ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, সেমিফাইনালের প্রথম লেগে আজ ;###;রাতে মুখোমুখি স্প্যানিশ ও ইংলিশ পরাশক্তি, মেসিকে ;###;রুখে দিতে আত্মবিশ্বাসী ভার্জিল ভন, ফাইনালের ;###;ছক কষছেন জার্গেন ক্লপ

ন্যুক্যাম্পে বার্সিলোনা-লিভারপুল মহারণ

প্রকাশিত: ১২:২২, ১ মে ২০১৯

ন্যুক্যাম্পে বার্সিলোনা-লিভারপুল মহারণ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের হাইভোল্টেজ সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সিলোনা ও ইংলিশ জায়ান্ট লিভারপুল। বার্সার মাঠ ন্যুক্যাম্পে শেষ চারের প্রথম লেগের এই ম্যাচটি মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায়। দু’টি দলই কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে শেষ চারে উঠে এসেছে। এখন শেষ দুই ধাপেও সাফল্য পেতে মরিয়া তারা। এক্ষেত্রে লড়াই হতে পারে লিওনেল মেসির সঙ্গে লিভারপুল ডিফেন্সের। ইংলিশ ক্লাবটির রক্ষণভাগের কা-ারি ভার্জিল ভন ডাইক যে কোন মূল্যে কাতালান অধিনায়ককে নিষ্ক্রিয় করার ঘোষণা দিয়েছেন। কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে স্বাগতিক পর্তুগীজ ক্লাব এফসি পোর্তোকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল লিভারপুল। আর প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ২-০ গোলে জিতেছিল জার্গেন ক্লপের দল। দুই লেগ মিলিয়ে তাই ৬-১ গোলের বিশাল জয় নিয়ে সেমির টিকেট নিশ্চিত করে লিভারপুল। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সেরা চারে উঠেছে দ্য রেডসরা। গত মৌসুমে ফাইনালেও উঠেছিল তারা। কিন্তু শিরোপা লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। দুই লেগ মিলিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে সেমিতে এসেছে বার্সিলোনা। এবার তিন মৌসুম পর শিরোপা পুনরুদ্ধার করাই তাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আপতত প্রধান বাধা লিভারপুল। ঘরের মাঠে তাদের বিরুদ্ধে জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামবেন মেসি-সুয়ারেজ-কুটিনহোরা। ২০০৬-০৭ মৌসুমে শেষ ষোলোর লড়াইয়ের পর এই প্রথম দুই ক্লাব মুখোমুখি হচ্ছে। সেবার লিভারপুল এ্যাওয়ে গোলের সুবাদে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। আর বিদায় নিতে হয়েছিল বার্সাকে। লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ ন্যুক্যাম্পে ডাগআউটে দাঁড়াতে যাচ্ছেন গৌরবময় রেকর্ড সঙ্গী করে। দ্য রেডসদের কোচ হওয়ার পর কোন ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার নকআউট পর্ব থেকে বাদ পড়েননি তিনি। বার্সার মুখোমুখি হওয়ার আগে এই রেকর্ড নিশ্চিত করেই আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে লিভারপুলকে। ফাইনালে গেলে ক্লপ জিততে পারেন না। এই ‘অভিযোগ’ বহু পুরনো। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল, ইউরোপা লীগের ফাইনাল, লিভারপুলের কোচ হিসেবে দুই ফাইনালেই হারের অভিজ্ঞতা আছে সাবেক বরুশিয়া ডর্টমুন্ড কোচের। কিন্তু ম্যাচের আগে ক্লপের এক রেকর্ড যেমন আশা দিচ্ছে লিভারপুলের সমর্থকদের, এই রেকর্ড দেখে বার্সিলোনার সমর্থকরাও যে একটু চিন্তায় নেই তা বলা যাচ্ছে না। কী সেই রেকর্ড? ফাইনালে হারলেও লিভারপুলের কোচ হওয়ার পর ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় ক্লপ কখনও ফাইনালের আগে বাদ পড়েননি। গৌরবের এই রেকর্ডের শুরু ২০১৬ সালের ইউরোপা লীগ থেকে। সেবার নকআউট রাউন্ডে দুই লেগের লড়াইয়ে একে একে জার্মান ক্লাব অগসবার্গ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়ালকে টপকে ফাইনালে উঠেছিল লিভারপুল। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে সেভিয়ার কাছে হেরে শিরোপা ছোঁয়া হয়ে ওঠেনি তাদের। একই কথা বলা যায় গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ক্ষেত্রেও। সেবার একে একে জার্মান ক্লাব হোফেনহেইম, পর্তুগীজ চ্যাম্পিয়ন পোর্তো, ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি, এএস রোমাকে টপকে ফাইনালে ওঠে দ্য রেডরা। কিন্তু সেবারও রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ফাইনালে হেরে শিরোপাস্বপ্ন বিলীন হয়। এবার আপাতত সেমিতে বার্সার বিরুদ্ধে ম্যাচ নিয়েই ভাবছেন ক্লপ। এদিকে বার্সিলোনা অধিনায়ক মেসির শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়েই তাকে আটকাতে আত্মবিশ্বাসী লিভারপুলের ডিফেন্ডার ভার্জিল ভন ডাইক। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্লাব পর্যায়ে ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতার ফাইনালে পা রাখতে সাধ্যের সবকিছুই করবেন বলে জানিয়েছেন ডাচ এই ফুটবলার। চলতি মৌসুমে ভন ডাইকের নেতৃত্বে দারুণ সাফল্য দেখিয়ে চলেছে লিভারপুলের রক্ষণভাগ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের চলতি আসরে ৩৬ ম্যাচের ১৯টিতেই কোন গোল হজম করেনি তারা। লীগে পুরো মৌসুমে এ পর্যন্ত লিভারপুলের জালে বল জড়িয়েছে মাত্র ২০ বার। দারুণ পারফর্মেন্সের স্বীকৃতি হিসেবে ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় ডিফেন্ডার হিসেবে ইংল্যান্ডের প্রফেশনাল ফুটবলার্স এ্যাসোসিয়েশনের (পিএফএ) বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ভন ডাইক। এর আগে ক্যারিয়ারে একবারই ন্যুক্যাম্পে খেলেছিলেন ভন ডাইক। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ওই ম্যাচে ৬-১ গোলের বড় হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল তার সেই সময়ের ক্লাব সেল্টিক। এবারে সেই স্মৃতি মুছে ফেলতে চান ২৭ বছর বয়সী এই সেন্টার ব্যাক। ভন ডাইক বলেন, আমি মনে করি মেসি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়, আমি এ কথা অতীতেও বলেছি। কিন্তু আপনারা দেখেছেন কিভাবে আমরা খেলি, কিভাবে আমরা রক্ষণ সামলাই, আমরা একজনের বিপরীতে একজন থাকি না, রক্ষণে সবাই মিলে অংশ নেই এবং সবাই মিলেই আক্রমণে উঠি। তাই আমরা দেখব কি ঘটে। আশা করি আমরা সফল হতে পারব।
×