ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

১৪ দলের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে নাসিম

জামায়াতীদের নতুন রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে সতর্ক থাকুন

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

 জামায়াতীদের নতুন রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে সতর্ক থাকুন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম জামায়াতে ইসলামীর সংস্কারপন্থী নেতাদের নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ১৪ দলের পক্ষ থেকে বলতে চাই, দেশের সব মানুষকে এদের এই মঞ্চ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলব, এদের নজরে রাখুন, সতর্ক থাকুন। এদের থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে মোহাম্মদ নাসিম একথা বলেন। তিনি জানান, আগামীকাল ৩০ এপ্রিল বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দুই তলায় ১৪ দলের উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বব্যাপী জঙ্গী তৎপরতার প্রতিবাদে এই শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যে কোন মূল্যে অব্যাহত রাখা হবে। জামায়াত ভেঙ্গে গঠিত নতুন রাজনৈতিক শক্তিকে ১৪ দল কীভাবে দেখছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তাদের নতুন যে মঞ্চ গঠিত হয়েছে সেটা আমরা দেখেছি। এই নতুন মঞ্চের নেতৃত্বে শিবিরের প্রাক্তন নেতারা। শিবিরের ইতিহাস খারাপ ইতিহাস। এদের ইতিহাস ঘৃণ্য ও জঘন্য ইতিহাস। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দলীয় নির্বাচিত এমপিদের শপথ নেয়ায় বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে কতটা ব্যর্থ হলে নিজেদের দেয়া মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচনের পর দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যান! আসলে বিএনপি যে একটা ব্যর্থ রাজনৈতিক দল সেটা আবারও প্রমাণ হয়েছে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা শান্তির দেশ পেয়েছি। আমরা সারা দুনিয়ায় শান্তি চাই। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ধর্মের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা কোন ধর্মই সমর্থন করে না। তাই আসুন, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। তিনি বলেন, শান্তির বার্তা নিয়ে ১৪ দল রোজার মাসে দেশের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে জঙ্গীবিরোধী সমাবেশ করবে। শুধু ধর্মের কথা বলে নিরীহ মানুষ হত্যা হতে দেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম-বর্ণ ও দেশ নেই। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যেন রক্তের হলিখেলা শুরু হয়েছে। এদেশে হামলার আশঙ্কা এখনও আছে। তাই সবার সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপির নির্বাচিত এমপিদের সংসদে আসা শুরু হয়েছে। বাকিরাও সংসদে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্ব চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে কতটা ব্যর্থ হলে নির্বাচনের পর জয়ী ব্যক্তিরা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যান। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য খন্দকার গোলাম মাওলা নকশেবন্দী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, শান্তির পক্ষে এবং সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় আছি। বাংলাদেশ খ্রিস্টান এ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, ১৪ দল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে কর্মসূচী গ্রহণ করবে আমরা তাদের সঙ্গে আছি। বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে আছি। বৈঠকে শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের বিভিন্নস্থানে সাম্প্রতিক জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রেক্ষাপটে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। নেতারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির ঐক্যে দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এরপরও তারা নতুন করে সংগঠিত হয়ে যে কোন সময় দেশে জঙ্গীবাদী তৎপরতা ও সন্ত্রাসী হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই প্রেক্ষাপটে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি ১৪ দলের ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় ও মজবুত করতে হবে।
×