ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে প্রস্তাব পাস

সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন

প্রকাশিত: ১০:৫০, ৩০ এপ্রিল ২০১৯

সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন

সংসদ রিপোর্টার ॥ নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কায় জঙ্গী হামলা, ফেনীর নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাসহ সন্ত্রাসী যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল সংসদ, সরকার ও নাগকিরদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আনীত একটি সাধারণ প্রস্তাব সোমবার জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। এ বিষয়ে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্যরা বলেছেন, ধর্মের নামে পুরো বিশ্বে রক্তের হোলিখেলা চলছে। বাংলাদেশেও নুসরাতসহ নানা সামাজিক অবক্ষয় ঘটিয়ে সরকারের ব্যাপক অর্জনকে ম্লান করার ষড়যন্ত্র চলছে। কঠোর আইন করে জঙ্গীসহ যৌন নিপীড়ক ও সামাজিক অবক্ষয়ের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিসহ কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে এসব বন্ধ হবে না। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টাচার্চের মসজিদ, শ্রীলঙ্কার গীর্জা ও হোটেলে সন্ত্রাসী হামলা, ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ এবং এ সকল সন্ত্রাসী যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল সংসদ, সরকার ও নাগরিকদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের আনীত সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। ১৪৪ (১) বিধিতে আনীত প্রস্তাবে বলা হয়- ’বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ ও শ্রীলঙ্কার গীর্জা, হোটেলে সন্ত্রাসী হামলায় সংসদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির নাতি জায়ান চৌধুরীসহ বিপুলসংখ্যক মানুষকে হত্যা ও আহত করা এবং ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে যৌন নিপীড়ন ও পুড়িয়ে মারার ঘটনায় গভীর ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে এবং এ সকল সন্ত্রাসী যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশের সংসদ, সরকার ও নাগরিকদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।’ প্রথমে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া এবং পরে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় তোফায়েল আহমেদ ছাড়াও অংশ নেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল, শিরীন আকতার, সরকারী দলের মেহের আফরোজ চুমকি, এ্যারোমা দত্ত, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ, গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চীফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙা, ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রমুখ। সাধারণ প্রস্তাবটি উত্থাপন করে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, শুধু শ্রীলঙ্কা নয়, সারাবিশ্ব আজ আক্রান্ত। বিএনপি-জামায়াত আমলে এদেশে জঙ্গীবাদের সৃষ্টি হয়েছিল। হলি আর্টিজানের ঘটনার পরে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। আমরা যারা মুসলিম দেশের নাগরিক, তাদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। কারা এই জঙ্গীগোষ্ঠী আইএস, তালেবান, আল-কায়দা সৃষ্টি করেছে? আন্তর্জাতিক বিশ্ব এখন একটা অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, নুসরাতকে পুড়িয়ে মারতে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নির্দেশ দিয়েছে। নুসরাতের ঘটনার পরও অনেক জায়গায় শিশুরা নির্যাতনের শিকার কীভাবে হয়? তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এত বিশাল উন্নয়নকে আমরা ম্লান করে দিতে পারি না। যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত দ্রুত বিচারের মাধ্যমে এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এমন একটা আইন করতে হবে, যাতে এক বা দেড় মাসের মধ্যে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। বাংলাদেশের ভেতরেও ষড়যন্ত্র চলছে। সরকারের উন্নয়নকে ম্লান করার জন্য দেশে এসব অপকর্ম ঘটানো হচ্ছে। সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে জড়িতদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা গেলে এসব বন্ধ হবে।
×