ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৪ লাখ টাকায় ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে ছেড়ে দিল মাতবররা

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ৪ মে ২০১৯

 ৪ লাখ টাকায় ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে ছেড়ে  দিল মাতবররা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ৩ মে ॥ রানীনগরে রাতের আঁধারে এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণ চেষ্টাকারী বিষুকে ৪ লাখ টাকায় গ্রামের কতিপয় মাতবর ছেড়ে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের করজগ্রাম দোগাছী পাড়ায়। এ ব্যাপারে শুক্রবার থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ওই গ্রামের মৃত কাশেম শেখের ছেলে প্রবাসী ফেরদৌস শেখ বাবুর স্ত্রী ভুক্তভোগী লায়লা বানু (ছদ্ম নাম) বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমার স্বামী জীবিকার তাগিদে প্রায় ৫ বছর যাবত বিদেশে রয়েছে। আমার এক মেয়ে সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে আর একটি ছেলে মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ছে। দীর্ঘদিন যাবত একই গ্রামের হারান সরকারের ছেলে দুই সন্তানের জনক বিষু সরকার আমাকে কু-প্রস্তাব এবং নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এর আগেও সে আমার শ্লীতাহানির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আমার ছেলে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য ঘরের বাইরে গেলে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা বিষু সবার অজান্তে আমার শোবার ঘরে প্রবেশ করে। পরে ছেলে ও মেয়ে মাটির বাড়ির দোতলায় পড়ার জন্য উঠে গেলে বিষু অতর্কিত আমার মুখ ও দুই হাত চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় আমি তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে কৌশলে ঘরের বাইরে এসে দরজা বন্ধ করে চিৎকার করলে আশপাশের মানুষ ও গ্রামের কতিপয় মাতবর এসে সকালে বিচার হবে বলে তাকে ছেড়ে দেয়। সুবিচার পাওয়ার আশায় বিষয়টি আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই। কিন্তু বেশ ক’দিন পার হলেও আজ পর্যন্ত আমি কোন সুবিচার পাইনি। আজ-কাল বিচার হবে বলে চেয়ারম্যান ও মাতবররা কালক্ষেপণ করছেন। আমি লোক মারফত শুনতে পাচ্ছি যে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য গফুর, গ্রামের মাতবর জাহাঙ্গীর, হেলাল, জব্বার, ছাত্তারসহ আরও অনেকেই বিষয়টি আমার সঙ্গে আপোস করার নামে বিষুর পরিবারের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ আমার কাছে বিষয়টি আপোস করার জন্য আসেনি এবং কবে বিচার হবে সেই বিষয়েও কেউ কোন কিছু বলছে না। আমার শ্বশুর মারা গেছেন। বাড়িতে কোন পুরুষ লোক নেই। শুধুমাত্র রয়েছে আমার দুই সন্তান ও বয়স্ক শাশুড়ি। তারা যতই আমাকে হুমকি-ধমকি প্রদান করুক, আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। শুক্রবার স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মুঠোফোনে বলেন, গ্রামের মাতবররা বিষয়টি মিটমাট করেছে। এ বিষয়ে আমি আর মুখ খুলতে চাচ্ছি না।
×