ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই

প্রকাশিত: ১০:১৭, ১ মে ২০১৯

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর আয়োজনে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে দ্র্যব্যমূল্য সহনীয় ও পণ্যের গুণগতমান অক্ষুণœœ রাখা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি করেন ব্যবসায়ী নেতারা। মঙ্গলবার ঢাকা চেম্বার অডিটরিয়ামে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মোঃ মফিজুল ইসলাম। এ সময় স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, বিগত বছরগুলোয় পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিশেষ করে- ছোলা, চিনি, চাল, দুধ, ভোজ্যতেল, খেজুর, খেসারি প্রভৃতি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যানুযায়ী, এ বছর ২০১৯ এর মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু কিছু পণ্যের দাম ২৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এ মূল্যবৃদ্ধির মূলে প্রথাগত বাজার সরবরাহ প্রক্রিয়া, অতিরিক্ত মজুদকরণের মাধ্যমে বাজারে পণ্যদ্রব্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি, অপর্যাপ্ত ও সমন্বয়হীন বাজার মনিটরিং, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি, যানজট এবং অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয়ের মতো বিষয়সমূহ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর উচ্চ সুদের হার এবং ঋণপ্রাপ্তি সংশ্লিষ্ট জটিলতা প্রভৃতির কারণে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বেড়ে যায়। এ অবস্থা নিরসনে রমজানে আমদানি নির্ভর ভোগ্যপণ্য বন্দরে দ্রুত খালাসকরণ, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি ও যানজট নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণসহ দেশের সকল বাজারে নিয়মিত মূল তালিকা হালনাগাদ করার পরামর্শ দেন চেম্বার সভাপতি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য সচিব মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ী সমাজ দেশের জনসাধারণের খাদ্য সরবরাহ ও চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের বাজার ব্যবস্থা স্থিতিশীল না হওয়ার কারণে রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তিনি ব্যবসায়ীদের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি না করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি জানান, এ বছর রমজানে ব্যবহৃত প্রতিটি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, ফলে দাম বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নেই। কেউ যদি বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তাহলে সরকার তা কঠোরভাবে দমন করবে। তিনি সকলকে নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনার আহ্বান জানান। বাণিজ্য সচিব ভোক্তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য সামগ্রী কিনে মজুদ না করার প্রতিও গুরুত্ব দেন। মুক্ত আলোচনায় বিশেষায়িত ব্যবসায়ী সমিতি সমূহের নেতরা অংশ নেন। এ আলোচনায় পাইকারি পর্যায়ে পণ্যের মূল্য এবং খুচরা পর্যায়ে পণ্যের দামের অসঙ্গতিপূর্ণ ব্যবধান, পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত ব্যয়, চাঁদাবাজি ইত্যাদি সমস্যার কথা তারা তুলে ধরেন। সকল প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিবের মতামত ও আহ্বানের প্রতি তারা একাত্মতা জ্ঞাপন করেন। আলোচকরা পাইকারি ও খুচরা বাজারে মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের পর্যবেক্ষণের আওতায় নেয়ার আহ্বান জানান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ডিসিসিআই উর্ধতন সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, ডিসিসিআই সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ, পরিচালক আলহাজ দ্বীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, মোহাম্মদ বাশীর উদ্দিন এবং বিশেষায়িত ব্যবসায়ী সমিতিগুলোর প্রতিনিধিরা।
×