ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বগুড়ায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে। টাঙ্গাইলে তিন লাশ, নোয়াখালীতে দুই লাশ, সান্তাহারে ব্যবসায়ীর লাশ ও ভৈরবে কলেজ ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। বগুড়া শনিবার দুপুরে শাজাহানপুর উপজেলায় ছুরিকাঘাতে নাজিউর রহমান নাহিদ (১৮) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন হয়েছে। পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে তার ওপর হামলা হয়। সে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। পুলিশ এ ঘটানায় জড়িত সন্দেহে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পুলিশ জানায়, নাহিদ শাজাহানপুরের নারিল্লা এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে। শনিবার রসায়ন পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা দিয়ে কেন্দ্র থেকে সে তার এক বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে ফিরছিল। পথে ঘাসিরা মাদ্রাসার সামনে রাস্তার ওপর পরিচিত দুই যুবক তাদের থামায়। সেখানে কথা বলার এক পর্যায়ে হঠাৎ করে নাহিদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এর পরপরেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বগুড়া মেডিক্যাল (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। টাঙ্গাইল ৩টি স্থান থেকে এক কলেজ ছাত্রসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সকালে এবং দুপুরে সদর উপজেলার থানাপাড়া শান্তিকুঞ্জ মোড়, আদালতপাড়া এবং নামদার কুমুল্লী এলাকা থেকে এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, টাঙ্গাইলে মাজহারুল ইসলাম মাসুদ (২৪) নামে এক কলেজ ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের থানাপাড়া শান্তিকুঞ্জ মোড় এলাকায় একটি ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত মাসুদ ময়মনসিংহের ত্রিশাল মধ্যপাড়া এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে এবং সে টাঙ্গাইল শহরের সরকারী মওলানা মোহাম্মদ আলী (এমএম আলী) কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। মাসুদের মামা রাইসুল হাসান জানান, আমি টাঙ্গাইলে চাকরি করি। এদিকে টাঙ্গাইল পৌর শহরের আদালতপাড়া পুকুরে গোসল করতে নেমে দীপক কুমার সরকার (৪৬) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে শহরের আদালতপাড়া পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সে বাসাইল পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত মুধসুধন সরকারের ছেলে। অপরদিকে সাব্বির (২৬) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় শনিবার দুপুরে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলা করটিয়া ইউনিয়নের নামদার কুমুল্লী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাব্বির একই এলাকার মিন্টু মিয়ার ছেলে। নোয়াখালী নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়ন থেকে পৃথক ঘটনায় দুই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে পপি আক্তার নামের একজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনায় নিহতের স্বামী আবু তাহের (২৬)কে আটক করেছে পুলিশ। নিহতরা হচ্ছেনÑ চরজুবলী ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের আবু তাহেরের স্ত্রী পপি আক্তার (২৪) ও উত্তর কচ্ছপিয়া গ্রামের নাছির উদ্দিনের মেয়ে লুবনা আক্তার (১৯)। জানা গেছে, প্রায় গত চার বছর আগে আবু তাহেরের সঙ্গে পশ্চিম চরজুবলী গ্রামের হাজী আব্দুস সোবহানের মেয়ে পপি আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শুক্রবার রাত ৩টার দিকে পপি আক্তারের কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার ও নিহতের স্বামীকে আটক করে পুলিশ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ পপির স্বামী আবু তাহের, শাশুড়ী ও ননদ মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। এদিকে গত এক বছর আগে এক প্রবাসীর সঙ্গে মোবাইলে বিয়ে হয় লুবনার। বিয়ের পর থেকে সে বাবার বাড়িতে থাকত। এই রমজানের ঈদে দেশে এসে তাকে বিয়ের কাজ শেষ করার কথা ছিল। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে উত্তর কচ্ছপিয়া গ্রামে অলঙ্কার হারানোকে কেন্দ্র করে ছোট বোন লাভলি আক্তারের সঙ্গে বিতর্কের জেরে বিষপান করে লুবনা আক্তার। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সান্তাহার শনিবার সকালে আদমদীঘি থানা পুলিশ বগুড়ার সান্তাহার পৌর এলাকার কোমল দোগাছি এলাকার একটি ডোবা থেকে আমরান হোসেন (২৮) নামের এক পোল্টি ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে। সে সান্তাহার পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের কোমল দোগাছি মহল্লার সিদ্দিক হোসেনের ছেলে। সে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল। জানা গেছে, আরমান হোসেন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খামারের মুরগির খাদ্য ও ওষুধ কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়। এরপর সে আর বাড়িতে ফেরেনি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পায় পরিবারের স্বজনরা। খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে শুক্রবার আদমদীঘি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। স্বজনরা সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার দুপুরে নিহত আরমানের শ্বশুরবাড়ির পক্ষের এক আত্মীয় আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের করজবাড়ি গ্রামের হাজী ফুরুজের ছেলে রেজাউল সরদার বাবু মেম্বার আরমানের স্বজনদের বলেন যে, আরমানের সন্ধান পাওয়া গেছে সে নওগাঁয় আছে। এজন্য ২০ হাজার টাকা লাগবে। এ কথা শুনে স্বজনরা প্রথমে তার হাতে ২ হাজার টাকা দিয়ে তার সঙ্গে নওগাঁয় যান। যাওয়ার পথে নওগাঁ সদরের তুলসিগঙ্গা ব্রিজ স্থানে বাবু মেম্বারের আরও ৩ সঙ্গী মিলিত হয়ে নওগাঁর বউবাজারসহ একাধিক এলাকার একাধিক বাড়িতে নিয়ে যায়। এভাবে শনিবার ভোর পর্যন্ত তার সন্ধান করতে থাকে। কিন্তু সন্ধান মেলেনি। এর এক পর্যায়ে নিহত আরমানের মহল্লার লোকজন শনিবার সকাল ৭টার দিকে তার বাড়ি থেকে অর্ধ কিলোমিটার দূরে থাকা ছোট ডোবায় তার লাশ ভাসতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। ভৈরব শনিবার দুপুরে ভৈরব উপজেলার মধ্যেরচর গ্রামে নিজ বসতঘর থেকে এক কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কলেজ ছাত্রী তানিয়া বেগম (২২) মধ্যেরচর গ্রামের মীর বাড়ির মিলন মিয়ার কন্যা। স্বাজনরা পুলিশকে খবর দিলে বেলা পৌনে ২টার দিকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। সে স্থানীয় জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী ।
×