ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেয়ারবাজারে স্থিতি ফেরাতে প্লেসমেন্ট শেয়ার বাতিল হচ্ছে

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ৩০ এপ্রিল ২০১৯

শেয়ারবাজারে স্থিতি ফেরাতে প্লেসমেন্ট শেয়ার বাতিল হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে বিতর্কিত প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) পূর্ব প্লেসমেন্টে শেয়ার ইস্যু (ক্যাপিটাল রেইজিং) আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর ফলে প্লেসমেন্টে শেয়ার ইস্যু করা বন্ধ হবে। এছাড়া আইপিও পূর্ব সকল শেয়ারে ৩ বছর লক-ইন (বিক্রয় অযোগ্য) রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। সোমবার স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আয়োজিত এক জরুরী সভায় তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এতে ঢাকা স্টক একচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ, ঢাকা ব্রোকারেজ এ্যাসোসিয়েশন এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রবিবার শেয়ারবাজারের চলমান অবস্থা নিয়ে গণভবনে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিএসইসির কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। যেখানে শেয়ারবাজার নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই আলোকে আজকে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে জরুরী সভা করে বিএসইসি। সভায় গণভবনের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সভায় বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, প্লেসমেন্ট আইন বাতিল করা হবে। আগামীতে বিএসইসির অনুমোদন নিয়ে প্লেসমেন্টে কোন শেয়ার ইস্যু করার সুযোগ থাকবে না। একই সঙ্গে আইপিওকালীন সকল শেয়ারে ৩ বছর লক-ইন থাকবে। যা প্রসপেক্টাসের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রকাশের দিনের পরিবর্তে লেনদেন শুরুর দিন থেকে গণনা করা হবে। এছাড়া আইপিওতে ফিক্সড প্রাইস মেথডে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা ও বুক বিল্ডিং মেথডে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করতে হবে। তিনি জানান, শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা নিয়ে যে সমস্যা আছে, তা গণভবনে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি সমাধান করবেন বলে গবর্নর জানিয়েছেন। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। এক্ষেত্রে ফিক্সড প্রাইস মেথডে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ এবং বুক বিল্ডিং মেথডে ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করা হবে। এছাড়া শেয়ারবাজারে সক্রিয় নয় এমন ডিলার, প্রভিডেন্ট ফান্ড, মার্চেন্ট ব্যাংকস ইত্যাদিকে যোগ্য বিনিয়োগকারীর তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে। এদিকে বাজেটে লভ্যাংশের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর প্রত্যাহার, স্ট্যাম্প ডিউটি কমানোসহ কিছু প্রণোদনা থাকবে বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। উদ্যোক্তা/পরিচালকদের এককভাবে ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ নিয়ে কিছু করা যায় কি না, তা নিয়ে কমিশন চিন্তাভাবনা করছে বলে জানিয়েছেন খায়রুল হোসেন। ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বহুদিন পরে কমিশনের সঙ্গে আজকে একটি অর্থবহুল বৈঠক হয়েছে। চেয়ারম্যান শেয়ারবাজারের স্বার্থে সব কিছু করতে রাজি আছেন। তিনি শেয়ারবাজার নিয়ে আজকের বৈঠকে খুবই আন্তরিকতা দেখিয়েছেন। যিনি প্লেসমেন্টের বাণিজ্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করছি। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে জালিয়াতি বন্ধ হবে বলে যোগ করেন ইমন।
×