ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্র চান বলে খালেদাকে জেলে আটক রাখা হয়েছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ১০:০৭, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

 গণতন্ত্র চান বলে  খালেদাকে জেলে আটক রাখা হয়েছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে গণতন্ত্র নেই অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র চান বলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক কারণে অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। আমরা এ নিয়ে কথা বলছি, তাকে মুক্ত করার চেষ্টা করছি, আন্দোলন করছি। কিন্তু সব সময় সব আন্দোলন সফল নাও হতে পারে। কারণ আপনি যখন সংগ্রাম করবেন আপনাকে বুঝতে হবে এটা কোন সাধারণ সংগ্রাম নয়। এর জন্য আমরা কাজ করছি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরে দাঁড়াইনি। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের জনগণের সংগ্রামের যে ইতিহাস, তা কখনও ব্যর্থ হয়নি। এবারও ব্যর্থ হবে না। বিজয় আমাদের হবেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথের আন্দোলনে শরিক হতে হবে। আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র আসবে না। ফখরুল বলেন, দেশ এখন গভীর সঙ্কটে রয়েছে। ১৯৭১ সাল থেকে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বহু আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। তবে আমাদের বুঝতে হবে ১৯৭১, ৫২, ৪৭ আর বর্তমান সময় এক নয়। সবাইকে বুঝতে হবে কোন রাস্তায় গেলে আমরা গণতান্ত্রিকভাবে একটি পরিবর্তন আনতে সক্ষম হব। কারণ, আন্দোলন-সংগ্রামে বহু রাজনীতিবিদ হামলা-মামলা, খুন-গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, এ সরকার সব রাষ্ট্র যন্ত্রগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। আর প্রায় সব গণমাধ্যমের মালিকানা দখল করেছে। সাংবাদিকদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ব্যক্তি হিসেবে বিচার করে কখনও সামগ্রিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বিচার করা যাবে না। সাংবাদিকতা নিঃসন্দেহে একটি মহান পেশা। তাই আপনাদেরও ভাবতে হবে, দেশে কোন ধরনের রাজনীতি চলছে, আর বিশ্বের রাজনীতিতে কী ঘটছে। অন্যান্য জাতি কী অবস্থার মধ্যে আছে, আমরা কোন অবস্থার দিকে যাচ্ছি। তিনি বলেন, স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যম না থাকলে গণতন্ত্রকে সুষ্ঠু বলা যায় না। দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারিনি। তবে আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা, মানুষের স্বাধীনতা ও জাতির স্বাধীনতা পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ববাদী’ রাজনীতির কারণে দেশের অন্যান্য খাতের মতো সংবাদমাধ্যমও সমস্যায় পড়েছে। ফখরুল বলেন, একটু কিছু হলেই রাজনীতিবিদদের দোষারোপ করা হয়। তবে রাজনীতিবিদরা সবসময় খারাপ হয় না। তারা দেশের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন। আমরা যারা রাজনীতি করছি তারা আরাম-আয়েশের রাজনীতি করছি যদি মনে করে থাকেন ভুল করছেন। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আছেন যারা সরকারের হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে রিক্সা চালাচ্ছেন, হকারের কাজ করছেন। এ খবর অবশ্য অনেকেই রাখেন না বা রাখার চেষ্টা করেন না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে দেশের যা অবস্থা, ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল। তখন আওয়ামী লীগ থেকে অনেক নেতাকর্মী বের হয়ে জাসদ সৃষ্টি করেছিল। সেই জাসদের অনেক নেতাকর্মীকে ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে বাকশাল চালু করেছিল আর জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগকে ভালভাবে চিনার আমাদের আর কিছু বাকি নেই। আমরা আওয়ামী লীগকে খুব ভাল করেই চিনি। আমরা আমাদের সব অধিকার দিয়ে চিনেছি, জীবন দিয়ে চিনেছি, তাই আমরা জানি আওয়ামী লীগ কি। বিএফইউজের (একাংশ) সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে কাউন্সিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মজিবুর রহমান, সাংবাদিক নেতা এম এ আজিজ, কামাল উদ্দিন সবুজ, এম আব্দুল্লাহ, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।
×