ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জয়টাকেই বড় করে দেখছেন কোচ ছোটন

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

জয়টাকেই বড় করে দেখছেন কোচ ছোটন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সিনিয়র পর্যায়ে এখনও চূড়ান্ত সাফল্য না পেলেও বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলোতে কিন্তু দুর্বার বাংলাদেশের জাতীয় মহিলা ফুটবল দল। তারা পাঁচটি শিরোপা জিতেছে এ পর্যন্ত। এগুলো হলো : এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা চ্যাম্পিয়ন (আঞ্চলিক) আসরে দু’বার (২০১৫ ও ২০১৬), এএফসি অনুর্ধ-১৬ আসরের (২০১৬) আঞ্চলিক বাছাইপর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন একবার, সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে (২০১৭) একবার এবং জকি ক্লাব গার্লস ইন্টা. ইয়ুথ ইনভাইটেশনাল ফুটবল টুর্নামেন্টে (২০১৮) একবার। এছাড়া রানার্সআপ হয়েছে সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে (২০১৮) এবং এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বে (২০১৯)। প্রতিটি আসরেই দলের কোচ ছিলেন গোলাম রব্বানী ছোটন। সেই ছোটনের ওপর ভরসা করেই এবার বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ জাতীয় নারী ফুটবল দল স্বপ্ন দেখছে নিজেদের দেশে অনুষ্ঠিত বঙ্গমাতা অনুর্ধ-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হবার। ইতোমধ্যেই ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হবার পাশাপাশি সেমিতেও নাম লিখিয়েছে তারা। তবে গ্রুপ ম্যাচের দুটিতে জিতলেও বাংলাদেশের খেলা মন ভরাতে পারেনি ফুটবলপ্রেমীদের। এ প্রসঙ্গে শনিবার বাফুফে টার্ফে দাঁড়িয়ে ছোটন জনকণ্ঠকে বলেন, প্রথম ম্যাচে আমরা গোল করার অনেক সুযোগ নষ্ট করেছি এটা ঠিক। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেও একই রকম সুযোগ নষ্ট করেছি এটা মানতে রাজি নই। দ্বিতীয় ম্যাচেও সুযোগ নষ্ট করেছি এটা ঠিক কিন্তু সেটা প্রথম ম্যাচের চেয়ে অনেক কম। ফিনিশিংও অনেক ভাল ছিল আগের ম্যাচের চেয়ে। মেয়েরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। তাছাড়া ওদের (কিরগিজস্তান) গোলরক্ষকও অনেকগুলো আক্রমণ ভালভাবে রক্ষা করেছে, আমাদের গোল কম হওয়ার জন্য এটাও একটা কারণ। দলের খেলোয়াড়দের ভুলত্রুটিগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রতিনিয়তই চেষ্টা ও কাজ করছেন ছোটন। খেলোয়াড়দের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এবং দলীয়ভাবে কাউন্সিলিং করছেন। রবিবার এ নিয়ে আলাদা প্র্যাকটিস সেশন আছে। এই সেশনে মূলত ফিনিশিংয়ের ওপরই জোর দেয়া হবে বলে জানান তিনি। ছোটন আরও যোগ করেন, দল যতই জিতুক বা ভাল ফল করুক, এ নিয়ে আত্মতৃপ্তির কখনই কোন অবকাশ নেই। সবসময়ই আরও বেশি উন্নতির চেষ্টা করতে হবে। দ্বিতীয় ম্যাচে লাল-সবুজের মেয়েরা এ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে বারবার গোলের সুযোগ তৈরি করেছে। ফিনিশিং যদি আরও ভাল হতো তাহলে নিশ্চয়ই গোলের সংখ্যা আরও বাড়তো, আরও স্বাচ্ছন্দে জেতা যেত বলে মনে করেন ছোটন। বলেন, মোট কথা, এখানে কাজ করার আরও অনেককিছু আছে। অনুর্ধ-১৬ লেভেলে যেখানে বাংলাদেশ কিরগিজস্তানকে দশ গোলে হারিয়েছিল তিন বছর আগে, সেখানে অনুর্ধ-১৯ লেভেলে একই দেশকে মাত্র ২-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ, এটার কারণ কী? এই প্রশ্নের জবাবে ছোটন বলেন, অনুর্ধ-১৬ লেভেল আর অনুর্ধ-১৯ লেভেল কিন্তু এক ব্যাপার নয়। অনুর্ধ-১৯ লেভেলে কিরগিজস্তান দলের খেলোয়াড়রা বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের চেয়ে শারীরিক সক্ষমতায় অনেক এগিয়ে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের পরিকল্পনা ছিল, তারা যেহেতু নিজেদের প্রথম ম্যাচে আমিরাতের বিপক্ষে অনেক ওপরে ওঠে খেলেছিল, সেক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গেও একই স্টাইলে খেললে আমাদের জন্য আক্রমণ করা ও গোল করাটা সহজ হবে। কিন্তু শুক্রবারের খেলায় তারা আমাদের সঙ্গে এভাবে খেলেইনি। পুরো দল খেলেছে নিচে নেমে। ওদের মাত্র একজন স্ট্রাইকার খেলেছে হাফ লাইনেরও অনেক নিচে। এভাবে খেলে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স লাইন ভেঙ্গে গোল করাটা অনেক কঠিন। তারপরও মেয়েদের ধন্যবাদ যে তারা চেষ্টা করেছে। তারা অনেক গতিময় ফুটবল খেলেছে। লাওসের আট নম্বর জার্সিধারী (পিই) খেলোয়াড়টি ছোটনের নজর কেড়েছে, সে খুব কুইক ফিনিশ করতে পারে। বেশ ভাল স্কোরিং এ্যাবিলিটি আছে। মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে চমৎকার দুটি গোল করেছে। যদিও একটি গোলের সময় মঙ্গোলিয়ার গোলরক্ষকের পজিশনগত ভুল ছিল। আমাদের কৃষ্ণাও ভাল ছিল। সানজিদার ক্রস থেকে তার ফিনিশং ছিল প্রশংসনীয়। ছোটন আরও বলেন, যতই আমাদের ফিনিশিংয়ের দুর্বলতা থাকুক বা কম গোল করি না কেন একটা দিক কিন্তু আমাদের ঠিকমতোই হচ্ছে। সেটা হচ্ছে দলীয় জয়। এটাই তো আসল ব্যাপার। সামনের সেমির ম্যাচেও আশাকরি মেয়েরা আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামবে এবং জিতবে। কিরগিজস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের দুই ফরোয়ার্ড। এ প্রসঙ্গে ছোটন বলেন, কৃষ্ণার ইনজুরি তেমন মারাত্মক নয়। আশাকরি দ্রুত রিকভারি করে সেমির ম্যাচের আগেই সে খেলার মতো ফিট হয়ে উঠবে। তবে স্বপ্নার ইনজুরির অবস্থা ভাল নয়। তবে ওর চিকিৎসা (র‌্যান্ডম আইসিং, রিহাব, রেস্ট) চলছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কি হয়।
×