ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জায়ানের কুলখানিতে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণ

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

জায়ানের কুলখানিতে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ শ্রীলঙ্কায় সংঘটিত ভয়াবহ বোমা হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির নাতি জায়ান চৌধুরীর কুলখানি শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বাদ আছর রাজধানীর বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের শোকাহত হাজার হাজার বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশ নেন। এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার নাতি জায়ানের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শ্রীলঙ্কার বোমা হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত চিকিৎসাধীন জামাতা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্সের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে সবার দোয়া চান। নাতির মৃত্যুর পর সান্ত¡না ও সহানুভূতি জানাতে আসা সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রিন্সকে উন্নত চিকিৎসায় সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়েছে। আর ছেলে জায়ানের দাফনের দিনটিতেও তার পাশে থাকতে না পারা তার (শেখ সেলিম) মেয়ে শেখ আমেনা সুলতানা সোনিয়া অনেক কষ্ট বুকে চেপে স্বামীর শয্যাপাশে অবস্থান করছেন। এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে শেখ সেলিম বলেন, এমন মর্মান্তিক নিষ্ঠুর হত্যাকা-ের নিন্দা জানানোর ভাষা কারও নেই। কোন ধর্মে বলা হয়নি যে, হত্যা করে ধর্মমত প্রতিষ্ঠা করা যায়। ইসলাম ধর্মেও বলা হয়েছে, হত্যা করা মহাপাপ। যারা এভাবে নারী ও শিশুকে হত্যা করে ইসলামকে কলঙ্কিত করেছে- তারা মানুষ নয়। কোন পশুও এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ করে না। প্রিয় নাতির স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, জায়ান অত্যন্ত মেধাবী ও ধর্মপরায়ণ ছিল। বেঁচে থাকলে হয়ত সে দেশের নেতৃত্ব দিতে পারত, মানুষের কল্যাণ করতে পারত। আর যেন কোন পরিবারকে যেন এমন নিষ্ঠুর হত্যাকা-ের শিকার হতে না হয়, আর যেন কোন বাবা-মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়, ধর্মের নামে কোন হানাহানি-সংঘাত না হয় এবং বাংলাদেশসহ সারাবিশ^ থেকে জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ চিরতরে নির্মূল হয়- সেটাই সবার কাম্য। কুলখানিতে জায়ান চৌধুরীসহ শ্রীলঙ্কার কাপুরুষোচিত বোমা হামলায় নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। একই সঙ্গে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত সব শহীদের রুহের মাগফিরাত এবং জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা মহিউদ্দিন কাশেমী। এ সময় জায়ানের দাদা এম এইচ চৌধুরী পারুল, মামা শেখ ফজলে শামস পরশ, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, এফবিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ ফজলে নাঈম এবং ছোট চাচা ডিউক চৌধুরীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। কুলখানিতে অন্যদের মধ্যে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ডাঃ এস এ মালেক, কাজী আকরাম উদ্দিন, এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মুকুল বোস, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান সিরাজ, আখতারুজ্জামান, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, ঢাকা মহানগর উত্তরের আওয়ামী লীগের সাদেক খান, এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি, আসলামুল হক আসলাম এমপি, প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আমীর উল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, কেন্দ্রীয় নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ মহি প্রমুখ। উল্লেখ্য, সপরিবারে শ্রীলঙ্কা বেড়াতে গিয়ে রবিবার ভয়াবহ বোমা হামলায় অন্য অনেকের সঙ্গে নিহত হয় সাড়ে আট বছর বয়সী শিশু জায়ান চৌধুরী। এই ঘটনায় তার বাবা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স আহত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সে সময় হোটেল কক্ষে থাকায় বেঁচে গেছেন জায়ানের মা শেখ আমেনা সুলতানা সোনিয়া ও ছোট ভাই দেড় বছর বয়সী জোহান চৌধুরী। জায়ান রাজধানীর উত্তরার সানবীম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কেজি-টু শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।
×