ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইজিবাইক চালকের লালসার শিকার মাদ্রাসাছাত্রী

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ৩ মে ২০১৯

 ইজিবাইক চালকের লালসার শিকার মাদ্রাসাছাত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ২ এপ্রিল ॥ আইনী কড়াকড়ি ও অব্যাহত সামাজিক আন্দোলনের পরও শেরপুরে কমছে না নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা। বরং গত এক সপ্তাহে জেলার অপরাধচিত্রে বেড়েছে ধর্ষণের মতো পৈশাচিক ঘটনা। সর্বশেষ শ্রীবরদীতে এক লম্পট ইজিবাইক চালকের লালসার শিকার হয়েছে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসা ছাত্রী (১৩)। ধর্ষণের রক্তাক্ত ক্ষত নিয়ে দু’দিন যাবত ওই মাদ্রাসা ছাত্রী জেলা সদর হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালে তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় এখনও আদালতে তার জবানবন্দী গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে গত এক সপ্তাহে জেলায় ধর্ষণের ৫ মামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নারী, মানবাধিকার ও নাগরিক সংগঠনের নেতারা। জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার গোশাইপুর ইউনিয়নের শংকরঘোষ গ্রামের নওশেদ আলীর ছেলে, ২ সন্তানের জনক ইজিবাইক চালক উজ্জল মিয়া (৪০) স্থানীয় এ জুব্বার আলী দাখিল মাদ্রাসার ওই ছাত্রীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবারের লোকজন উজ্জল মিয়ার পরিবারের লোকজনকে জানালে ওই ছাত্রীর প্রতি বেড়ে যায় তার আক্রোশ। ওই অবস্থায় পরিবারের লোকজন বাড়িতে না থাকার সুযোগে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ইজিবাইক চালক উজ্জল মিয়া ওই বাড়িতে গিয়ে ছাত্রীটির মুখ চেপে ধরে এবং তাকে একটি ঘরে নিয়ে হাত ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। ঘটনার পরপরই উজ্জল পালিয়ে যায়। পরে নির্যাতিতা ছাত্রীকে প্রতিবেশীরা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওইদিন বিকেলে খবর পেয়ে ওই নির্যাতিতা মাদ্রাসা ছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যান পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএম। ওই সময় তিনি ঘটনার বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধর্ষিতার পরিবারকে আশ্বস্ত করেন। ওই ঘটনায় রাতে ধর্ষিতা মাদ্রাসা ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ৩ জনকে সহযোগী ও উজ্জল মিয়াকে প্রধান আসামি করে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি ধর্ষক উজ্জল মিয়া বা তার কোন সহযোগী। তবে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আসামি গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা হয়েছে। শারীরিক সুস্থতা ফিরে এলে আদালতে জবানবন্দী গ্রহণের ব্যবস্থা করা হবে। উল্লেখ্য, ওই মাদ্রাসা ছাত্রীসহ গত এক সপ্তাহে জেলায় কেবল ধর্ষণের ঘটনাতেই মামলা হয়েছে ৫টি। এর মধ্যে শ্রীবরদীতে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ধর্ষণ, ঝিনাইগাতীতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তরুণীকে গণধর্ষণ, নকলায় তৃতীয় শ্রেণী পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা ও ৮ম শ্রণী পড়ুয়া স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে। বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা স্থানীয়ভাবে আপোসরফা এবং নকলার ২ ঘটনায় ধর্ষক গ্রেফতার হলেও এখনও গ্রেফতার হয়নি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে গণধর্ষণের মামলার কোন আসামি। পুঠিয়ায় শিশু স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, পুঠিয়ায় ছয় বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ওই শিশুকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বেলপুকুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে এ ঘটনায় শিশুর মা বাদী হয়ে বেলপুকুর থানায় ইদ্রিস আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
×