ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সেনাবাহিনী দুর্গম এলাকা থেকে জতনীকে কপ্টারে নিয়ে এলো সিএমএইচে

প্রকাশিত: ১০:৫২, ৩০ এপ্রিল ২০১৯

সেনাবাহিনী দুর্গম এলাকা থেকে জতনীকে কপ্টারে নিয়ে এলো সিএমএইচে

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ ভারত-মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম বগাখালী। দুর্গম এই গ্রামে খুব বেশি নাগরিক সুবিধার পৌঁছেনি। গ্রামটি রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। ওই গ্রাম থেকে হেঁটে ও নৌকায় জেলা সদরে আসতে সময় লাগে প্রায় ৩/৪ দিন। যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে একমাত্র নৌযোগাযোগই ভরসা। সড়কপথ নেই বললেই চলে। পাহাড়ের গা ঘেঁষে কিছু পথ থাকলেও সেই পথ দুর্গম। মারাত্মক এই দুর্গম পথে সহজে কোন মানুষ চলাচল করে না। জুরাছড়ি উপজেলার বগাখালী নামক সেই গ্রামের গরিব ও অসহায় ঈশ্বর চন্দ্র তনঞ্চংগ্যার স্ত্রী জতনী তনঞ্চংগ্যা গত চারদিন ধরে প্রসব বেদনায় ভুগছিলেন। মুমূর্ষু এই জতনীকে দ্রুত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন সেনাবাহিনী। চট্টগ্রাম সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমানের সার্বিক নির্দেশে জতনী তনঞ্চংগ্যাকে (৩৫) মুমূর্ষু অবস্থায় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক (সিএমএইচ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি প্রথম জতনীর স্বামী নিকটস্থ বিজিবি ক্যাম্পে জানান। পরে বিজিবি থেকে সেনাবাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করা হলে সেনাবাহিনী আবার বিমানবাহিনীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করে সোমবার দুপুর ২টার দিকে একটি হেলিকপ্টার যোগে জতনীকে চট্টগ্রাম সিএমএইচে ভর্তি করেছে। তবে ডাক্তাররা রোগীর অবস্থা জটিল বলে জানিয়েছে। তার ‘ডেলিভারি’ করাতে সিজার লাগতে পারে। উল্লেখ্য, একই গ্রামের সোনাপতি চাকমা নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তার উন্নত চিকিৎসা দেয়া হয়। শুধু সোনাপতিই নয়, তার মতো দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় বসবাসকারী অনেক মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বেঁচেছে সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল ভূমিকার কারণে। এদের মধ্যে রয়েছে পায়ে পচন ধরা বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সদস্য চাথুইমা মারমা, লক্ষ্মীছড়ি থানার পুলিশ কনস্টেবল মংজয় চাকমার নাম উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির দুরছড়ি এলাকায় ডায়রিয়া দেখা দিলে সেনা সদস্যদের মানবিক সহযোগিতা দিয়ে প্রায় ৩০টি পরিবারের সদস্যদের সুস্থ করে তোলেন। বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার- এই তিন দেশের সীমান্ত এলাকার নাম বগাখালী। রাঙ্গামাটি জেলা সদর থেকে ওই গ্রামে যেতে হলে প্রথমে ইঞ্জিনচালিত বোটে কিছু দূর যাওয়া যায়। এরপর হাঁটা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। দুর্গম পাহাড়ী চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বগাখালী যেতে হয়।
×