেলা ও নওগাঁর নিয়ামতপুর, পোরশা, পতœীতলা উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুই ধারে শিশু, আম মেহগনি ও অনেক অচেনা গাছ দাঁড়িয়ে আছে ঝুঁকি হয়ে। তবে অন্য গাছগুলো দুই একটা মরলেও শতশত শিশুগাছ মরে গেছে। যা যে কোন সময় এসব মরা গাছ পথচারীর ওপরে ভেঙ্গে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন রাস্তায় নিয়মিত বাস চালায় এমন একাধিক চালক জানান, সামান্য ঝড় হলেই এসব রাস্তায় শত শত মরা গাছ উপড়ে বা ভেঙ্গে পড়ে থাকে। তখন গাড়ি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। রাস্তা ফাঁকা না হওয়া পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে রাতের অন্ধকারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসে থাকতে হয়। তারা আরও জানান, বৈশাখ-মাস থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত রাস্তায় ঝুঁকি থাকে বেশি। সে সময় সকল বাস-ট্রাকে ডাইভার-হেলপার নিজেই গাছ ভেঙ্গে পড়লে যেন কেটে পার হতে পারে সে জন্য তাদের কাছে, দা, কুড়াল, করাত ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে চলাচল করে থাকেন। তানোর উপজেলার বাধাইর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ গত বছর রাজশাহী থেকে আমনুরা আসার পথে তার বহন করা গাড়িতে মরা গাছে চাপা পড়েছিলেন। এসব রাস্তা মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাস্তার দু’পাশে শত শত উঁচু বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মরে শুকিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যা সামান্য বাতাস ও ঝড় হলেই গাছের ডালপালা ভেঙ্গে পড়ে আহত হচ্ছে পথচারীরা। এসব বিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম জানান, শুধু বিএমডিএ নয়, এলজিএডিএ ও বন বিভাগের গাছও রয়েছে। তবে বিএমডিএর কিছু গাছ মরা অবস্থায় আছে। এসব মরা গাছ নাম্বারিং, গণনার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এর পরে এলজিএডিএ ও বন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান তাদের আওতাই থাকা মরা গাছগুলো টেন্ডার দেবে বলে জানান তিনি।
×