ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিদায়ের অপেক্ষায় দুই সুপারস্টার

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

  বিদায়ের অপেক্ষায় দুই সুপারস্টার

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং মাশরাফি বিন মর্তুজা ক্রিকেটের দুই চলমান কিংবদন্তি। ২০০৭ টি২০ ও ২০১১ ওয়ানডে ‘অধিনায়ক’ হিসেবে দেশকে দু’দুটি বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছেন ধোনি তথা ভারতীয়দের প্রিয় মাহী (ডাক নাম)। মাঠে পাগলের মতো ছুটে আসা ভক্ত এখনও যার পা ছুঁয়ে সালাম জানায়। সতীর্থরা দাঁড়ায় মাথা নীচু করে। ম্যাশের কোন ট্রফি জেতা হয়নি। একাধিকবার এশিয়া কাপ ফসকে গেছে খুব কাছ থেকে। তবে ব্যক্তিত্ব, দৃঢ়তা আর নেতৃত্বে পঁয়ত্রিশোর্ধ মাশরাফি জায়গা করে নিয়েছেন ভক্তদের মণিকোঠায়। হয়ে উঠেছেন আইকন। বয়স-বাস্তবতা সবমিলিয়ে এশিয়ার দুই সুপারস্টারের এটিই হতে যাচ্ছে শেষ বিশ্বকাপ। ৩০ মে ইংল্যান্ডে শুরু হতে যাওয়া ১২তম ওয়ানডে বিশ্বকাপে লাসিথ মালিঙ্গা, শোয়েব মালিক আর মোহাম্মদ হাফিজেরও হয়তো শেষ। তবে আলোচনায় থাকবেন ম্যাশ ও মাহী। মাশরাফি বিন মুর্তজা ॥ বাংলাদেশ অধিনায়কের রয়েছে দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। বারবার ইনজুরিতে পড়া সত্ত্বেও বোলিংয়ের অনেক অর্জনই নিজের করে নিয়েছেন। ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ দেশের হয়ে খেলেছেন ২০৫ ওয়ানডে। জাতীয় দলের হয়ে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৭০ ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়া ম্যাশ ওয়ানডেতে শিকার করেছেন ২৫৯ উইকেট। পঞ্চাশ ওভার ক্রিকেটে দেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিও তিনি। ৩৬ টেস্টে শিকার করেছেন ৭৮ উইকেট। ৫৪ টি২০তে নামের পাশে ৪২ উইকেট। ব্যাট হাতে লোয়ারঅর্ডারে ঝড় তুলতে সক্ষম মাশরাফি খেলেছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল)। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০তে অধিনায়কত্ব করেছেন ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবং রংপুর রাইডার্সের হয়ে। পেয়েছেন একাধিক শিরোপার স্বাদ। খেলাকালীন সংসদ সদস্য বনে যাওয়া তারকার এটিই হতে যাচ্ছে শেষ বিশ্বকাপ। যে কোনদিন হয়তো ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণাটাও দিয়ে দিতে পারেন টাইগার সুপারস্টার। মহেন্দ্র সিং ধোনি ॥ বিদায় নিলেও ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ধোনির নাম। অনেক বিশেষজ্ঞের মতেই তিনি সর্বকালের সেরা উইকেটরক্ষক। একজন ক্যারিশম্যাটিক ক্যাপ্টেন গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের আত্মা হয়ে আছেন। অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ৩৪১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড তার দখলে। ৩৭ বছর বয়সী ধোনির রয়েছে সমৃদ্ধ একটি ক্যারিয়ার। ৯০ টেস্টে করেছেন ৪৮৭৬ রান। ৩৪১ ওয়ানডেতে ৫০.৭২ গড়ে তার মোট রান ১০,৫০০। এছাড়া ৯৮টি টি২০তে ৩৭.৬০ গড়ে ১৬১৭ রানের মালিক ধোনি। ২০১৪ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মাহী। ২০১৮ সালে ফর্ম নিয়ে ধুঁকছিলেন রাঁচিতে জন্মগ্রহণ করা এ সুপারস্টার। যে কারণে অনেকেই তার সমালোচনায় ছিলেন মুখর। তবে এ বছর অস্ট্রেলিয়া সফরে তিন ওয়ানডের সব ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিশ্বকাপের আগে ফর্মে ফিরেছেন দুর্দান্তভাবে। নির্বাচিত হয়েছিলেন সিরিজসেরা খেলোয়াড়। আইপিএলেও ধরে রেখেছেন সেই ফর্ম। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখনও ফুরিয়ে যাননি- তারই প্রমাণ দিয়েছেন ধোনি। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকে নিজের আত্মবিশ্বাসটা যেন আবারও ফিরে পেয়েছেন নতুন করে। এবার আরও এগিয়ে যাওয়ার পালা। ভারতকে ওয়ানডে ও টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দিয়েছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩১৪ ক্যাচ এবং ১২০ স্টাম্পিং করা ধোনি আসন্ন বিশ্বকাপেও ভারতীয় দলের প্রাণ ভোমরা। খোদ অধিনায়ক বিরাট কোহলিও সেটি স্বীকার করেন। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় আসন্ন বিশ্বকাপ শেষেই ধোনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন বলে ধারণা করছেন অনেকে। টেস্ট খেলুড়ে দশটি দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং স্বাগতিক ইংল্যান্ড লড়বে চির প্রত্যাশিত বিশ্বকাপ শিরোপার জন্য। বশ্বকাপ শিরোপা জয়ে অবদান রাখার কারণে অনেক গ্রেটই স্মরণীয় হয়ে আছেন। আসন্ন বিশ্বকাপও তার ব্যতিক্রম হবে না এবং বেশ কয়েকজন লিজেন্ডকে দেখা যাবে মাঠে। ধোনি-মাশরাফি থাকবেন তাদের অগ্রভাগে।
×